২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ – পাকিস্তানের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি ভারত। আরো স্পষ্ট করে বললে এক পেসারের তোপের মুখে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছিল ভারতের টপ অর্ডার। একই বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল, ম্যাথু ওয়েড টানা তিন ছয় হাঁকিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দিয়েছেন পাকিস্তানকে। উপরের ঘটনা দুইটি ভিন্ন হলেও মূল চরিত্র একজনই, তিনি পাকিস্তানের শাহীন শাহ আফ্রিদি।
এই তরুণের সাথে ঘটা দুইটি মুহূর্তের কোনটি আপনি বেশি মনে রাখবেন সেটা আপনার ব্যক্তিগত ইচ্ছে। তবে এটা মানতেই হবে যে সময়ের সবচেয়ে সেরা পেসারের তালিকায় তিনি থাকবেন উপরের দিকে; এই প্রজন্মের ব্যাটারদের কাছে নতুন বলে এক আতঙ্ক তিনি। কেন তিনি সেরা, কেন তাঁকে নিয়ে এত ভয় – এমন সব প্রশ্নের উত্তর আরো একবার দিয়েছেন শাহীন শাহ। বল হাতে উত্তাপ ছড়িয়েছেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে।
গলে স্টেডিয়ামে সাদা পোশাকে আভিজাত্যের লড়াইয়ে নেমেছিল পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা। আর এই ম্যাচের প্রথম থেকেই শাহীন শাহ আফ্রিদি হয়ে উঠেছেন উইকেট শিকারি। নিশান মাধুশাঙ্কাকে দিয়ে শুরু, এরপর একে একে ফিরিয়েছেন অভিজ্ঞ কুশল মেন্ডিস এবং অধিনায়ক দ্বিমুথ করুণারত্নেকে। তিনজনকেই এই বাম-হাতি বাধ্য করেছেন স্ট্যাম্পের পিছনে ক্যাচ দিতে।
তিন উইকেট পাওয়ার ম্যাচে রোমাঞ্চকর এক মাইলফলকও ছুঁয়েছেন কিংবদন্তি অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদির জামাতা শাহীন শাহ। নিশান মাধুশাঙ্কাকে ফিরিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে উইকেটের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন তিনি। শাহীনের আগে মাত্র আঠারো জন পাকিস্তানি এমন কীর্তি গড়তে পেরেছিলেন। বর্তমানে যখন সবার আগ্রহ ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের দিকে তখন এমন অর্জন নিশ্চয়ই তাঁকে আরো নিবেদন নিয়ে লাল বলে বোলিং করতে অনুপ্রাণিত করবে।
অবশ্য উইকেট সংখ্যা ৯৯ থেকে ১০০তে আনার জন্য শাহীন শাহ আফ্রিদিকে অপেক্ষা করতে হয়েছে লম্বা একটা সময়। না, তিনি উইকেট খরায় ছিলেন এমন না। মূলত ইনজুরির কারণে এক বছরের বেশি সময় ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণে খেলতেই পারেননি তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই টেস্ট ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন ঘটেছে শাহীনের, আর প্রত্যাবর্তনে শততম উইকেট তুলে নিয়ে আরো বিশেষ করে রাখলেন এই টেস্ট ম্যাচকে।
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে লাল বলের খেলা নিয়ে নিজের আগ্রহের কথা জানান শাহীন শাহ আফ্রিদি। তিনি বলেন, “ এক বছর পর পাকিস্তান টেস্ট দলে ফিরতে পেরে আমি খুবই উচ্ছ্বসিত। আমি টেস্ট ক্রিকেটকে খুব মিস করেছি এবং এই ফরম্যাট থেকে দূরে থাকা আমার জন্য কঠিন ছিল। আমি একটি স্মরণীয় প্রত্যাবর্তন করতে চাই।” নিজেকে দেয়া সেই কথা রাখতে পেরেছেন এই এক্সপ্রেস বোলার।
অবশ্য টেস্টের পাশাপাশি ওয়ানডেতে ইনফর্ম শাহীন শাহ আফ্রিদিকে দেখতে চায় ভক্ত-সমর্থকেরা। কেননা আসন্ন বিশ্বকাপ এবং এশিয়া কাপে পাকিস্তানের স্বপ্ন পূরণে বড় দায়িত্ব নিতে হবে তাঁকেই।