বাংলাদেশের ইনিংসের বিশ তম ওভারের খেলা চলছে তখন। উইল জ্যাকসের বলটা সাকিব আল হাসানের প্যাডে আঘাত করলো। আম্পায়ার আঙুল উঁচিয়ে আউট দিয়ে দিলেন। রিভিউ নিবেন কিনা বুঝতে পারছেন না। অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছেন সাকিবের বন্ধু কিংবা অবন্ধু তামিম ইকবাল। সাথে সাথে ইশারা দিয়ে বললেন রিভিউ নেয়ার জন্য।
রিভিউ নেয়ার পর ঠিকই দেখা গেল আম্পায়ারের সিদ্ধান্তটা ভুল ছিল। বল প্যাডে আঘাত করার আগে সাকিবের গ্লাভস আলতো করে ছুঁয়ে গিয়েছিল। ফলে আম্পায়ারকে তাঁর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হল। আর এভাবেই এগিয়ে যেতে থাকে সাকিব-তামিম জুটি।
বাংলাদেশের ক্রিকেটের অন্যতম সফল জুটিও তাঁরা। আজ অবশ্য এই দুজনের জুটি রেকর্ডও গড়েছে একটি। ওয়ানডে ক্রিকেটে এটি ছিল দুজনের পঞ্চাশতম জুটি। সেই পঞ্চামতম জুটিতেও দুজনে মিলে যোগ করেছেন পঞ্চাশ রান।
তামিম ইকবাল যখন আউট হয়ে ফিরছেন তখন দুজনে চতুর্থ উইকেট যোগ করেছেন ৭৯ রান। যদিও তাঁদের এই জুটির আজ বিশেষ কোন মাহাত্ম নেই। কেননা তাঁদের জুটির পরেও বাংলাদেশকে হারতে হয়েছে বিরাট ব্যবধানে।
আগে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড করেছিল ৩২৬ রান। দলটার হয়ে সেঞ্চুরি হাকিয়েছিলেন জেসন রয়। ফলে জিততে হলে আজ রেকর্ড বই ওলট পালট করতে হত বাংলাদেশকে। বড় দায়িত্ব ছিল টপ অর্ডার ব্যাটারদের উপর।
তবে টপ অর্ডার ব্যাটাররা আজ ব্যর্থতার চূড়ান্ত রূপ দেখেছেন। লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম কেউই করতে পারেননি দুই অংকের স্কোর। এই তিনজন দ্রুত আউট হয়ে যাওয়ার পরই মূলত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ।
তবুও সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের জুটিতে ভর করে এগিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। তাঁদের ব্যাট থেকে আসা রানগুলোই দর্শকদের বিনোদনের খোরাক দিচ্ছিল। দলকে খাদের কিনারা থেকে উঠিয়ে এনেছেন তাঁরা। নিজেদের জুটির অর্ধশতকও পূরণ হয়েছে। তবে দলকে কাঙ্খিত গন্তব্যে নিয়ে যেতে পারেননি তাঁরা।
বিশাল টার্গেট তাড়া করতে নামা বাংলাদেশের ব্যাটাররা কখনোই জয়ের জন্য খেলতে পারেনি। এমনকি সাকিব, তামিম জুটিও না। তিনশোর উপর রান তাড়া করতে নেমেও তামিম ইকবাল ধীরগতির এক ইনিংস খেলেছেন।
তামিম বিপদ সামাল দিয়েছেন ঠিকই তবে তাঁর ৬৫ বলে ৩৫ রানের ইনিংস প্রশংসনীয় নয়। ওদিকে সাকিব আল হাসান অর্ধশতকের দেখা পেলেও নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি বেশি। ৬৯ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি।
ওদিকে আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আজও ৩৯ রানের ইনিংস খেলেছেন তবে সেটা দলের তেমন কোন কাজে আসেনি। কেননা তিনি ব্যাট করেছেন মাত্র ৬৫ স্ট্রাইকরেটে। ওদিকে আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজরা আজও রানের দেখা পাননি।
শেষদিকে তাসকিন আহমেদ কয়েকটি বাউন্ডারি মেরে দর্শকদের আনন্দ দিয়েছেন যা একটু। এছাড়া বাংলাদেশের ইনিংসে যেন নেই আর কোন প্রাপ্তি। বাংলাদেশের ব্যাটাররা কখনোই জয়ের জন্য খেলছে বলে মনে হয়নি। বরং সম্মানজনক একটা স্কোর করাই ছিল ব্যাটারদের লক্ষ্য।
ফলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টানা দুই ম্যাচেই হারতে হল বাংলাদেশকে। দেশের মাটিতেও ইংলিশদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন পূরণ হল না।