এভাবে ৩০০ রান তাড়া করা যায় না!

ইংল্যান্ডের দেয়া ৩২৭ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তাই শুরু থেকেই চাপে ছিল। জিততে হলে তাই রেকর্ড গড়েই জিততে হতো তামিম ইকবালের দলকে। কিন্তু সেটা আর হলো কই, বিরক্তিকর ক্রিকেটের পসরা সাজিয়ে চাপে চিড়েচ্যাপ্টা বাংলাদেশ দল হেরেছে ১৩০ রানের বিশাল ব্যবধানে। ম্যাচের পুরো সময়ে একবারো মনে হয়নি জিততে পারে বাংলাদেশ!

ম্যাচের ফলাফল্টা বোধহয় প্রথম তিন ওভারেই লেখা হয়ে গিয়েছিল। স্যাম কুরানের বলের কোনো জবাব ছিল না টপ অর্ডারের ব্যাটারদের কাছে, মাত্র নয় রানেই হারিয়ে বসে তিন উইকেট। সেখান থেকে ফিরতে প্রয়োজন ছিল ভয়ডরহীন পালটা আক্রমণের। কিন্তু বাংলাদেশের কোনো ন্যূনতম প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি প্রতিপক্ষের বোলারদের উপর। বরং একের পর এক ডট বল খেলে বিরক্তির উদ্রেক ঘটিয়েছেন। 

ম্যাচে অল আউট হবার আগে ৪৪.৪ ওভার ব্যাট করতে পেরেছে বাংলাদেশ। এর মাঝে ডট বল ছিল ১৬৩টি, অর্থাৎ ৩২.১ ওভারে কোনো রানই তুলতে পারেনি তামিম ইকবালের দল। পাশাপাশি ব্যাটিংয়ে শুরুর ধ্বস এবং বাজে ফিল্ডিং তো আছেই। 

লিটস দাস এবং নাজমুল শান্ত শূন্য রানে আউট হলেও অধিনায়ক তামিম ইকবাল শুরুতেই বেশ ভালোই খেলছিলেন। প্রথম পাওয়ার প্লে’র সময়েও ৩৩ বলে ২৪ রান নিয়ে ভালোভাবেই ম্যাচে টিকিয়ে রেখেছিলেন দলকে। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে ততই কমেছে তামিমের ব্যাটের ধার। বিশেষ করে অফস্পিনার উইল জ্যাকস বোলিংয়ে আসার পরই একপ্রকার খোলসে ঢুকে যান টাইগার অধিনায়ক।

এই সময়টাতে কোনো প্রকার বাউন্ডারি হাঁকানোর চেষ্টাই করেননি তিনি। অথচ অপরপ্রান্তে ঠিকই সাবলীল ব্যাটিং করেছেন আরেক বাঁহাতি ব্যাটার সাকিব আল হাসান। একপর্যায়ে তো টানা ১১ বলে কোনো রান নিতে পারেননি তামিম। ফলে বেড়েছে রান রেটের চাপ, অতিরিক্ত মারমুখী খেলতে গিয়ে উইকেট ছুঁড়ে এসেছেন ব্যাটসম্যানরা। 

তামিমের আউটের ধরণটাও হাস্যকর। ৬৫ বলে ৩৫ রান করে মইন আলির নিরীহদর্শন এক বলে জেমস ভিন্সের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এই ৬৫ বলের মাঝে ৪২টিই ছিল ডট বল অর্থাৎ নিজের মূখোমুখি হওয়া ৬৬ শতাংশ বলেই কোনো রান নিতে পারেননি তিনি। প্রথম পাওয়ার প্লে’র পরের ৩৩ বলে করেছেন মোটে ১১ রান। 

বাংলাদেশের ইনিংসের সেরা ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসানও অবশ্য দায় এড়াতে পারবেন না। ৬৯ বলে ৫৮ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস খেললেও তিনিও রান নিতে পারেননি ৩০টি বলে। তবে ক্রিজে একমাত্র তাঁকে সাবলীল ব্যাটিং করতে দেখা গেছে ইংলিশ বোলারদের সামনে। 

আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও খেলেছেন ৪৯ বলে ৩২ রানের এক ইনিংস যা কিনা ম্যাচের পরিস্থিতির সাথে বেমানান। নিজের ইনিংসের ৫৩ শতাংশ বলেই কোনো রান পাননি তিনি। অন্যদিকে আফিফ হোসেন তো আরেক কাঠি সরেস, নিজের রানের খাতা খুললেই খেলে ফেলেছেন ১১ বল। নিজের খেলা ৩৩ বলের মাঝে ২০ বলেই কোনো রান আসেনি, অর্থাৎ ৬০ শতাংশ বলই ডট খেলেছেন তরুণ এই ব্যাটার। 

ইনিংসের শুরুতেই চাপে পড়লেও গোটা ম্যাচজুড়ে ব্যাটাররা ন্যূনতম চাপ সৃষ্টি করতে পারেননি এই ইংরেজ বোলারদের মাঝে। বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে এহেন সিরিজ হার নিশ্চিতভাবেই কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলবে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link