চমকে বাজিমাত চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে ঘুরে দাঁড়ানোর একটা রাস্তা খুঁজে বের করতেই হয়। চট্টগ্রামের সেই পথটা হয়ে হাজির হলেন আইরিশ ক্রিকেটার কার্টিস ক্যাম্ফার। সুদূর জিম্বাবুয়ে থেকে উড়ে এসেই তিনি ধরে ফেললেন দলের হাল। ভাল মানের বিদেশি খেলোয়াড়দের একটা অভাব অনেক আগে থেকেই বোধ করছিল চট্টগ্রাম। সে অভাবটা খানিকটা হলেও পূরণ করবার প্রয়াশের দেখা মিলেছে ক্যাম্ফারের কাছ থেকে।
তিন চারেক আগেও ক্যাম্ফার ব্যস্ত ছিলেন জাতীয় দলের সাথে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে দেশটিতে ছিল আয়ারল্যান্ড দল। সেই দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য কার্টিস ক্যাম্ফার। ফ্রাঞ্চাইজির আগে তাই জাতীয় দলের দায়িত্ব। ঠিক সে কারণেই হয়ত দীর্ঘ একটা সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে। অবশেষে ক্যাম্ফার এলেন চট্টগ্রাম শিবিরে। তবে ততক্ষণে বড্ড দেরি হয়ে গেছে। পথটা হয়ে গেছে ভীষণ কঠিন।
বাকি থাকা সবগুলো ম্যাচ জয়ের বিকল্প নেই চট্টগ্রামের সামনে। শুধু সেটুকু নয়। পরবর্তী রাউন্ডে যেতে হলে বাকি দলগুলোকেও হারতে হবে। সেটা অবশ্য কঠিনতম কাজ। তবে অসম্ভব কিছু নয়। কিন্তু তেমন একটা সমীকরণের সামনে যেতে হলেও চট্টগ্রামের দূর্বল ব্যাটিং লাইনআপের খানিকটা পরিবর্তন প্রয়োজন ছিল। দলের মিডল অর্ডার যেন ছিল একেবারেই নির্জীব। সেই দশার উন্নতি করতেই ক্যাম্ফারের সংযোজন।
আর অভিষেক ম্যাচটাতেই নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখলেন ক্যাম্ফার। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে খেলতে নেমে শুরু থেকেই চাপের মুখে ছিল চ্যালেঞ্জার্সরা। মন্থর গতিতে রান তুলতে পেরেই যেন সন্তুষ্ট ছিল গোটা দল। ইনিংসের ১২ তম ওভারে ৮৫ রানের মাথায় চার উইকেট হারিয়ে স্বল্প রানে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা জাগে চট্টগ্রামের শিবিরে। তবে সেই শঙ্কা হাওয়ায় ভাসিয়ে দেন ক্যাম্ফার। ২৫ বলের ঝড়ো এক ইনিংস উপহার দেন তিনি চট্টগ্রামের পক্ষে।
অর্ধশতকের দেখা তিনি পাননি। ৪৫ রানে থামে তাঁর ইনিংস। যদিও শেষ অবধি তিনি ছিলেন অপরাজিত। প্রায় ১৮০ স্ট্রাইকরেটের এই ইনিংসটি চট্টগ্রামকে স্বস্তি জুগিয়েছে। দারুণ ছন্দে থাকা বরিশালের বিপক্ষে স্বল্প পুঁজিতে লড়াই করাটা দারুণ মানসিক পীড়াদায়ক। সেই পীড়া থেকে যেন চট্টগ্রামকে মুক্তি দিলেন ক্যাম্ফার। দলের ইনিংস টেনে নিয়ে গেলেন ১৬৮ অবধি। লড়াই করবার মত যথেষ্ট পুঁজি সেটি।
চারটি চার ও দুইটি ছক্কা হাকিয়েছেন তিনি। শেষ দিকে দ্রুত রান বাগিয়েছেন ক্যাম্ফার। তাঁর সাথে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে গেছেন ইরফান শুক্কুর। এই ব্যাটার ক্যাম্ফারকে বাইশ গজে আস্থা জুগিয়ে গেছেন। দলের পক্ষে বাকি কাজটা করেছেন আইরিশ অলরাউন্ডার। এখন দেখবার পালা। দলগতভাবে এখান থেকেই চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ঘুরে দাড়াতে পারে কি না।