‘বেশি দরকার নাই, ওভারে একটা মারবি। তবে প্রথম বলে মারবি না।’ – তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিবকে কথা গুলো বলছিলেন মুশফিকুর রহিম। ঠিক কোন ডেলিভারির কথা বলছিলেন তা বলা মুশকিল। হতে পারে সাকিবের বিশেষ কোন ডেলিভারি কিংবা একটা বাউন্সার বা একটা ইয়োর্কার মারার কথা বলছিলেন মুশফিক। তবে সেটা যাই হোক, মুশফিকের পরামর্শ সেটা মারা যাবে না ওভারের প্রথম বলেই।
সিলেট স্ট্রাইকার্স দলটাই আসলে এমন। দলটার পুরো কোচিং প্যানেল গড়া হয়েছে লোকালদের নিয়ে। এছাড়া দলের সিনিয়র ক্রিকেটাররাও অনুশীলনে কোচের ভূমিকা পালন করেন। যেমন সিলেটের পেসারদের নিয়মিতই ক্লাস নেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। সেটা ভীষণ স্বাভাবিকও।
তবে আজ মুশফিকুর রহিমও নিলেন পেসারদের ক্লাস। তানজিম হাসান সাকিব, রেজাউর রহমান রাজাদের সাথে বেশ খানিকক্ষণ কথা বলেছেন পেস বোলিং নিয়ে। সিলেটের এই দুই পেসারের বোলিংও দেখেছেন লম্বা সময়।
মুশফিকুর রহিম হয়তো পেস বোলার নন, তবে টেকনিক্যালি দেশের অন্যতম সেরা ব্যাটার। ফলে কোন বলটা খেলতে ব্যাটসম্যানদের সমস্যা হয় সেটা খুব ভালো করেই জানেন তিনি। আর সেটাই বিভিন্ন ব্যাটিং স্ট্যান্স নিয়ে পেসারদের বোঝাচ্ছিলেন মুশফিক। এছাড়া কী করে ব্যাটারদের মাইন্ড রিড করতে হয় সেটাও বলে দিচ্ছিলেন এই পেসারদের। মুশফিকুর রহিম এরপর কথা বলেছেন শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরার সাথেও।
তানজিম হাসান সাকিব দেশের ক্রিকেটে সম্ভাবনাময় এক তরুণ। এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার সিলেটের হয়ে নিয়মিত সুযোগ না পেলেও খেলেছেন চারটি ম্যাচ। সেখানে ব্যাট বল দুই ডিপার্টমেন্টেই নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ব্যাট হাতে খেলেছিলেন ৪১ রানের ইনিংস। এছাড়া খুলনার বিপক্ষে মাত্র ২২ রান দিয়ে নিয়েছিলেন তিন উইকেট।
ওদিকে সিলেটের আরেক পেসার রেজাউর রহমান রাজার বিপিএলের শুরুটা হয়েছিল দুরন্ত। প্রথম ম্যাচেই তুলে নিয়েছিলেন চার উইকেট। এখন পর্যন্ত দলটার হয়ে ৮ ম্যাচ খেলে রাজা পেয়েছেন ১২ উইকেট। ফলে সিলেটের পেস বোলিং আক্রমণের দুই ভরসাকে বড় ম্যাচের আগে একটু পরামর্শ দিচ্ছিলেন মুশফিক।
ওদিকে সিলেটের সাফল্যের অন্যতম কারিগর তাঁদের ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত। এই ওপেনার প্রায় প্রতি ম্যাচেই বড় স্কোর করে দলকে ভালো শুরু এনে দিচ্ছেন। তবে শান্তকে অনুশীলনে আজ দেখা গেল একটু ভিন্ন রূপে। নিজের স্পিন বোলিংটা নিয়ে আজ বেশ মনোযোগী তিনি।
তাঁর বোলিং দেখতে চলে আসলেন দেশের সেরা স্পিন বোলিং কোচ সোহেল ইসলাম। রংপুর রাইডার্সের এই কোচ ছিলেন মাঠের আরেক পাশেই নিজের দলের সাথে। তবে মাঝে এসে শান্তকে কিছু বোলিং টিপস দিয়ে গেলেন এই কোচ।
ওদিকে লিগ পর্বে টেবিলের এক নম্বর দল হয়েই প্লে অফ খেলবে সিলেট স্ট্রাইকার্স। মাশরাফির দল অনেকটা নির্ভার হয়ে মাঠে নামবে প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে। সন্ধ্যায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে মাঠে নামবে তাঁরা। জিততে পারলে সিলেট পৌঁছে যাবে ফাইনালে। তবে হারলেও খুব একটা দুশ্চিন্তার কিছু নেই। কেননা এরপরও আরেকটা সুযোগ পাবে দলটা। অবশ্য অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা নিশ্চয়ই সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাইবেন না।