প্রভসিমরানের সেঞ্চুরি ম্লান হয়নি!

প্রাভসিমরান সিংয়ের সেঞ্চুরির পরও পাঞ্জাব কিংস স্কোরকার্ডে জমা করেছিল ১৬৭। এমন লক্ষ্যকে আবার মামুলি বানিয়ে দিল্লী ক্যাপিটালসের অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার দৌর্দন্ড প্রতাপেই ব্যাটিং শুরু করেছিলেন। অজি ব্যাটারের এমন ব্যাটিংয়ে দিল্লী শিবিরও জয়ের প্রহর গুণছিল স্বস্তিতে থেকেই।

কিন্তু কিছুক্ষণ বাদেই, তা অস্বস্তিতে পরিণত হয় পাঞ্জাবের বোলারদের বোলিং দাপটে। হারপ্রীত ব্রার আর নাথান ইলিসের দারুণ বোলিংয়ে শেষমেশ ম্লান হয়নি প্রাভসিমরানের সেঞ্চুরি। মাস্টউইন গেমে পাঞ্জাবের জয় এসেছে ৩১ রানে।

টসে জিতে এ দিন প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দিল্লী ক্যাপিটালসের অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। অধিনায়কের সিদ্ধান্তের প্রতিদান দিয়ে শুরুটা ভালই করেছিল দিল্লীর বোলাররা। পাঞ্জাবের ইনিংসের শুরুর আঘাতটা হানেন ইশান্ত শর্মা। অভিজ্ঞ এ পেসারের বলে রাইলি রুশোর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শিখর ধাওয়ান।

রানের গতি বাড়ানোর জন্য এ দিন লিয়াম লিভিংস্টোনকে তিনে নামিয়েও তেমন সফল হয়নি দিল্লী। ইশান্ত শর্মার বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে মাত্র ৪ রানেই ফিরে যান ইংলিশ এ ব্যাটার। পাঞ্জাবের ব্যাটারের এরপর উইকেটে যাওয়া আসার মিছিলেই সঙ্গী হয়। কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি। তবে ব্যতিক্রম ছিলেন ওপেনিংয়ে নাম প্রভসিমরান সিং।

 

অপরপ্রান্তে উইকেট হারালেও তিনি একাই পাঞ্জাবকে টেনে নিয়ে যান। দিল্লী বোলারদের সামনে একাই প্রতিরোধ গড়েন তিনি। মাঝে অবশ্য স্যাম কারেন কিছুটা সঙ্গ দিয়েছিলেন। তাদের ৭২ রানের জুটিতেই মূলত লড়াই করার মতো সংগ্রহের পথে এগিয়ে যায় পাঞ্জাব কিংস।

এর মাঝে ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেওয়ার পর সেঞ্চুরির পথেও পা বাড়ান প্রাভসিমরান সিং। অবশেষে কাঙ্ক্ষিত শতকও ছুঁয়ে ফেলেন তিনি। ৬১ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক্যাল ফিগারে পৌঁছানো প্রভসিমরান শেষ পর্যন্ত থামেন ৬৫ বলে ১০৩ রানের ইনিংস খেলে।

অবশ্য মুকেশ কুমারের বলে ফেরার আগে তিনি পাঞ্জাবকে ঠিকই লড়াই করার মতো পুঁজি এনে দেন। তাঁর ঐ সেঞ্চুরির কল্যাণেই নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে স্কোরবোর্ডে ১৬৭ রান জমা করে পাঞ্জাব কিংস।

পাঞ্জাবের দেয়া ১৬৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে শুরুতেই আগ্রাসী ব্যাটিং করেন দিল্লীর অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। অজি এ ব্যাটারের ব্যাটিং তাণ্ডবে ব্যাটিং পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারেই ৬৫ রান তুলে ফেলে দিল্লী ক্যাপিটাল। দিল্লীর জন্য তখন ম্যাচজয় সময়ের ব্যাপারই মনে হচ্ছিল।

কিন্তু এরপরই ঘটে ছন্দপতন। ফিলিপ সল্টকে ফিরিয়ে পাঞ্জাবকে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন হারপ্রীত ব্রার। আর এরপরেই তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়ে দিল্লী ব্যাটিং লাইনআপ। মাত্র ১৯ রানের ব্যবধানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে দিল্লী।

হারপ্রীত ব্রারের স্পিনবিষে নীল হয়ে একে একে ফিরে যান মিশেল মার্শ, রাইলি রুশো, অক্ষর প্যাটেল, মানিশ পাণ্ডে। দুরন্ত গতিতে অর্ধশতক তুলে নেওয়া ওয়ার্নারও দলের ক্রান্তিলগ্নে হাল ধরতে পারেননি। হারপ্রীত ব্রারে বলে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে অজি এ ব্যাটার ফিরে যান ব্যক্তিগত ৫৪ রানে।

মূলত ওয়ার্নার ফিরে যাওয়ার পরই ম্যাচে খেই হারিয়ে ফেলে দিল্লী। শুরুতে দারুণ গতিতে রান এগিয়ে রাখলেও ক্রমাগত উইকেট পতনের ফলে একসময় ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ওয়ার্নারের দল। হারপ্রীত ব্রারের পর শেষদিকে নাথান ইলিসের পেসে দিশেহারা হয়ে পড়ে দিল্লীর লোয়ার মিডল অর্ডার। তাঁর বলেই দিল্লীর শেষ আশা আমান হাকিম খান ফিরে যান।

যদিও তার আগেই আস্কিং রেটের চাপে একপ্রকার নাস্তানাবুদ হয়ে পড়ে দিল্লী ক্যাপিটালস। এরপর আর সামান্য প্রতিরোধের দৃশ্যও চোখে পড়েনি। ব্যাটিং পাওয়া প্লে’র হতাশা ভুলে পাঞ্জাবের বোলারদের দুরন্ত কামব্যাকে লক্ষ্য থেকে ৩২ রান দূরে থাকতেই শেষ হয় দিল্লীর ইনিংস। পাঞ্জাবের হয়ে এ দিন ৩০ রান খরচায় ৪ উইকেট নেন হারপ্রীত ব্রার।

৩১ রানের এ জয়ে এখনও শেষ চারে খেলার সম্ভাবনা জিইয়ে রাখলো পাঞ্জাব কিংস। আর জয়ের পথে হেঁটেও মাঝ পথের ব্যর্থতায় ম্যাচ হেরে শেষ চারে খেলার শেষ সম্ভাবনাটুকুও হারালো দিল্লী ক্যাপিটালস।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link