বিরাট কোহলি তখন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন। ফর্মে ফেরার কোনো কূল-কিনারাই পাচ্ছিলেন না তিনি। দীর্ঘ সময়ের সেঞ্চুরিখরা এক প্রকার পেয়ে বসেছিল তাঁকে। তবে এমন হতশ্রী অবস্থার পরিবর্তন ঘটল গত বছরের এশিয়া কাপে। এই টুর্নামেন্ট দিয়েই আবারো ছন্দ ফিরে পেতে শুরু করলেন কোহলি। দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে সেঞ্চুরিও পেয়ে গেলেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেললেন ১২২ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস।
মূলত এরপর থেকেই পুরনো ফর্ম ফিরে পেতে শুরু করেন বিরাট কোহলি। এক মাসের ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও দেখালেন ঝলক। মেলবোর্নে পাকিস্তানের বিপক্ষে রীতিমত ধ্বংসস্তূপ থেকে ভারতকে রক্ষা করেছিলেন কোহলি। তাঁর ৮২ রানের ইনিংসেই প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচটা জিতে যায় ভারত।
কোহলির টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরি আছে। তারপরও এই সংস্করণে পাকিস্তানের বিপক্ষে মেলবোর্নের সেই ৮২ রানের ইনিংসটিকেই সিংহভাগ মানুষ এগিয়ে রাখেন। কারণ পরিস্থিতি বিবেচনায়, কোহলি সেদিন যেভাবে একা হাতে ভারতকে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন তা এক কথায় দুর্দান্ত, অভাবনীয়, অবিশ্বাস্য। তবে সেই ইনিংস খেলার সময় নাকি স্নায়ুচাপে পড়ে গিয়েছিলেন কোহলি। সম্প্রতি ক্রীড়া সামগ্রী প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান পুমার এক অনুষ্ঠানে সেই কথাই জানিয়েছেন ভারতের এ ব্যাটার।
তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে ঐ দিন সে সব মুহূর্ত কিভাবে গিয়েছিল তা আমার জানা নেই। তবে আমি খুব চাপে ছিলাম। অনেকে আমাকে সে ইনিংস নিয়ে প্রশ্ন করে, কোন পরিকল্পনায় এগিয়েছিলে, কিভাবে এক্সিকিউট করেছিলে ইত্যাদি। কিন্তু এ সব প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই। ১২ কি ১৩ ওভারের সময় আমি খুব চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। এমনটা আমার ক্যারিয়ারে কখনোই হয়নি।’
তিনি আরো যুক্ত করে বলেন, ‘আমি শুধু খেলে গিয়েছি। বিশেষ কোনো কিছুই চিন্তা করে করিনি। আমরা ১০ ওভারে বোধহয় ৩১ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলাম। আমি ২৫ বলে ১২ রানে তখন ক্রিজে ছিলাম। তখন রাহুল ভাই (কোচ) এসেছিলে। সে সময় উনি আমাকে কী বলেছিলেন মনে নেই। তবে আমি বলেছিলাম, ‘আপনি যা বলছেন, তা এখন আমার মাথায় ঢুকবে না। আমার মাথা ব্ল্যাংক হয়ে গিয়েছে।’
তবে এর কিছুক্ষণ বাদে মাথা থেকে সব চিন্তা সরিয়ে ফেলতে শুরু করেন কোহলি। আর সেটিই সেদিন কোহলির মাঝে আলাদা একটা শক্তি জুগিয়েছিল। এ নিয়ে কোহলি বলেন, ‘আমার ভাবনা তখন দ্রুত গতিতে কাজ করছিল। কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। তবে যখনই বেশি চিন্তা করা বন্ধ করলাম, তখনই ভাল ব্যাট করতে পারছিলাম। ঈশ্বর সেদিন আমার পক্ষে ছিল। তাই হয়তো অতদূর যেতে পেরেছিলাম। এ ছাড়া কোনো প্রতিভা, প্ল্যান নিয়ে আমি এগোই নি। সে দিন রাতে যা হয়েছিল, তা নিয়ে আমার কাছে আর কোনো ব্যখ্যা নেই। আর আমি চাই, এমন দিন যেন আর না আসে।’