রুটদের সামনে কঠিন সময়

হিথ্রো বিমানবন্দরে ছাড়ছিল ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। গন্তব্য- শ্রীলঙ্কা।

জো রুটের অধীনে সেখানে দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে থ্রি লায়ন্সরা। এই দুটো টেস্টের পর আবার ভারতে যাবে ওরা, সেখানেও আছে চার টেস্টের লম্বা সূচি!

এই দুটো সিরিজের ব্যাস্ততা আসলে ইংলিশদের জন্যে একটা প্রতীকি চিত্র। বছরের হিসাব করতে বসলে, সত্যি বলতে ২০২১ সালটা ইংলিশ ক্রিকেটে যাবে ভীষণ ব্যাস্ততাতে। মর্যাদার লড়াই অ্যাশেজ তো আছেই, এই এক পঞ্জিকাবর্ষে ইংল্যান্ডকে খেলতে হবে মোট ১৭ টা টেস্ট ম্যাচ! আর হ্যাঁ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথাও কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না।

সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক এউইন মর্গান; সাদা পোশাকে দায়িত্বটা সামলান জো রুট। দুজনেই জানেন সামনে ঠিক কতটা কঠিন সময় অপেক্ষা করছে তাদের জন্যে। ইয়ন মরগ্যান তো সোজাসুজি বলেই দিলেন, ‘অক্টোবরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ছাড়া আর কোন সিরিজেই সাদা বলের সেরা ইংলিশ দল দেখা যাবেনা।’

মর্গানের কথাতেই পরিষ্কার, বিশ্রাম দিয়ে দিয়ে খেলানোর চিন্তা খেলোয়াড়দের। যাতে করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড তাদের সেরা একাদশটাই মাঠে নামাতে পারে।

জো রুট অবশ্য এক্ষেত্রে একটু ধন্দে পড়ে যেতে পারেন। তার কাজ একটু বেশিই কঠিন এমনটাও ভাবতে পারেন। ভাবলে দোষের কিছু নেই। সামনের আট সপ্তাহেই তাকে খেলতে হবে ছয়টা টেস্ট ম্যাচ। সেটাও কিনা এশিয়ার মাটিতে। এরপর আছে নিউজিল্যান্ডের সাথে টেস্ট ম্যাচ, এই মুহুর্তে যারা টেস্ট র‍্যাংকিংয়ের চূড়াতেই আছে। এরপর পাকিস্তান সফর নিয়েও আলোচনা চলছে, যেখানে কিনা গত ১৫ বছর ধরে ম্যাচ খেলেনি ইংল্যান্ড।

তবে এসব ছাপিয়ে জো রুটের ভাবনাতে অ্যাশেজ। অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত অ্যাশেজে যে গত ১০ বছর জয়ের মুখ দেখেনি ইংল্যান্ড। জো রুটও তাই হাঁটছেন মর্গানের পথেই। বলে দিয়েছেন, অ্যাশেজ ছাড়া সাদা পোশাকে ইংল্যান্ডের সেরা দলটা অন্য সব সিরিজে দেখার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

জো রুট অবশ্য এই ব্যাপারটাকে একটা দারুণ সুযোগ হিসেবেই দেখছেন। হিথ্রো বিমানবন্দর ছাড়ার আগে বলেছেন, ‘এই শীতে দল হিসেবে আরো উপরে ওঠার এটাই আমাদের সুযোগ। খেলোয়াড় বাছাইয়ে এবার আমরা আগের চাইতে অনেক খেলোয়াড়কে সুযোগ দিতে পারব। এটা আমাদের স্কোয়াডকে আরো সমৃদ্ধ করবে।’

তবে রুট বাস্তবতা মানছেন। এই বছরটা কঠিন যাবে সেটা সোজাসুজিই বলেছেন তিনি দেশ ছাড়ার আগে। তবে সাফল্য পেতে তিনি তাকিয়ে আছেন দলগত প্রচেষ্টার উপর। বিশেষ করে যারা দলের ভিত্তি – স্টোকস, আর্চার এবং তিনি নিজে, এদের পারফর্ম্যান্সে জোর দিচ্ছেন তিনি। স্কোরবোর্ডে রান উইকেট- এই দুটোই তো রুটের চাই সাফল্যের বছর দেখতে।

তবে রুট যতই বলে থাকুন, এবার পারফর্ম্যান্সের চাইতেও চ্যালেঞ্জিং হবে একাদশ বাছাই। প্রত্যেক খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দেবার ব্যাপারে টিম ম্যানেজমেন্টকে ভাবতে হবে। কোন সিরিজে কে খেলবে তা নিয়েও তো পরিষ্কার ধারণা থাকা চাই।

আর এসবের মধ্যে, বায়ো বাবলের যন্ত্রণা তো থাকছেই। মাসের পর মাস টানা বায়ো বাবলে থাকার ধকল সামলাতে ইংল্যান্ড কী করবে, সেটা এখনও ঠিক পরিস্কার না।

তবে মোটা দাগে এটুকু বলা যায়, ইংল্যান্ডের জন্যে বছরটা সোজা হচ্ছে না!

লেখক পরিচিতি

আদ্যোপান্ত স্টোরিটেলার!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link