সুরিয়াকুমার যাদব, টেস্টেও মুশকিল-আসান

ক্ষণ গণনা শুরু হয়ে গিয়েছে। আর এক দিন বাদেই মাঠে গড়াচ্ছে ভারত-অস্ট্রেলিয়া মধ্যকার ঐতিহাসিক বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির খেলা। ৪ ম্যাচের এ টেস্ট সিরিজ দুই দলের জন্যই বিশেষ একটা সিরিজ। তবে এবারের সিরিজটা বিশেষ করে ভারতের জন্য একটু বেশিই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই সিরিজের উপরেই ঝুলে আছে তাদের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনাল ভাগ্য।

অবশ্য অতীত ইতিহাস ভারতকেই শুভ বার্তা দিচ্ছে। শেষ ১৮ বছর নিজেদের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কখনোই সিরিজ হারেনি ভারত। তবে এবারের পরিস্থিতিটা ভিন্ন অন্য কারণে। এক প্রকার নতুন এক টিম কম্বিনেশন নিয়ে খেলতে হতে পারে রোহিতদের। কারণ পেস ডিপার্টমেন্টে ইনজুরির কারণে দলে নেই জাসপ্রিত বুমরাহ।

এর সাথে নতুন করে যুক্ত হয়েছে মিডল অর্ডার ব্যাটার নিয়ে দুশ্চিন্তা। কারণ টেস্ট ক্রিকেটের ধারাবাহিক পারফর্মার ঋষাভ পান্ত গাড়ি দুর্ঘটনায় অনেক আগেই এ সিরিজ থেকে ছিটকে গিয়েছেন। পিঠের ইনজুরির কারণে দলে নেই আরেক নির্ভরযোগ্য ব্যাটার শ্রেয়াস আইয়ারও।

সব মিলিয়ে এমন গুরুত্বপূর্ণ সিরিজে এই দুই মিডল অর্ডার ব্যাটারকে ছাড়াই খেলতে হবে ভারতকে। অর্থাৎ এই দুই ক্রিকেটারের অনুপস্থিতিতে একদম নতুন করে দল সাজাতে হচ্ছে টিম ইন্ডিয়াকে।  তবে এমন সময়ে দলের জন্য একটা উপায় বাতলে দিয়েছেন সাবেক কোচ রবি শাস্ত্রী।

তাঁর মতে, ৩২ বছর বয়সী সুরিয়াকুমার যাদবকে এখনই খেলানোর সর্বোত্তম সময়। সুরিয়ার ন্যাচারাল প্লেয়িং টেকনিক দলের অনেক কাজে আসতে পারে মন্তব্য করে স্টার স্পোর্টসের এক অনুষ্ঠানে রবি শাস্ত্রী বলেন, ‘সুরিয়াকুমার যাদবের টেস্টে সুযোগ পাওয়া উচিৎ।’

তিনি নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘ও যেকোনো উইকেটে নিজের ন্যাচারাল খেলাটা খেলতে পারে। তাছাড়া সুরিয়া বেশ আত্মবিশ্বাসী। যেটা টেস্ট ক্রিকেটে খুব দরকার। আমি যতটুকু ওকে কাছ থেকে দেখেছি তাতে সুরিয়া শুধু বল ব্লক করার মতো ব্যাটার না। সে স্ট্রাইক রোটেট করে খেলতে পছন্দ করে। আর ও স্পিনেও বেশ সাবলীল। তাই নাথান লিঁওদের বিপক্ষে ও ভালই করবে বলে আমার মনে হয়।’

ভারতের এই সাবেক কোচ আরও বলেন, ‘এখনকার টেস্ট ক্রিকেট অতোটাও রক্ষণাত্বক নয়। সময় পাল্টেছে। এখন রানের গতিটাও গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। সুরিয়া এক্ষেত্রে দারুণ কার্যকরী হবে। সে ক্রিজে যাবে। দ্রুত রান তুলবে। মিডল অর্ডারে ওর ঐ ৩০/৪০ রানের ইনিংসই দলের কাজে দিবে। এমনকি প্রতিপক্ষ বোলারদের সে মুহূর্তের মধ্যে তছনছ করে দেওয়া সক্ষমতা রাখে।’

রবি শাস্ত্রী অবশ্য ভুল কিছু বলেননি। সুরিয়াকুমার যাদব মূলত টি-টোয়েন্টি ব্যাটিং দিয়ে পরিচিতি পেলেও তাঁর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট পরিসংখ্যান কিন্তু আরো সমৃদ্ধ। সবশেষ যেবার রঞ্জি ট্রফি খেলেছিলেন সেবার প্রায় নব্বই গড়ে রান করেছিলেন। একই সাথে, তাঁর স্ট্রাইকরেটও ছিল ঈর্ষণীয়। ৯৫.৭০! এর অর্থ লঙ্গার ভার্শন ক্রিকেটেও তিনি বেশ সাবলীল গতিতেই রান তুলে থাকেন।

শুধু যে স্ট্রাইক রেটের দিকে নজর দিয়েছেন, এমনটিও নয়। নিয়মিত রান করে গিয়েছেন। এখন সেই ফর্মটা ভারতের জার্সি গায়ে টেনে আনলেই হলো। তাই সামনের সিরিজে নতুন সুরিয়ার দিকে নিশ্চিতভাবেই নজর থাকছে। টি-টোয়েন্টির নাম্বার ওয়ান ব্যাটার এখন লাল বলের ক্রিকেটে ভারতের মিডল অর্ডারে মুশকিল-আসান হতে পারেন কিনা- সেটাই দেখার পালা।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link