দীর্ঘ নয় মাসের অপেক্ষা শেষ হচ্ছে। আগামী মাসের ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে আবার আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে ফিরছে বাংলাদেশ। জানুয়ারির শুরুর দিকেই বাংলাদেশ সফরে আসছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গত মার্চে জিম্বাবুয়ে সিরিজের পর করোনা বিপর্যয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের স্বাদ নেওয়া হয়নি বাংলাদেশের। এই সিরিজ দিয়েই দীর্ঘ দিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবে বাংলাদেশ।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে টেস্টের অপেক্ষা আরো দীর্ঘ দিনের। বাংলাদেশ সর্বশেষ টেস্ট খেলেছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে। দীর্ঘ এক বছর পর আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে আবারো টেস্ট খেলতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
লম্বা বিরতির পর টেস্ট খেলতে নামলেও সমস্য হবে না বলে মনে করেন মুমিনুল হক। বরং শুরু করতে চান আগের জায়গা থেকেই। আজ মিরপুরে গনমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মমিুনুল হক বলেন, ‘করোনার কারণে এমন নয় যে আমরা আমাদের প্রক্রিয়া থেকে সরে এসেছি। আমরা মাঝে যে অনুশীলন করেছিলাম শ্রীলঙ্কা সিরিজ হবে ধরে। তখনও আমরা সেভাবেই প্রস্তুত হচ্ছিলাম। প্রক্রিয়া কখনো বদলাবে না। আমরা আবার আগের জায়গা থেকেই শুরু করব।’
বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ফিল্ডিং করতে গিয়ে চোট পান মুমিনুল হক। দেশের বাইরে গিয়ে অস্ত্রপচার করে এসেছেন তিনি। পুনর্বাসন পক্রিয়া শেষে টেস্ট সিরিজের আগেই ফিট হতে আশাবাদী মুমিনুল হক। তিনি বলেন, ‘পুনর্বাসন চলছে। প্রস্তুতি ম্যাচ আছে টেস্ট সিরিজের আগে। আশা করছি টেস্ট সিরিজের প্রস্তুতি ম্যাচে খেলতে পারব।’
এক বছর পর টেস্ট, এরপর থাকতে হবে জৈব সুরক্ষা বলয়ের ভিতর। চাঁপের সাথে চ্যালেঞ্জও রয়েছে প্রচুর। তবে এটা নিয়ে বেশী চিন্তা না করে ইতিবাচকই থাকছেন মমিনুল হক।
টেস্ট অধিনায়ক বলেন, ‘শুধু আমরা না। বর্তমান যেই অবস্থা, এই অবস্থায় সবারই একটু চ্যালেঞ্জ হয়ে যাবে। এটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা না করে ইতিবাচকভাবে চিন্তা করা ভালো। করোনার পর শুধু আমরা না, বিশ্বের অনেক দলই এই সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে। যারা অনেক বেশি খেলছে, তাঁরা আবার জৈব সুরক্ষা বলয়ের ভেতরে থাকবে। এটাও একটা চ্যালেঞ্জের বিষয়। জিনিসটা আপনি কিভাবে নেবেন সেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
নিউজিল্যান্ডে গিয়ে বাজে ভাবে হেরে এসেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এর আগেও তিনটা সিরিজ খেলেছে তারা। দীর্ঘ দিন জৈব সুরক্ষা বলয়ে থেকে মানসিক ভাবে পিছিয়ে থাকতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এমনটাই মনে করেন মমিনুল হক। তবে তাদের হারাটা ইতিবাচক ভাবেই দেখছেন তিনি।
জৈব সুরক্ষায় থেকে আন্তর্জাতিক সিরিজে পুরোপুরি সেরাটা দেওয়া সম্ভব কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক বলেন, ‘এটা পুরোটাই মানসিক ব্যাপার। আন্তর্জাতিক ম্যাচ তো এখনো খেলিনি জৈব সুরক্ষায় থেকে। খেলার পর অভিজ্ঞতা বলতে পারব। এখন যতদিন ভ্যাকসিন না আসছে এভাবেই খেলতে হবে। এটাকে মাথায় না নিয়ে ইতিবাচকভাবে চিন্তা করতে হবে।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাম্প্রতিক ফর্ম ভালো না হলেও তাদের হারাতে হলে নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টাই করতে হবে বলে মনে করেন মুমিনুল হক। তিনি বলেন, ‘ওরা টানা সিরিজ হেরে আসছে এর মানে এই না যে ওদের আপনি এখানে হারিয়ে দেবেন। ওদের সঙ্গে খেলতে হলে আপনার পুরো চেষ্টা দিয়েই খেলতে হবে। ইতিবাচক দিক একটাই, ওরা একটু হতাশ থাকবে। তবে এর মানে এই না যে ওদের আপনি ছেড়ে দেবেন।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ দীর্ঘ দিন হলোই জৈব সুরক্ষা বলয়ের ভিতরে রয়েছে। গত তিনটা সিরিজই তারা হেরেছে। এই সিরিজে মুখিয়ে থাকবে জয়ের জন্য। দীর্ঘ দিন জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকার অভিজ্ঞতার কারণে এখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এগিয়ে থাকবে বলে মনে করেন মমিনুল।
সাকিবের ফিরে আসাতে স্বস্তিতে আছেন টাইগারদের টেস্ট অধিনায়ক। সাকিবের ফিরে আসাতে দল ভারসাম্যও হবে বলে মনে করেন মমিনুল। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই তরুণ অধিনায়ক হিসেবে এটা আমার জন্য স্বস্তির বিষয়। সাকিব থাকবে দলে ভালো ভারসাম্য তৈরি হয়। ভালো দিক আমাদের জন্য। অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার।’
এই সিরিজ দিয়েই টেস্ট চ্যাম্পিনশীপের প্রথম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। তবে টেস্ট চ্যাম্পিনশিপ চিন্তা করে চাপ নিতে চান না মমিনুল হক। বরং সাধারণ টেস্ট মনে করে উজার করে দিতে শতভাগ। মুমিনুল বলেন, ‘টেস্ট খেলতে গেলে আপনি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চিন্তা করে খেলতে পারবেন না। করোনার পর বাংলাদেশে এই প্রথম খেলা শুরু হচ্ছে। আমরা যারা সুযোগ পাব তাদের সবাই দেখবেন ১০০ ভাগ দিয়ে ভালো করার চেষ্টা করবে। ওইভাবে চিন্তা করলে আমরা টেস্ট সিরিজটা ভালোভাবে শেষ করতে পারব। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চিন্তা করলে চাপ আসবে, আপনাদের প্রত্যাশা আসবে। অনেক নেতিবাচক বিষয় চলে আসবে। এসব চিন্তা না করে শুধু ভালো খেলার সুযোগটা কাজে লাগানোর চিন্তা করতে হবে।’