পাকিস্তানের নব্য পেস বিপ্লব

পাকিস্তানকে বলা হয় পেস প্রতিভার খনি। ওয়াসিম আকরাম, ইমরান খান কিংবা একালের মোহাম্মদ আমির বা শাহীন শাহ আফ্রিদি – গ্রেটদের কমতি নেই দেশটিতে। তবে, ফাস্ট বোলার শুধু থাকলেই হয় না – তাঁদের থেকে সেরাটা বের করে আনাও জরুরী।

আর সে জন্যই রোটেশন পলিসির দিকে হাঁটতে চান দলের কোচ উমর গুল। বিশেষ করে সামনে যখন ওয়ানডে বিশ্বকাপ, তখন ফাস্ট বোলাররাই হয়তো হবেন পাকিস্তানের তুরুপের তাস। এর জন্যই তাঁদের ফিটনেসের শতভাগ ব্যবহার করতে চায় পাকিস্তান। উমর গুলের সমাধান তাই পরিস্কার, পেসারদের খেলাতে হবে বেছে বেছে।

মেগা ইভেন্টের আগে ফাস্ট বোলারদের সতেজ রাখার প্রসঙ্গে উমর গুল বলেন, ‘আমরা ভাগ্যবান যে আমাদের দলে কয়েকজন আছে যারা নিয়মিত ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটারের ওপর গতিতে বল করতে পারে। ওদের যত্ন দরকার। তাই আমাদের রোটেশন পলিসির দিকে হাঁটতে হবে যাতে ওরা ভারতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপে ফিট থাকে।’

উমর গুল ভুল বলেননি, সম্প্রতি পেস বোলিংয়ে নতুন বিপ্লবের পথেই হাঁটছে পাকিস্তান। জাতীয় দল কিংবা পাকিস্তানের ঘরোয়া লিগে এখন পেস প্রতিভার ছড়াছড়ি। তবে, তাঁদের যথার্থ যত্ন নিতে হবে। এখানে, উমর ভরসা রাখছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) ওপর। বললেন, ‘আমি নিশ্চিত যে বিষয়টা নিয়ে পিসিবি ভাবছে। আমার মতে, এটা নিয়ে এখনই ভাবতে হবে।’

৪০ বছর বয়সী গুল এখানে শাহীন শাহ আফ্রিদির উদাহরণ টানেন। গেল বছর হাঁটুর ইনজুরিতে ভোগেন এই পেসার, আর প্রভাব পড়ে পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যাত্রায়। শেষে সেই বিশ্বকাপের ফাইনালে হারে পাকিস্তান।

গুল প্রতিভাবান তরুণ পেসারদের পরিচর্যার কথাটা বারবারই স্মরণ করিয়ে দিলেন। তিনি নিজেও কাজ করছেন এই তরুণদের সাথেই। বললেন, ‘আমাদের দারুণ সম্ভাবনাময় সব বোলার আছে। আমি ওদের সাথে অনেক সময় কাটাই, ক্রিজে আসা নতুন ব্যাটারদের কিভাবে সামলাতে হয় সেটা বলি। ‍কিভাবে ফিল্ডিং সেট আপ বুঝে বোলিং করতে হয় – সেটা বুঝাই ওদের।

সম্প্রতি আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাজেভাবে সিরিজ হেরেছিল পাকিস্তান। আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত সেই টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য সাবেক পেসার উমর গুলকে দেশটির অভ্যন্তরীণ বোলিং কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর জের ধরে দায়িত্বটা দক্ষিণ আফ্রিকার মরনে মরকেলের হাতে চলে যাওয়ার একটা সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল।

যদিও, পিসিবি সেই পরিকল্পনা থেকে সরে এসে দায়িত্বে উমর গুলকেই বহাল রাখে। কৃতজ্ঞ গুল বলেন, ‘পিসিবি আমার ওপর ভরসা রেখেছে। আমি কৃতজ্ঞ। জাতীয় দলের হয়ে কাজ করতে পারাটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। পাকিস্তানের হয়ে খেলতে উপভোগ করতাম। এখন এই ভূমিকাটাও উপভোগ করছি।’

উমর গুল মনে করেন, পাকিস্তানের পেসারদের দিয়েই ২০২৩ বিশ্বকাপে দারুণ ফলাফল আনা সম্ভব। গুলের সেই স্বপ্ন পূরণ হবে কি না – তা জানার জন্য সময়ের অপেক্ষা করতেই হচ্ছে। আর সেটা হলে নতুন এক পেস বিপ্লবই দেখবে পাকিস্তান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link