একাডেমি মাঠটাই আপন মুমিনুলের

হোম অব ক্রিকেটে চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের ম্যাচ। সুপার লিগের ম্যাচে মাঠের লড়াইটা চলছে শেখ জামাল ও প্রাইম ব্যাংকের মধ্যে। তবে সেই ম্যাচের উত্তাপ যেন ছড়ায়নি মিরপুর একাডেমি মাঠে। সেখানে নিরবে নিভৃতে, একাই নিজের ব্যক্তিগত লড়াইটা লড়ে গেছেন মুমিনুল হক।

‘টেস্ট খেলোয়াড়’ ব্যাস, এই এক তকমা জুড়ে দিয়েই যেন ক্ষান্ত। আর তাতে মুমিনুল হকের ক্যারিয়ারটা আটকে যায় এক নির্দিষ্ট গণ্ডিতে। সাদা পোশাকের সেই গণ্ডি থেকে যেন বেরিয়ে আর আসতে পারেননি মুমিনুল। বড্ড ছোট্ট এক পরিসীমায় আটকা পড়ে গেলেন তিনি।

নিজের সেই পরিধি থেকে বেরিয়ে আসা আর যেন হয়েই উঠছে না তার। সাম্প্রতিক সময়ে ভুগছেন ফর্মহীনতায়। টেস্ট দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ তিনি। একটা সময় রান করেছেন নিয়ম করে। সেই সাথে বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে সবচেয়ে ধারাবাহিক ছিলেনও তিনি। বড় সব ইনিংসের কারিগর।

তবে সেই দিনগুলোও যেন ফেলে এসেছেন মুমিনুল। এখন আর ব্যটে খুব একটা রান পান না তিনি। অবশ্য ঘুরে দাড়ানোর পর্যাপ্ত সুযোগটাও তো মেলে না তার। টেস্ট ক্রিকেটের দুনিয়ায় বাংলাদেশের বিচরণ অত্যন্ত নগন্য। বছরে দু’একটা সিরিজই যেন বরাদ্দ। সেই অল্প সংখ্যক সিরিজ খেলে নিজের খারাপ সময়টা কাটিয়ে ওঠাও তো প্রায় অসম্ভব।

তাছাড়া বছরের বাকিটা সময় মুমিনুলকে কাটাতে হয় প্রায় অলস সময়। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের মত আয়োজনে তিনি প্রায় ব্রাত্য। তবে এবারের ডিপিএলে তিনি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন। তার দল রুপগঞ্জ টাইগার্স সুপার লিগে উঠতে পারেনি। তবে তিনি রানের সেই খরা কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন। চার ফিফটির কল্যাণে ৩৬১ রান করেছেন নয় ম্যাচ থেকে।

তবে তাতেই সন্তুষ্টি নেই মুমিনুলের। তিনি বরং নিজের সেই ধারাবাহিক সত্ত্বাকে ফিরিয়ে আনতে বড্ড মরিয়া। বাংলাদেশ জাতীয় দল বর্তমানে রয়েছে ইংল্যান্ডে। মুমিনুলকে ওয়ানডে দলের বিবেচনা করা হয় না সচারচর। এবারও করা হয়নি, ডিপিএলে পারফরম করার পরও।

তবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হওয়ায় ওয়ানডে সিরিজের পর বাংলাদেশ আফগানিস্তানকে আতিথিয়েতা দেবে। পূর্ণাঙ্গ সিরিজই খেলবে তাদের বিপক্ষে টাইগাররা। আর স্বাভাবিকভাবেই টেস্ট দলের বিবেচনায় থাকবেন মুমিনুল হক। তাইতো অলস সময় পার না করে তিনি হাজির মিরপুর একাডেমি মাঠে।

ব্যাট-প্যাডে সজ্জিত হয়ে নেটে ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন লম্বা সময় ধরে। পাশে দাঁড়িয়ে মুমিনুলের সব সমস্যাগুলো যেন ধরিয়ে দিচ্ছিলেন জেমি সিডন্স। সম্প্রতি জেমি সিডন্স জাতীয় দলের ব্যাটিং পরামর্শকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের পাইপলাইনকে সমৃদ্ধ করবার কাজটা করতে চান।

মাত্র একটি ফরম্যাটে খেলার সুযোগ পাওয়া মুমিনুলও নিশ্চয়ই পাইপলাইনের অংশ। কেননা স্রেফ টেস্ট এলেই ডাক পড়ে তার। বাকিটা সময় তিনি থাকেন আড়ালে। স্বল্প সুযোগের পূর্ণ ব্যবহারটাই যেন করতে পারেন মুমিনুল সেই টোটকাই বাতলে দিয়েছেন সিডন্স।

হয়ত নিরবে, একলা কাটানো এই সময়গুলোর অবসান ঘটবে না মুমিনুলের। কেননা সাদা পোশাকটা যেন সহসাই গায়ে তুলে নেয় না টাইগাররা। তবুও নিশ্চয়ই নিজেকে সেই সাদা পোশাকে আরও বেশি উজ্জ্বল হওয়ার ইচ্ছে তাড়িয়ে বেড়ায় মুমিনুলকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link