বাংলাদেশ সফরে আসবে নেদারল্যান্ডস?

বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব যখন শুরু হয়েছিল তখন সবচেয়ে বেশি বাজি কোন দলের উপর ছিল? শ্রীলঙ্কা আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ, কেউ কেউ হয়তো জিম্বাবুয়ের নাম বলতে পারেন।

এই তিন দলের বাইরে বড় জোর স্কটল্যান্ডের কিঞ্চিৎ আশা ছিল। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ের মত দলকে পিছনে ফেলে ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিয়ে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে নেদারল্যান্ডস।

কাউন্টি ক্লাবের সাথে চুক্তিবদ্ধ থাকায় বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারকে স্কোয়াডে ডাকতে পারেনি নেদারল্যান্ডস। ইনজুরির কারণেও ছিটকে গিয়েছেন আরো কয়েকজন।

সব মিলিয়ে তাই খর্ব শক্তির দল নিয়েই বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়ার দ্বৈরথে নেমেছিল ডাচরা। কিন্তু লড়াইয়ে ছাড় দেয়নি তাঁরা, শেষ পর্যন্ত তাই বিজয়ের হাসি হেসেছে দলটি।

বিশ্বকাপে অংশ নিতে পারলেও অবশ্য প্রস্তুতি হিসেবে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছে না নেদারল্যান্ডস। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের সহযোগী দলগুলো ম্যাচ কম পাওয়া নিয়ে কথা বলেছিলেন ডাচ কোচ রায়ান কুক। সে সময় তাঁর কণ্ঠে ঝরেছিল অভিমানের সুর।

রায়ান কুক বলেন, ‘আগামী কয়েক মাস আমাদের কোন ম্যাচ নেই। তাই ছেলেরা বাড়ি যাবে, একটু বিশ্রাম নেবে। এরপর আমরা অন্য দলগুলোর সাথে সিরিজ আয়োজন করার চেষ্টা করবো।’

তিনি আরো যোগ করেন, ‘এমন কয়েকটি দল রয়েছে যাদের আগামী কয়েক মাসে খুব বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচ নেই। আমি আমার চেষ্টা চালাচ্ছি, যারা আমাদের সাথে খেলতে চায় তাদের জন্য এটি একটি আমন্ত্রণ। আমাদের ছেলেরা এর আগে ভারতীয় উপমহাদেশে যায়নি। তাই উপমহাদেশে কিছু ম্যাচ পাওয়া আমাদের জন্য ভালো হবে।’

বাছাই পর্বের ফাইনাল শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলার সময় বড় দলগুলোকে নিজেদের সাথে খেলার আহ্বান জানিয়েছেন। বিশেষ করে যাদের সূচিতে ফাঁকা সময় রয়েছে তারা ইচ্ছে করলে ডাচদের বিপক্ষে নিজেদের যাচাই করে নিতে পারে।

এমন সুযোগ লুফে নিতে পারে বাংলাদেশও; জুলাইয়ের ১৮ তারিখে আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ টি-টোয়েন্টি খেলার পর এক মাসের বেশি খেলার বাইরে থাকবে বাংলাদেশ। এছাড়া এখনো বিশ্বকাপ দল সাজাতে বেশকিছু খেলোয়াড়কে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা বাকি।

তাই তো ওপেনার, সাত নম্বর ব্যাটার, পেস বোলিং অলরাউন্ডারের মত পজিশনে একাধিক ক্রিকেটারকে বাজিয়ে দেখা যেতে পারে ডাচদের বিপক্ষে। যদি নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজ আয়োজন করা হয়ও, সাকিব, মুশফিকের মত মূল একাদশের বেশ কয়েক জনকে বিশ্রাম দেয়া উচিত।

তা না হলে সিরিজ আয়োজন করার আসল লক্ষ্যই অপূর্ণ থাকবে। সেক্ষেত্রে সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেন, শামীম হোসেন, এনামুল হক, নুরুল হাসান সোহান এর মত খেলোয়াড়দের দলে রাখা যেতে পারে।

এসব এখনো শুধুই ভাবনার বিষয়, আপাতত তাই নেদারল্যান্ডসের দৃষ্টি বিশ্বকাপের দিকেই। ভারত, ইংল্যান্ডের মত দলের বিপক্ষে খেলা তাদের অভিজ্ঞতার পাশাপাশি ব্র্যান্ড ভ্যালু বৃদ্ধি করবে বলে মনে করেন রায়ান কুক। ফলে জাতীয় দল আর্থিকভাবে লাভবান হবে বলে আশাবাদী তিনি।

ফুটবলের মত সাম্যতা ক্রিকেটে নেই, আইসিসির চোখে ক্রিকেট যতটা না খেলা তারচেয়ে বেশি ব্যবসায়। তাই তো অধিক মুনাফার জন্য বড় দলগুলোর প্রতি বিশেষ মনোযোগী প্রতিষ্ঠানটি, অন্যদিকে অবহেলা দেখানো হয় নেদারল্যান্ডসের মত ছোটদলগুলোর প্রতি।

তাই তো বিশ্বকাপ খেলা পর্যন্ত কোন সিরিজ রাখা হয়নি দলটির জন্য। এখন দেখার বিষয়, বাংলাদেশ তাঁদের পরোক্ষ আমন্ত্রণ গ্রহণ করে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি করতে পারে কি না।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link