অদ্ভুত শোনালেও বলতেই হয় যে মাস দেড়েক আগে শেষ হওয়া লাল বলের রঞ্জি ট্রফি ক্রিকেটে ৭ ম্যাচে তার ৬৩৪ রানের মধ্যেই ঠিকানা লেখা ছিল আজকের সাদা বলের সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে কড়কানিমুখর পরাকাষ্ঠার ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে ২৭ বলে তার ৬১ রানের (৭ টি ৪, ৩ টি ৬) ইনিংসটার। তাঁর ফর্মে ফেরার স্পষ্ট ইঙ্গিত ছিল রঞ্জিতে, সেটা আজ ফেটে পড়ল ওয়াঙখেড়ের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ম্যাচে।
কি বলছেন, ২টো ২ রকম ফরম্যাট, তাই তুলনা হয় না ?তা তো উনি নিজেও জানতেন। লাল বলের ৪ নম্বর তিনি তো সাদা বলের সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে চিরকালীন ওপেনার। এবারও চেনা চেনা ওয়াঙখেড়েতে তিন নম্বরে এলেও কার্যত ওপেনারের রোলেই ছিলেন, কারণ তখনো স্কোরবোর্ডে রানের ঘরে দাগ পড়েনি।
তারপরে ২৭ বল ফেস করেছেন আর তার টেকনিকমুখর হিসেবী আগ্রাসনের বিস্ফোরণে ফেটে পড়েছে মুম্বাইয়ের ওয়াঙখেড়ে। সেই আগ্রাসনের সামনে দিশেহারা লাগছিল হোম টিমকে। মার, মার আর মার, যেন টপ ফর্মের বীরু আজ জয় হয়ে নেমে এসেছিল তার ব্যাটে। এই জয়ের কয়েনের পেস আর স্পিন, দু’দিকেই একটাই আইকন আঁকা ছিল – নিয়ন্ত্রিত আগ্রাসন। সহজ টার্গেট আরো সহজ হয়ে গেল তার ব্যাটের হাত ধরে, ৭ উইকেটে জিতল ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস।
তিনি যতক্ষণ উইকেটে ছিলেন, আগের ২ ম্যাচের ৪৪০ ভোল্টের রুতুরাজ গায়কড়কে আমাদের সময়ের ‘ভোল্টেজ কমে যাওয়া’ টিমটিমে সি এফ এল বাল্ব লাগছিল এদিনের নায়কের পাশে। দ্বিতীয় উইকেট জুটির ৮২-এর মধ্যে টেকনিকের মিনারে গড়া ৬১ করে গেলেন তিনি ৩ টি ৬ আর ৭ টা ৪-এ সাজিয়ে।
আরশাদ খানের ১ ওভারে নিলেন ২৩ রান (৬, ৪, ৪, ৪, ৪, ১)। তার ব্যাটের অলৌকিক সৌন্দর্য্যে ধ্বংস হয়ে গিয়ে ২ ম্যাচে কোন পয়েন্ট না পাওয়া মুম্বাই ইন্ডিয়ান টিম নিশ্চয়ই আজ রাতের দুঃস্বপ্নে তাকেই দেখবে।
তাঁর ব্যাটে সংগ্রহযোগ্য ছবি আঁকা হল এদিন ওয়াঙখেড়েতে। সে ছবির এককোণে হয়ত সিগনেচার টিউন হয়ে রয়ে গেল অজিঙ্কা রাহানেকে টেস্ট টিম থেকে ছেঁটে ফেলার বিরুদ্ধে না বলা অনেক কথা। মনে রাখা দরকার ভারতীয় টেস্ট টিমের মিডল অর্ডারটা কিন্তু আজও রক্তস্বল্পতায় ভুগছে। ওদিকে, যিনি সেই উপশম হতে পারেন – তিনি কিন্তু বেশ ছন্দেই আছেন বলা চলে।