আফগানিস্তানের মাটিতে তাদের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ বাতিল ইস্যুতে আলোচনা যেন থামছেই না। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার(সিএ) পর এবার আইসিসি থেকে বাঁধার মুখে পড়তে পারে আফগানিস্তান।
মূলত গত বছরে আফগানিস্তানে তালেবান শাসন আবারো প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পর সে দেশে ক্রিকেট অবকাঠামোরও একটা পালাবদল ঘটে। সেখানে পুরুষদের ক্রিকেট নিয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকলেও নারীদের ক্রিকেটে নিষেধাজ্ঞা জারি করে এ সরকার। আর এই অসমতার কারণ দেখিয়েই অস্ট্রেলিয়া আফগানিস্তান সফর বাতিল করে। এ বছরের মার্চে তাদের মধ্যকার একটি তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ হওয়ার কথা ছিল।
অস্ট্রেলিয়ার এমন সিদ্ধান্তের পর অবশ্য অনেক আফগান ক্রিকেটারই প্রতিবাদ করেছেন। রশিদ খান, নাভিন উল হক তো প্রতিবাদ স্বরূপ অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগ বিগব্যাশ থেকেই নিজেদের নাম তুলে নিয়েছেন। এ ছাড়া মোহাম্মদ নবী, ফজল হক ফারুকিসহ আরো ৭ আফগান ক্রিকেটার আগামী ২০২৩ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে না খেলার ঘোষণা দিয়েছেন।
এ নিয়ে মোহাম্মদ নবী বলেন, ‘খেলার মধ্যে রাজনীতি ঢুকানো কখনোই ঠিক নয়। একই ব্যাপার তো বিশ্বকাপেও হবে। তাহলে তখন তারা কেন আমাদের সাথে খেলবে? কারণ তারা সহজে দুই পয়েন্ট চায়। তারা যে কারণ দেখিয়েছে সেই কারণে সিরিজ বাতিল অন্তত ঠিক নয়। তাই এ সিরিজ যদি তারা বাতিল করে, আমরা বিশ্বকাপে তাদের বয়কট করব।’
তবে আফগানিস্তান অস্ট্রেলিয়াকে পাল্টা হুমকি দিলেও এই ইস্যুতে আইসিসিও বেশ নড়েচড়ে বসেছে। আফগানিস্তানের ক্রিকেট অবকাঠামো তারা পর্যবেক্ষণ করছে। এর আগে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) আফগানিস্তানে মেয়েদের ক্রিকেট ফেরানোর চেষ্টা করলেও তারা ব্যর্থ হয়। তবে আইসিসি এ ব্যাপারে এবার বেশ কঠোর অবস্থানেই যাচ্ছে।
এ নিয়ে আইসিসি এক মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা চাই আফগানিস্তানে ছেলে এবং মেয়ে- উভয়ের ক্রিকেটই ঠিকঠাকভাবে চলুক। কিন্তু তারা ছেলেদের ক্রিকেট চালালেও মেয়েদের ক্রিকেটের পথটা বন্ধ করে রেখেছে। এটা মানবাধিকারের একটা লঙ্ঘন। আমরা বিষয়টি নিয়ে সিরিয়াস। আইসিসি’র আগামী সম্মেলনেই এ বিষয়টা তোলা হবে।’
প্রথমবারের মত মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের টুর্নামেন্ট এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। এ ছাড়া আগামী ফেব্রুয়ারিতে মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও শুরু হবে। কিন্তু আইসিসি’র এই দুই ইভেন্টের একটিতেও অংশ নিচ্ছে না আফগানিস্তান নারী দল। আর এতেই বেঁকে বসে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
তারা মনে করে, এতে করে এই সরকার আফগানিস্তানের মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। এ কারণে তারা এক বিবৃতিতে আফগানিস্তান সফর বাতিলের ঘোষণা দেয়। অস্ট্রেলিয়ার এমন সিদ্ধান্তে চটে যায় আফগান ক্রিকেটাররাও। তারাও এক প্রকার হুমকি দিয়েই বসে। সব মিলিয়ে এই ইস্যুতে আলোচনা সহসায় থামছে না। আপাতত দুই দেশের এই বিপরীতমুখীতা কোন দিকে মোড় নেয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।