শ্রীলঙ্কার সাথে অসহায় আত্মসমর্পণের পর শঙ্কার মেঘ জমা হয়েছিল বাংলাদেশের আকাশে। পর পর দুইবার এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ার লজ্জা অপেক্ষা করছিল বাংলাদেশের জন্য, চারদিক থেকে ধেয়ে আসা সমালোচনা আর বিদ্রুপের স্রোতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল সবার। এরপরই যেন হিংস্র উঠেছে টাইগাররা, আফগানিস্তানকে উড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি উড়িয়ে দিয়েছে বাদ পড়ার শঙ্কাও।
সুপার ফোর নিশ্চিত করার খুশিতে পুরো বাংলাদেশ যখন আনন্দে ভাসছে তখন আরেক স্বস্তির খবর পাওয়া গিয়েছে – দলের সাথে যোগ দিতে যাচ্ছেন লিটন দাস। টিম হোটেলে পৌঁছাতে আজ রাতেই পাকিস্তানের বিমান ধরবেন তিনি। আনুমানিক রাত নয়টায় লাহোরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন এই তারকা ওপেনার।
এশিয়া কাপের স্কোয়াডে থাকলেও জ্বরের কারণে সাকিব, মুশফিকদের সঙ্গে শ্রীলঙ্কায় যেতে পারেননি লিটন দাস। সুস্থ হয়ে না ওঠায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচও খেলতে পারেননি তিনি, এমনকি গত ৩০শে আগস্ট বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) আনুষ্ঠানিকভাবে টুর্নামেন্ট থেকে এই ডানহাতির ছিটকে যাওয়ার তথ্য জানিয়েছিল। সেই সাথে তাঁর পরিবর্তে দেশ থেকে এনামুল হক বিজয়কে উড়িয়ে এনেছিল টিম ম্যানেজম্যান্ট।
কিন্তু আফগানিস্তানের সঙ্গে জিতে পরের রাউন্ড নিশ্চিত করায় এশিয়া কাপে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন লিটন দাস। অবশ্য বাংলাদেশ সুপার ফোরে জায়গা পাওয়ার আগে লিটন ফিট হয়ে উঠেছিলেন, আর তাই তো এই ব্যাটারের সার্ভিস মিস করতে চায়নি টিম টাইগার্স। ভারত, পাকিস্তানের মত শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে লিটনের উপস্থিতি নিশ্চিতভাবেই টপ অর্ডারকে সুসংহত করবে।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে চমক দেখিয়ে নাইম শেখের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নামানো হয়েছিল মেহেদি হাসান মিরাজকে। সেই সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে সঠিকও প্রমাণিত হয়েছে; পাওয়ার প্লেতে আফগান জুজু কাটিয়ে ৬০ রান তুলত পেরেছে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি। এছাড়া দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে ম্যাচসেরার পুরষ্কার নিজের করে নিয়েছেন মিরাজ।
কিন্তু এতে লিটনের গুরুত্ব কমে যায়নি; বিশেষ করে ভারত, পাকিস্তানের বিশ্বমানের পেসারদের সামনে নাইম-মিরাজ জুটি সাফল্য পাবে কি না সেটা ভাবনার বিষয়। কেননা এক্সপ্রেস পেসের বিপক্ষে দুর্বলতা আছে মিরাজের, আবার তরুণ নাইম শেখও ফুটওয়ার্কের দিক দিয়ে পিছনে।
তাই লিটন দাসকে একাদশে দেখার সম্ভাবনা বেশি। তাঁকে সুযোগ দিতে বাদ দেয়া হতে পারে নাইম শেখকে; ২০১৮ এশিয়া কাপের ফাইনালের মতই তখন মিরাজ-লিটন জুটি গড়বেন। আবার আফিফকে বাদ দিয়েও জায়গা করে দেয়া হতে পারে লিটনকে। সেক্ষেত্রে নাইমের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধন করবেন এই ব্যাটার অন্যদিকে মিরাজ ফিরে যাবেন তাঁর চিরাচরিত লোয়ার মিডল অর্ডার পজিশনে।
পরিকল্পনা কেমন হবে সেটা অবশ্য ম্যাচের দিনই বোঝা যাবে। আপাতত লিটন দাস ফিরেছেন এটাই জরুরি খবর; প্রত্যাশিত স্বপ্ন পূরণে এবার লিটনের ব্যাটের দিকে চেয়ে থাকবে পুরো বাংলাদেশ।