২০১১ সালের সেই গোলখানা এখনও চোখে ভাসে, যেটা পুসকাস পুরস্কার পেয়েছিল। ছেলেটা জেনারেশনাল ট্যালেন্ট ছিল। রোনালদো, রিভালদোরা সঙ্গে রোনালদিনহোকে পেয়েছিল। রোনালদিনহো পেয়েছিল কাকাকে। কাকা কিছুদিনের জন্য অ্যাড্রিয়ানো, রবিনহো।
নেইমার সেভাবে পাশে পায়নি কাউকেই। একটু অস্কার, একটু ভিনি জুনিয়র। এটুকুই। সবাই বলে বটে ছেলেটা প্যারিস গিয়েছিল টাকার জন্য। আমার কেন জানি না মনে হয়, সেরা হওয়ার অদম্য ইচ্ছা নিয়ে লিগ আঁ খেলতে গেছিল।
কিন্তু, ফরাসি লিগ তো ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের মতো কোয়ালিটিপূর্ণ না, কিন্তু বেশ বেশ রাফ। আর নেয়মার পায়ে বল রাখে, ইউরোপের ভাষায় যাকে বলে শো বোটিং। আসলে রোবোটিং-এর থেকে শোবোটিং বোধহয় অনেক ভালো, অন্তত, আমার কাছে।
চোটটা প্রথম বছর থেকেই লাগা শুরু হল। মেটাটারস্যাল। সেটা বিশ্বকাপের বছর। প্রতি বছরই চোট লাগে, প্রতি বছরই ফিরে আসে। ২০২০-তে একটা চেষ্টা করেছিল, যার জন্য পিএসজি যাওয়া। কিন্তু হয়নি।
সময় পাল্টাতে থাকে, সবাই পিছন থেকে এসে নেইমারকে ডিঙিয়ে চলে যায়। কিলিয়ান ডি ব্রুইনা। ছেলেটা চেষ্টার শেষ রাখেনি। অপারেশনটাও করালো যাতে একেবারে ফিট হয়ে নামতে পারে। কিন্তু পরের পর চোট আর বার বার ব্যর্থতা কোথায় যেন ভেতর থেকে শেষ করে দিচ্ছিল।
ব্রাজিল দলের কোচ কার্লো অ্যানচেলত্তি রিয়ালে ভিনি আর রড্রিগোকে জোরা স্ট্রাইকারে খেলাচ্ছেন, সঙ্গে বেলিংহাম ১০ নং। জোয়েলিন্টন, ব্রুনোরা উঠে আসছে। সৌদিতে টাকা আছে, এবং সঙ্গে আছে কিছুটা নিশ্চিন্তি। ইউরোপের লা লিগা ছাড়া বাকি লিগগুলো ভঙ্গুর শরীরকে খুব একটা সুযোগ দেবে না। বার্সা দিতে পারত, কিন্তু তাদেরও টাকাপয়সার সমস্যা।
তাই হয়তো আল হিলালের প্রস্তাবটা ফেরানো গেল না। অলিম্পিকটাও খেলা যাবে। কোপাও, সঙ্গে যদি ২০২৬এর বিশ্বকাপটাও। কে বলতে পারে কিছু একটা হয়ে যাবে না! সামান্য মাটির প্রদীপও তো নিভে যাবার আগে একবার জ্বলে ওঠে।
মেসি, রোনালদো আর এমবাপ্পে, হাল্যান্ডের প্রজন্মের মাঝের মেজানিন ফ্লোরের সেরা প্রতিভা, সেরা টেকনিকাল ফুটবলার। হয়তো ভাবিনি বলেই খারাপ লাগছে! ফেলে আসা পৃথিবীর শেষ ওজির এ আলা, একটা অমোঘ জাদু কি ২০২৬-এ দেখাবে না?
তার আগে অবশ্য কোপাটা আছে। ছন্নছাড়া ব্রাজিলকে অনেকটা গুছিয়ে নেওয়া আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে আউটসাইড চান্স দিতে একটা ঝলক হয়তো দেখা যেতেই পারে, ঠিক যেভাবে অতিরিক্ত সময়ে ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণ ভেঙে ফেলেছিলেন।
রোবটরা আটকে গেলে শো বোটের কথাই মনে পড়ে কিন্তু! অ্যাডিউ নেয়! ইউরোপ তোমার জায়গা ছিল না বা নিলে না, কিন্তু সামনে এখনও নিখিল বিশ্ব পড়ে আছে।