নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে এর আগে মাত্র একবারই টি-টোয়েন্টিতে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল ইংল্যান্ড। সেটিও আবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। সেই ইংল্যান্ডই কিনা টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের কাছে রীতিমতো উড়ে গেল। নতুন দিনের বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের কাছে ৩-০ তে সিরিজ হেরে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে ইংলিশরা।
সিরিজ জিতে দারুণ খুশি হলেও পা মাটিতেই রাখতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। চোখ রাখছেন ২০২৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ওপর।
ম্যাচ শেষে সাকিব বলেন, ‘এই সিরিজে আমরা দারুণ খেলেছি। বিশেষ করে অসাধারণ ফিল্ডিং করেছি আমরা যেটা ছিল চোখে পড়ার মত। এই সিরিজ জয় থেকে সামনের বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত হতে হবে আমাদের।’
এমন উইকেটেও লিটন আর শান্তর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের প্রসংশা করেন সাকিব, ‘ব্যাটিং করার জন্য খুব একটা সহজ ছিল না পিচ, এমন পিচেও আমরা ভালো ব্যাটিং করেছি। লিটন এবং রনি দারুণ সূচনা এনে দিয়েছে আর শান্তও ভালো ব্যাট করেছে।’
মোস্তাফিজের বোলিংয়েও তৃপ্ত সাকিব। দিন কয়েক বাদেই শুরু হতে যাওয়া আয়ারল্যান্ড সিরিজের জন্য প্রস্তুত থাকার কথাও জানান তিনি, ‘দুই সেট ব্যাটার দুই বলে আউট হবার পরেই খেলা পুরোপুরি বদলে যায়। মোস্তাফিজ ছিল দুর্দান্ত। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ আমাদের জন্য অন্য রকম চ্যালেঞ্জ নিয়ে অপেক্ষা করছে। টি-টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ড অনেক ভালো দল।’
কয়েকদিন আগেও যিনি ছিলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রলের পাত্র সেই নাজমুল হোসেন শান্তই এবার বাংলাদেশের ইংলিশ বধের নায়ক। সিরিজে ১৪৪ রান করে প্রত্যাশিতভাবেই সিরিজ সেরা শান্ত। ম্যাচ শেষে এই ব্যাটার বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ। সিরিজ জিততে পেরে আমরা খুশি। দলের বাকি খেলোয়াড় এবং কোচিং স্টাফদের বিশেষ ধন্যবাদ।’
২০২২ সাল কেটেছে মনে রাখার মত। বিপিএলেও ছিলেন রানের ধারায়। কিন্তু ইংল্যান্ড সিরিজে কিছুতেই যেন হাসছিল না লিটনের ব্যাট। ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচেও ছিলেন ব্যর্থ। তবে শেষ ম্যাচেই নিজের চেনা ছন্দে লিটন দাস। ৫৭ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরা লিটন।
ম্যাচ শেষে লিটন বলেন, ‘রানে ফিরে আমি খুবই খুশি। প্রথম দিকে নতুন বলে খেলা কিছুটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। কিছুটা এক্সট্রা বাউন্স করছিল বল। কিছুটা সময় নিয়ে আমি উইকেটের সাথে মানিয়ে নিয়েছি। শান্ত আর রনি যেভাবে ব্যাটিং করেছে তাতে আমার ওপর থেকে চাপ পুরোপুরি সরে গেছে যা আমাকে অনেক সাহায্য করেছে।’
এদিকে ওয়ানডে ফরমেটে শক্তিশালী বাংলাদেশকে হারালেও টি-টোয়েন্টিতে রীতিমতো নাস্তানাবুদ জস বাটলারের ইংল্যান্ড। সিরিজে বাজে ভাবে হেরে হতাশ হলেও বাংলাদেশকে কৃতিত্ব দিতে ভোলেননি বাটলার।
বাটলার বলেন, ‘সিরিজ হেরে খুবই হতাশ আমরা। বাংলাদেশকে অভিনন্দন। তারা সব ডিপার্টমেন্টেই আমাদেরকে টপকে গেছে। ইনিংসের শেষের দিকে আমরা ভালো বোলিং করলেও কিছু সুযোগ হাতছাড়া করেছি আমরা যেটা খুবই হতাশাজনক। উইকেট সময়ের সাথে সাথে ভালো হচ্ছিল এবং বাংলাদেশকে আমরা এই রানে আটকে রাখতে দারুণ বোলিং করেছি। আমরা এই রান তাড়া করতে পারব বলে আশা করেছিলাম কিন্তু পারিনি। পরপর দুই উইকেট হারিয়ে আমরা ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছি। নিজেকে নিয়েও আমি হতাশ রান আউটের সময় ক্রিজে পৌঁছাতে ঝাঁপিয়ে না পড়ায়।’