বিশ্বকাপের ঠিক আর মাত্র ১০০ কি ৯৯ দিন বাকি। সবাই যেন অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিল সময়সূচির। অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত সময়সূচি প্রকাশ করেছে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। আগামী ৫ অক্টোবর ভারতের আহমেদাবাদে নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে গড়াবে প্রথম ম্যাচ। সেই ম্যাচে মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড।
শেষ আসরের ফাইনাল খেলেছিল দুই দল। সেবার ব্ল্যাকক্যাপসদের বিশ্বজয়ের স্বপ্নে আঘাত হেনেছিল থ্রি লায়ন্সরা। তবে একটা মজার তথ্য আছে। ১৯৯৬ সালে এই ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ দিয়েই শুরু হয়েছিল বিশ্বকাপ। সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিতভাবে শ্রীলঙ্কা।
ধারণা করা হয়, সে আসরে গ্রুপ পর্বে সবগুলো ম্যাচ অনুষ্ঠিত হলে, কোনভাবেই শ্রীলঙ্কা প্রথম রাউন্ডের গণ্ডি পার করতে পারত না। তাছাড়া বিশ্বজয়ের আলোচনায় কখনোই বিবেচনায় ছিল না লংকানরা। তবে সেটাই প্রথমবার নয়। এর আগে ১৯৮৩ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচটি হয়েছিল ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে। সেবারও বিস্মিত হয়েছিল গোটা বিশ্ব।
বেশ অপ্রস্তুত অবস্থায়ই ইংল্যান্ড হাজির হয়েছিল ভারত। কস্মিনকালেও কেউ ভাবেনি চ্যাম্পিয়ন হিসেবে ভারতের নাম। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে সেবার প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল ভারত। নিতান্তই কাকতালীয় বলে চালিয়ে দেওয়া যায়। এবারে তেমন কিছু ঘটবে না বলেও হয়ত মত দেবেন অনেকে। তবে নিখাদ বিস্ময়ের স্রোতে গা ভাসাতে কে না চায়।
এবারের বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব কিন্তু কম বিস্ময়ের জন্ম দিচ্ছে না। এই যে যেমন জিম্বাবুয়ে হারিয়ে দিচ্ছে দুই বারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। ৩৭৪ রান করেও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচ হেরে যাচ্ছে ক্যারিবিয়রা। ম্যাচ গড়াচ্ছে সুপার ওভারে। সেখানে অভিজ্ঞ জেসন হোল্ডার রান বিলিয়ে দিচ্ছেন দেদারছে। কতশত চমক তো ইতোমধ্যেই বিশ্বকাপ দেখিয়ে ফেলছে।
মূল পর্বেও নিশ্চয়ই বিস্ময় আর বিনোদনের কমতি হবে না কোন। দশ দলের বিশ্বকাপের আসরে এবার শুরু থেকেই হবে লড়াই। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা চার দল নিয়েই হবে সেমিফাইনাল। সবারই প্রথম লক্ষ্য নিশ্চয়ই সেই পথটুকু পাড়ি দেওয়া। বাছাই পর্ব পার করে আসা দলগুলো যেমন চাইবে সেই ম্যাচগুলো জিততে, তেমনি সেরা আটে থেকে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করা দলগুলোও একইভাবে চাইবে নিজেদেরকে শীর্ষ চারে দেখতে।
তবে যদি খানিকটা কাকতালীয় ঘটনার মৃদু আগুনে খানিকটা বাতাস কিন্তু চাইলেই দেওয়া যায়। একেবারেই বিশ্বকাপ না জেতা দলের সংখ্যা কম নয়। সেরা আটে থাকা দলগুলোর মধ্যে চারটি দল এখন অবধি বিশ্বকাপ জিততে পারেনি। সেখানে একেবারের তরুণ দল আফগানিস্তান যেমন রয়েছে, তেমনি দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডের সাথে বাংলাদেশেরও অবস্থান।
বাছাইপর্ব থেকে নিশ্চিতরূপেই বিশ্বকাপজয়ী একটি বা দু’টি দল খেলবে মূল পর্বে। তবে যদি একটি দল না সুযোগ পায়, তাহলে ধরে নেওয়া যায়, পাঁচটি দল রয়েছে বিশ্বকাপ ছাড়া। চমক কি হবে তবে? হলেও হতে পারে। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা নিউজিল্যান্ডকে প্রায় প্রতিটা আসরেই চ্যাম্পিয়ন ফাইটার হিসেবেই গণ্য করা হয়। সেদিক থেকে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান বিশ্ব জয়ের আলোচনার বাইরে থাকছে এবারও।
বাছাই থেকে আরও একটি দল যুক্ত হতে পারে এই তালিকায়। পাঁচটি বিশ্বকাপ না জেতা দলের মধ্যে একটি দল হয়ত এবার চমকে দেবে গোটা বিশ্বকে। বাংলাদেশি ক্রিকেট সমর্থকদের মনে নিশ্চয়ই উঁকি দিচ্ছে বিশ্বজয়ের স্বাদ। তবে তেমনটা তামিম-সাকিবরা করতে পারবেন কি-না সেটা নিশ্চয়ই সময়ই বলে দেবে।