আগেও টেস্ট অধিনায়কত্ব করেছেন লিটন দাস! কবে করেছেন, খুঁজতে যাবেন না। আসলে, সাকিব আল হাসান ফিল্ডিংয়ের সময় বাইরে গেলে প্রটোকল অনুযায়ী অধিনায়কত্বটা লিটনই করেন। তবে, সহকারী অধিনায়ক হিসেবে সেই কাজটা হল ‘ঠ্যাকায় কাজ চালানো’র মত বিষয়।
তবে, এখন তো আর ঠ্যাকায় কাজ চালানোর কাজ নয়। রীতিমত পুরো ম্যাচের দায়িত্বে। কারণ, সাকিব আঙুলের ইনজুরি নিয়ে মাঠের বাইরে। তাই, মাঠ ও মাঠের বাইরের রণকৌশল সামলানোর কাজটা এখন পুরোই লিটন দাসের।
অধিনায়ক হিসেবে প্রথম সংবাদ সম্মেলনে এসে খানিকটা দার্শনিকই বনে গেলেন যেন লিটন। বললেন, ‘আপনি যদি ব্যর্থ না হন, তাহলে সফল হতে পারবেন না। ব্যর্থদের আমি সবসময় স্বাগত জানাই।’
ব্যর্থতাকে আলিঙ্গন করার ব্যাপারটা লিটনের চেয়ে ভাল আর কেই বা জানে। কারণ, তিনিই তো অফফর্মের কারণে বড় একটা সময় ছিলেন সাধারণ মানুষের সমালোচনার পাত্র। ছিলেন স্যোশাল মিডিয়ার ট্রলের বিষয়বস্তু।
সেই সময়টা আর নেই। এখন ফরম্যাট যাই হোক না কেন, লিটন বাংলাদেশের সেরা পারফরমারদের একজন। অধিনায়ক হিসেবে তিনি দেশের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছেন খোদ শক্তিশালী ভারতের মত দলের বিপক্ষে।
তবে, টেস্ট মানেই তো পরীক্ষা। এবার সেই পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে লিটন দাসকে। সিলেবাসটা আবার পরীক্ষার আগে দিয়ে পাল্টে গেছে। আফগানিস্তান দল এসেছে লেগ স্পিনার রশিদ খানকে ছাড়াই। আর এই গ্রেট কি করতে পারেন নিজের দিনে – তা তো সবারই জানা।
লিটন অবশ্য তাতেও সিরিয়াসনেসে কোনো ছাড় দিচ্ছেন না। বললেন, ‘রশিদ থাকলেও যেভাবে সিরিয়াসভাবে নিতাম, না থাকায়ও আমরা ওই একই সিরিয়াসনেসে আগাবো। টেস্ট ক্রিকেটে আমাদেরও বিরতি পড়েছে। সর্বশেষ আমরা এপ্রিলে খেলেছি। তারপর একটা সাদা বলের সংস্করণ খেলেছি আমরা। আমার মনে হয় তাদের চেয়ে আমরা একদিক দিয়ে ভালো আমরা অনেক দিন ধরে টেস্ট ক্রিকেট খেলছি।’
আরেকটা সমস্যা হল, আফগান এই দলটার ব্যাপারে বাংলাদেশের ধারণা খুবই কম। লিটন বলেন, ‘অবশ্যই তাদের ক্রিকেটারদের সম্পর্কে আমাদের ধারনা কম। কারণ তারা ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বেশি খেলেছে। এটা দিয়ে টেস্ট ক্রিকেট বিচার করাটাও কঠিন। আমাদের মাথায় একটা পরিকল্পনা আছে, সেটা যদি আমরা এক্সকিউট করতে পারি অবশ্যই ভালো কিছু হবে।’
লিটনের হাত ধরে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ পাল্টে যাবে কি না – সেই প্রশ্নে যাওয়ার আগে লিটনই বলে দিলেন যে বাংলাদেশের টেস্ট অ্যাপ্রোচ এখন আগের চেয়ে পরিণত। বললেন, ‘আমাদের ম্যাচুরিটি লেভেলও বেশি কারণ আমরা ক্রিকেটাররা অনেক টেস্ট ক্রিকেট খেলি এখন। তারপরও দিন শেষে আপনি যখন মাঠে ভালো ক্রিকেট খেলবেন না, এক্সিকিউশন করতে পারবেন না তখন কিন্তু এটা নেতিবাচকভাবে কাজ করবে।’
দেখা যাক, এবার বাংলাদেশ আদৌ পাল্টে গেছে কি না। তবে, এটা ঠিক ফর্মের দিক থেকে লিটনের পাল্টালে চলবে না। বরং, অধিনায়ক হিসেবে বাড়তি একটু দায়িত্ব নিতে হবে।