সেদিন স্নাইডারের লকার রুমে গিয়েছিলেন রামোস!

সেবার বিশ্বকাপ জেতার একদম হাত ছোঁয়া দূরত্বে ছিলেন ওয়েসলি স্নেইডার, আরিয়ান রোবেনরা। স্পেন বাঁধা পার করতে পারলেই বিশ্বকাপ ঘরে নিতে পারতো নেদারল্যান্ডস।

কিন্তু, নব্বই মিনিট গড়িয়ে অতিরিক্ত সময় শেষ হওয়ার মিনিট চারেক আগে আন্দেস ইনিয়েস্তার দুর্দান্ত ভলিতে সে স্বপ্ন নি:শেষ হয়ে যায় ডাচদের। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জেতে স্পেন। আর ফাইনালে উঠেও রানার্স আপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় নেদারল্যান্ডসকে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় হওয়া সে বিশ্বকাপের সময় এক যুগ পেরিয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে আরো তিনটি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু সেই ২০১০ এ ডাচদের হৃদয়ে যে রক্তক্ষরণ হয়েছিল তা এখনও ভুলতে পারেননি ওয়েসলি স্নেইডার।

সে বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুট বিজয়ী স্পেনের ডেভিড ভিয়ার মতো স্নেইডারও ৫ গোল করেছিলেন। ডাচদের ফাইনাল যাত্রায় তাঁর ভূমিকায় ছিল বেশি। এজন্য বিশ্বকাপ ফাইনাল হারের সে দু:সহ স্মৃতি এখনো পোড়ায় স্নাইডারকে। সম্প্রতি এক গণমাধ্যমে সেই স্মৃতিতেই ফিরে গিয়েছিলেন ওয়েসলি স্নেইডার।

তিনি বলেন, ‘আমরা ম্যাচ শেষের মাত্র ৪ মিনিট আগে গোল হজম করেছিলাম। এটা খুবই বেদনাদায়ক ছিল। পুরো ম্যাচে ভাল খেলছিলাম। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে এমন হার কেইবা মেনে নিতে পারে! ফাইনালের পর আমরা ভেঙে পড়েছিলাম। কেউ কোনো কথা বলছিল না তখন। দলের মধ্যে একটা নিস্তব্ধতা কাজ করছিল। গোটা দলটা বলতে গেলে এক প্রকার হতাশায় মুষড়ে পড়েছিল।’

স্নেইডারের এমন ভেঙে পড়া মুহূর্তে সেদিন পাশে দাঁড়িয়েছিলেন স্পেনের ডিফেন্ডার সার্জিও রামোস। সে মুহূর্তের এত বছর পেরিয়ে গেলেও রামোসের সে দিনের আন্তরিকতার কথা এখনও ভোলেননি সাবেক এ ডাচ ফুটবলার।

সে মুহূর্তের কথা টেনে তিনি বলেন, ‘তখন স্পেনের সবাই উদযাপনে ব্যস্ত ছিল। কিন্তু রামোস আমার লকার রুমে এসেছিল আমাকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য। আমার কাঁধে হাত রেখে প্রায় মিনিট ৩০/৪০ সে কথা বলেছিল। সে আমার হতাশাটা বুঝতে পেরেছিল। আসলে ঐ সময় আমি অনেক ভেঙে পড়েছিলাম। রামোস সে দিন আমাকে হালকা করার চেষ্টা করেছিল। সত্যিই অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ও।’

জোহানবার্গের ফাইনালে সেদিন একে অপরের প্রতিপক্ষ থাকলেও সার্জিও রামোস আর ওয়েসলি স্নেইডার মূলত এক সময়কার ক্লাব সতীর্থ। ২০০৭ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তারা দুজনই রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলেছিলেন।

স্নাইডার এই মুহূর্তে ফুটবলের বাইরে থাকলেও রামোস এখনও খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে দীর্ঘ ১৬ বছর খেলার পর এখন ফ্রেঞ্চ ক্লাব পিএসজি’র হয়ে খেলছেন রামোস।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link