‘অর্থের ঝনঝনানি’, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) কথা উঠলেই হয়ত মাথায় এই শব্দগুচ্ছই ভেসে আসে। সত্যিই তো কাড়িকাড়ি অর্থের ছড়াছড়ি হয় আইপিএলে। অন্তত নিলাম ঘরে খেলোয়াড়দের পেছনে ফ্রাঞ্চাইজিগুলোর অর্থের দৌড়ই সেই আভাস দেয়।
স্বভাবজাতভাবেই হয়ত মনের গহীনে প্রশ্ন উঁকি দেয়, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের পেছনে খরচ হয়েছে কত? সেই প্রশ্নের উত্তর জানতেও তো উদগ্রীব হয়ে থাকেন অনেকে। চক্ষু চড়কগাছ হবার কথা খরচকৃত অর্থের পরিমাণে। আইপিএলের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। দলটির মালিকানা রয়েছে ভারতের অন্যতম ধনকুবের মুকেশ আম্বানির দখলে।
দলটিকে নিজের আয়ত্ত্ব নিতে সেই ২০০৮ সালে ১১১.৯ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছিলেন আম্বানি। বর্তমান বাজার দর হিসেবে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১২’শ কোটি ৬২ লাখ ৬৫ হাজার ৭৪০ টাকা। অন্তত এই হিসেবটিই আরও একবার প্রমাণ করে যে সত্যিকার অর্থেই আইপিএলে টাকা ওড়ে।
স্বাভাবিকভাবেই বাণিজ্যিক কথা চিন্তা করে প্রতিটা প্রতিষ্ঠান মুম্বাইয়ের ফ্রাঞ্চাইজি নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। তাইতো এত বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রির অধিনস্ত ইন্ডিয়াউইন স্পোর্টস প্রতিষ্ঠানকে।
এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের সুফলতাও বয়ে নিয়েছে দলটি। আইপিএলে সর্বোচ্চ বার চ্যাম্পিয়নের খেতাব জিতেছে ফ্রাঞ্চাইজিটি। তাছাড়া চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টও দু’বার জিতেছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। শিরোপা জয়ের দিক থেকে বেশ এগিয়ে দলটি।
তাছাড়া ব্যান্ড ভ্যালুর দিক থেকেও দলটি ছাপিয়ে গেছে আইপিএলের অন্যসব দলকে। প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলারের ব্র্যান্ড ভ্যালু অর্জন করে ফেলেছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। ২০২০ সালে ব্র্যান্ড ভ্যালু অর্জনের দিক থেকে দলটি আইপিএলের বাকি দলগুলোকে পেছনে ফেলেছে, তেমনটাই জানিয়েছে ব্র্যান্ড ফাইন্যান্স নামক একটি প্রতিষ্ঠান।
তাছাড়া কোভিড-১৯ চলাকালীন সময়েও ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের আসর বসেছিল। আইপিএলের ১৩ তম আসরে কেবল একটি মাত্র দল হিসেবে ব্র্যান্ড ভ্যালুর গ্রাফটা উপরের দিকেই ছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের। সে সময়ে প্রায় ৭.১ শতাংশ মূল্য বেড়েছিল ফ্রাঞ্চাইজিটির।
এমন সফলতার পর গোটা বিশ্বের বিভিন্ন ফ্রাঞ্চাইজি ভিত্তিক টুর্নামেন্টের দিকে অগ্রসর হচ্ছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। বিস্তৃতি লাভের এই সুযোগ হাতছাড়া করতে নিশ্চয়ই চাইবে না ফ্রাঞ্চাইজিটি। আখেরে অর্থই তো দিনশেষে প্রশান্তি জোগায়।
তবে এবারের আইপিএলে বেশ ধুঁকতে হয়েছে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসকে। বেশ কষ্টেই প্লে-অফের টিকিট কেটেছে দলটি। কিন্তু পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন দলটি নিশ্চয়ই কষ্ট বিফলে যেতে দেবে না। ফাইনালে দুই নবাগত গুজরাট টাইটান্স ও লখনৌ সুপার জায়ান্টসকে পেছনে ফেলে, আবারও ক্ল্যাসিক মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও চেন্নাই সুপার কিংস লড়াইটা নিশ্চয়ই দেখতে চাইবে আইপিএল ভক্তরা। পুরোটা সময়ের হাতেই তোলা থাকল।
আম্বানিরা পাকা ব্যবসায়ী। তিনি ব্যবসা বুঝতে ভুল করেননি সে সময়। প্রতি বছরই মুম্বাইয়ের ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়ছে। এখন মুম্বাইয়ের ব্র্যান্ড ভ্যালু ১.৩ বিলিয়ন ডলার। মানে ভারতীয় মূল্যমানে ১০ হাজার কোটি রুপিরও বেশি।