আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা ফেলেছেন, খুব বেশিদিন হয়নি। চলতি বছরে অভিষেক। এরপর থেকেই ধারাবাহিকতার গল্প লিখে চলেছেন তাওহীদ হৃদয়। ব্যাট হাতে সামর্থ্যের ছাপ রাখছেন প্রতি ম্যাচেই।
তার প্রামাণ্য দৃশ্য মিলেছে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজেও। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে আফগানদের দিকে হেলে পড়া ম্যাচটা বাংলাদেশের দিকে টেনে এনেছিলেন এই হৃদয়ই। ক্যারিয়ারের শুরুতেই এত আশা জাগানিয়া পারফর্ম্যান্স। এর অন্তরালে আছে কি কোনো রহস্য? এবার স্বয়ং হৃদয়ই সেটা উন্মোচন করলেন।
আফগানিস্তান সিরিজে সফল হওয়া এ ব্যাটার জানালেন, প্রতিপক্ষ কে তা নিয়ে মাথা ঘামাতে পছন্দ করেন না তিনি। তিনি আসলে নিজের খেলাটা খেলতে চান সব সময়। সেটা হোক ডমেস্টিক কিংবা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট।
২০২০ অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলটার অন্যতম সদস্য ছিলেন তাওহীদ হৃদয়। তাঁর মতে, বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ধরণ বেশ আলাদা। এখানে তুলনামূলক চাপ থাকে বেশি।
তারপরও এত চাপ সামলে কিভাবে এত বড় শট খেলার আত্মবিশ্বাস পান হৃদয়। হৃদয়ের ভাষ্যমতে, এর রহস্য তিনি নিজেও জানেন না। এমনকি যে ফ্লিক শটে তিনি দারুণ সক্ষমতার জানান দিয়েছেন, সেই ফ্লিক শটও নাকি তাঁর সবচেয়ে পছন্দের শট না! তিনি খেলতে চান সব শট।
আফগানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতলেও ওয়ানডে সিরিজে ভরাডুবি হয়েছিল বাংলাদেশের। দলগত ব্যর্থতার সে সিরিজেও একটি ফিফটি হাঁকিয়েছিলেন হৃদয়। তবে সেই ইনিংসে গোণাতেই ধরছেন না এ ব্যাটার।
তাঁর ভাষ্যমতে, ‘ফিফটি করেও দল হারলে সেই ফিফটির আসলে মূল্য নেই। ব্যক্তিগত ইনিংসের চেয়ে জরুরি বাংলাদেশের জয়।’
নিজের ব্যাটিং নিয়ে হৃদয়ের ভাবনা বিস্তর। যতটা সম্ভব চাপ না নিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় ব্যাট করতেই মনোযোগ বেশি তাঁর।
বললেন, ‘ব্যাটিং এমন একটা জায়গা যেখানে কুল থাকা বেশি দরকার। কারণ ওখানে প্রত্যেকটা বল নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ। বোলাররা কামব্যাক করার সুযোগ পায়, কিন্তু ব্যাটসম্যানরা একটা বল ভুল করলে সেখান থেকে কামব্যাক করার সুযোগ থাকে না। একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে আমি অনুভব করি আমি সবসময় চাপমুক্ত থাকবো। আমার যেরকম খেলা, যে পরিস্থিতি তখন সে পরিস্থিতি অনুসারে ভূমিকা রাখতে চাই।’
সামনে বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষা করছে বড় দুটি টুর্নামেন্ট। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মাটিতে এশিয়া কাপের পর ভারতে অনুষ্ঠিত হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। এ দুই বড় আসর নিয়ে অবশ্য এখনই পরিকল্পনা সাজাতে নারাজ হৃদয়। তবে সুযোগ পেলে নিজের সেরাটা দেখিয়ে দেওয়ার সুর ভেসেছে তাঁর কণ্ঠে।
এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপ নিয়ে এখনো চিন্তা করিনি। কারণ আমি লম্বা সময় নিয়ে পরিকল্পনা করতে পারি না। সবসময় বর্তমানে থাকতে ভালো লাগে। যদি এশিয়া কাপ বা বিশ্বকাপে সুযোগ পাই আমি কেন যেকোনো ক্রিকেটারই চাইবে নিজের সেরাটা দিয়ে দলে অবদান রাখতে। এটাই আমার লক্ষ্য। সুযোগ পেলে সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করবো।’
তাওহীদ হৃদয় জাতীয় দলের হয়ে এখন পর্যন্ত খেলেছেন ৯ ওয়ানডে ও ৮ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। ৪৮.২৮ গড়ে ৩ ফিফটিতে ওয়ানডেতে রান করেছেন ৩৩৮। এছাড়া ২৬ গড়ে টি-টোয়েন্টিতে তিনি রান করেছেন ১৫৬। এবার এই ফর্মটা এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ পর্যন্ত থাকলে লাভটা হবে বাংলাদেশেরই।