খেলোয়াড়ি জীবনে ছিলেন বোলারদের জন্য ত্রাসের এক নাম। টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে একমাত্র কোয়াড্রাপল (৪০০ রান), প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৫০০ ছাড়ানো ইনিংসসহ কতশত কীর্তি যে তাঁর নামে লেখা হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। বাইশ গজের ক্রিকেটে ‘ব্রায়ান লারা’ নামটাই তাই একটা ইতিহাস। তবে কোচিং ক্যারিয়ারে এসেই মিলল বৈপরীত্য। প্রথম বারের মতো আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের ডাগআউটে এসেই রীতিমত ব্যর্থতায় ডুবে গিয়েছেন ক্যারিবিয়ান এ ক্রিকেট কিংবদন্তি।
এখন পর্যন্ত খেলা ৭ ম্যাচে মাত্র ২ টিতে জয় পেয়েছে হায়দ্রাবাদ। বাকি ৫ টিতে হেরে পয়েন্ট তালিকার ঠিক নয় নম্বরে রয়েছে ব্রায়ান লারার দল। স্বাভাবিক ভাবেই কোচিংয়ে নিজের প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে এসে দলের এমন ব্যর্থতায় বেশ হতাশ ব্রায়ান লারা। তবে এখনো ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে প্রবল আত্মবিশ্বাসী তিনি।
ভারতের এক গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এখনো ৭ ম্যাচ বাকি আছে। আমরা ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে আশাবাদী। আমরা আবার নতুন করে শুরু করতে চাই।’
তবে লারা জন্য চ্যালেঞ্জের ব্যাপার হচ্ছে, এরই মধ্যে তার দলের দুইজন গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার ইনজুরিতে ছিটকে গিয়েছেন। অভিষেক শর্মার পর শেষ ম্যাচে ইনজুরিতে পড়ে এবারের আইপিএল থেকে ছিটকে গিয়েছেন ওয়াশিংটন সুন্দরও। তাই টিম কম্বিনেশন সাজাতে কিছুটা বেগই পেতে হচ্ছে হায়দ্রাবাদ টিম ম্যানেজমেন্টকে।
তবে ইনজুরির কারণে সুন্দর আর অভিষেক শর্মা ছিটকে গেলেও লারা ভরসা রাখছেন দলের বাকি সদস্যদের উপর। তাঁর মতে, এই দলে হ্যারি ব্রুকের মতো ব্যাটার রয়েছে যার এই আইপিএলেই একটি শতক রয়েছে। এ ছারা মায়াঙ্ক আগারওয়ালও হায়দ্রাবাদের ব্যাটিং অন্যতম ভরসার নাম। এ ছাড়া বোলিং লাইন আপের সম্ভাবনাময়ী সব পেসার রয়েছে।
তবে লারা সম্ভাবনার কথা বললেও তাঁর অধীনে গত আসরে হায়দ্রাবাদের সেরা পেসার উমরান মালিককে এবারের আসলে খুব কমই ব্যবহার করা হচ্ছে। গত আসলে ২২ উইকেট নিয়েছিলেন কাশ্মীরের এ পেসার। তবে এবার তাঁকে সেভাবে দলের প্রয়োজনে ব্যবহারই করা হয়নি। লারা অবশ্য সেটির ব্যাখ্যা দেননি।
একই ভাবে গত আসরে, পিঞ্চ হিটিংয়ে দারুণ দক্ষতা দেখানো আব্দুল সামাদকেও এবারের আসরে ব্যাটিংয়ে সেভাবে সুযোগ দেওয়া হয়নি। একাদশে থেকেছেন, কিন্তু সেভাবে নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার মতো সুযোগ পাননি। এখানেও কিছুটা দায় আছে লারার।
সব মিলিয়ে হায়দ্রাবাদের প্রধান কোচ হিসেবে লারা অনেক আশার বাণী শোনালেও, তাঁর অধীনে সেটি মাঠে প্রয়োগ করার নমুনা মিলছে কম। তাই অভিজ্ঞ, তরুণদের নিয়ে দারুণ স্কোয়াড গড়েও প্রত্যাশিত সাফল্য পাচ্ছে না হায়দ্রাবাদ।
এমন অবস্থায় পরের অর্ধে দল ঘুরে না দাঁড়ালে দলগত ব্যর্থতার পাশাপাশি কোচ হিসেবে বাজে এক আসরই কাটাতে যাচ্ছেন ব্রায়ান লারা। এখন দেখার পালা, এই মুহূর্তে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকা সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ ঠিক কতটা উত্তরণ ঘটাতে পারে বাকি সময়ে। হায়দ্রাবাদের উত্তরণ ঘটলেই, কোচ হিসেবে ব্রায়ান লারার ব্যর্থতার পাল্লাটা কিছুটা হালকা হবে।