মহিন্দর অমরনাথ থেকে চান্দিকা হাতুরুসিংহে। ১৯৯৪-২০২৩, এই সময়ে বাংলাদেশ ওয়ানডে দলে হেড কোচের দায়িত্ব সামলিয়েছেন ১৭ জন। চান্দিকা হাতুরুসিংহেই একমাত্র কোচ, যিনি দুইবার কাজ করছেন এদেশের ক্রিকেটে। এখন প্রশ্ন হাতুরুসিংহে কোচ হিসেবে বাকিদের তুলনায় কতটা সফল?
হাতুরুসিংহে প্রথম মেয়াদে বাংলাদেশে এসেছিল ২০১৫ সালে। সেবার ওয়ানডে বিশ্বকাপে টাইগারদের পারফরম্যান্স বাঁধিয়ে রাখার মতই। কয়েক বল দেখেই জাতীয় দলের জন্য নির্বাচন করেছিলেন মুস্তাফিজুর রহমানকে। দেশ থেকে আইপিএল ঘুরে ফিজ হয়েছিলেন কাটার মাস্টার।
হাতুরুর সময়ে ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন ট্রফিতেও স্মরণকালের সেরা পারফরম্যান্স করেছিল বাংলাদেশ। এরপর টাইগারদের দায়িত্ব ছেড়ে ফিরেছিলেন নিজ দেশ শ্রীলঙ্কায়। ঐ মেয়াদে ভারত,দক্ষিণ আফ্রিকা,পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ।
হাতুরুর অধীনে বাংলাদেশের এমন পারফরম্যান্সে বলা যেতে পারে সফল চান্দিকা। এখন আলোচনা দ্বিতীয় মেয়াদে কেমন করছেন তিনি?
হাতুরুর দ্বিতীয় মেয়াদে প্রথম প্রতিপক্ষ ছিল ইংল্যান্ড। ঘরের মাঠে সেই সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে এমন হার নিয়ে হয়েছিল সমালোচনা। তবে সমালোচনা শেষ হতে না হতেই টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছে টাইগার শিবির।
ইংল্যান্ড সিরিজের পর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টানা দুই সিরিজ। সেই দুই সিরিজেও সফলতার চওড়া হাসি ছিল তামিম-সাকিবদের মুখে।
ডাটার বিচারে হাতুরুসিংহে সফল। পরিকল্পনায় এই মাস্টার মাইন্ড কেমন?
হাতুরুকে আবারও নিয়ে এসেছে বিসিবি। টাইগার কোচের পরিকল্পনায় বিসিবি অন্তত খুশি। কোন খেলোয়াড় দল থেকে বাদ পড়লে তাকে জানানো হচ্ছে স্পষ্ট কারণ। একই সাথে মিরপুর নির্ভর ক্রিকেট কমাতেও নিশ্চয়ই ছক সাজিয়েছেন তিনি।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ সিরিজ খেলেছিল ইংল্যান্ডে। এই সিরিজের আগে সিলেটে ক্যাম্প করেছিল বাংলাদেশ। যার সুফল মিলেছিল প্রতিপক্ষের মাঠে। বিসিবিকে রাজি করে এই ক্যাম্পের ব্যবস্থা করেছিলেন হাতুরু।
হাতুরু কঠোর হলেও রয়েছে সুনাম। অনেকেই আবার এটিকে দেখেন ভিন্নভাবে। তবে বিসিবি যে তার ক্রিকেটীয় গুণে নতুন করেই মুগ্ধ হয়েছে, তা স্পষ্ট আকরাম খানের কথায়।
তিনি বলেন, ‘ওর (হাতুরুসিংহে) ক্রিকেটীয় জ্ঞান তো আছেই, এর বাইরে যে কার্যক্রমগুলো আছে, সেটা কিন্তু অন্য কোচদের থেকে আমরা পাই না। সেজন্যই আমরা ওর সঙ্গে পারফরম্যান্সটা ভালো করি।’
ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সের পাশাপাশি মানসিক দিকটাও দেখছেন হাথুরু। ক্রিকেটারদের মানসিক শক্তি বাড়াতে সঙ্গী করেছেন মাইন্ড ট্রেনার। আধুনিক ক্রিকেটে শুধুমাত্র অনুশীলন দিয়ে সফলতা পাবেনা দল, এই বিষয় বুঝেছেন টাইগার ওস্তাদ।
আর শুধু মেধাই নয়, হাতুরুসিংহে হলেন বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টের অন্যতম কর্মঠ মানুষ। এইতো গেল তিন জুন দেশে ফিরে পরদিন সকালেই তিনি চলে আসলেন মাঠে। দল ঘোষণা আটকে ছিল। নির্বাচকদের সাথে বসলেন। এরপরই ঘোষণা করা হয় বাংলাদেশের টেস্ট দল। পরিশ্রম দিয়েও বাকিদের জন্য অনুকরণীয় হতেই পারেন হাতুরুসিংহে