ইফতেখার-সাকিবের রেকর্ড জুটিতে উড়ে গেল রংপুর

ইফতেখার আর সাকিবের ব্যাটিং প্রদর্শনীর দিনে নিরব দর্শক যেন রংপুর রাইডার্সের খেলোয়াড়রা। রেকর্ড গড়া পার্টনারশীপের বদৌলতে রংপুরকে হারিয়ে নিজেদের চতুর্থ জয়ের দেখা পেয়ে গেছে সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশাল। রংপুরকে ৬৭ রানে হারিয়েছে বরিশাল। এই জয়ে টেবিলের দ্বিতীয় অবস্থান পোক্ত করল গেলবারের রানার্সআপরা।

দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের প্রতিপক্ষ ফরচুন বরিশাল। পয়েন্ট টেবিলে কাছাকাছি অবস্থান দুই দলের। সমান হওয়ার সুযোগে টস ভাগ্য রংপুর অধিনায়ক শোয়েব মালিকের পক্ষে। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন বল করবার। বোলিং আক্রমণটা তাঁর দুর্দান্ত। সেটার প্রমাণও দিয়ে দিলেন হারিস রউফ ও হাসান মাহমুদ।

এই দুই পেসারের দুই ওভারে প্যাভিলনে বরিশালের টপ অর্ডার। ছয় ওভারের মাঝে চার উইকেট হারিয়ে দিশেহারা তখন ফরচুন বরিশাল। দলের হাল ধরা চাই। সাকিব আল হাসানের চাইতে যোগ্য পথ প্রদর্শক আর কেউ হতে পারে না। সাকিব হাল ধরলেন। তাঁকে সঙ্গ দিলেন পাকিস্তানের ইফতেখার আহমেদ। গুটিগুটি পায়ে শুরু হলো দুই ব্যাটারের ইনিংস মেরামতের কাজ।

আর ঠিক এরপরের গল্পে আর কোথাও নেই রংপুরের নাম। বাইশ গজে খানিকটা ধীরস্থির শুরু করেন সাকিব ও ইফতেখার। পরিস্থিতি বিবেচনায় সেটা স্বাভাবিকও ছিল। কিন্তু এরপরই ক্রমশ দৃশ্যপট বদলাতে থাকে। রান তোলার নেশায় মত্ত্ব হয়ে পড়েন বরিশালের দুই কাণ্ডারি। দারুণ একটা প্রতিযোগিতায় শেষ অবধি জিতেছেন ইফতেখার আহমেদ।

এবারের টুর্নামেন্টের পঞ্চম দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পাশাপাশি বিপিএলের ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক বনে যান ইফতেখার। একের পর এক ছক্কা আছড়ে পড়তে শুরু করে বাউন্ডারির বাইরে। সাকিবও কম যান না। দুই জনের ব্যাটিং রসায়নটা জমে ওঠে বেশ। দুই ব্যাটার দুর্বার গতিতে রান তুলতে শুরু করেন। মোট ১৯টি ছক্কা আসে বরিশালের ইনিংস থেকে।

ইফতেখারের দৃষ্টিনন্দন শতকের দিনে অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন সাকিব আল হাসান। তিনি নিজের ক্যারিয়ার সেরা ৮৯ রানে অপরাজিত থেকে ইনিংস শেষ করেন। অপরপ্রান্তে ইফতেখারও ছিলেন শতরানে অপরাজিত। এই দুই জনে মিলে পঞ্চম উইকেটে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন। ১৯২ রানের সেই জুটির কল্যাণেই ২৩৮ রানের সুবিশাল এক পাহাড় গড়ে ফরচুন বরিশাল। যা বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

ঠিক সেখানটায় ম্যাচ হেরে যায় রংপুর রাইডার্স। সুবিশাল পাহাড় উৎরে যাওয়ার একটা মানসিক চাপ রাইডার্সদের ছিটকে দেয় ম্যাচ থেকে। শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করবার প্রবণতা দারুণ ভোগায় শোয়েব মালিকের দলকে। অন্যদিকে বরিশালের বোলারর নির্ভার হয়ে নিজেদের কাজটুকু সেরে নিতে থাকেন। তপ্রতিপক্ষের মানসিক চাপই তাদের পক্ষে কাজ করতে শুরু করে। আর একের পর এক উইকেট গিয়ে জমা পড়ে ফরচুন বরিশালের বোলারদের পকেটে।

ইনিংসের মধ্যভাগেই ৭৮ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে জয়ের কক্ষচ্যুত হয় রংপুর। মাঝে অবশ্য খানিকটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে রংপুর মোহাম্মদ নওয়াজ ও শামীম পাটোয়ারীর ব্যাটে। তবে তাতে পরাজয়ের ব্যবধান কমেছে স্রেফ। কাজের কাজ কিছু হয়নি। শেষ অবধি নয় উইকেট হারিয়ে ১৭০ রানে থামে রংপুরের ইনিংস। বিশাল পরাজয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে শোয়েব মালিকের দল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link