সুপার ফোরের তাড়নায় নবীর তড়িৎ ইনিংস

৩৭.১ ওভারের মধ্যে জিততে হবে। পরবর্তী রাউন্ডে কে না জেতে চায়। আফগানিস্তানও চেয়েছে। তবে খুব করে চেয়েছেন সম্ভবত মোহাম্মদ নবী। আপ্রাণ চেষ্টা করেও আর শেষ রক্ষাটা  নিজে হাতে করতে পারেননি তিনি। তবে দলকে বিশ্বাস করতে বাধ্য করেছেন। দলকে পথ দেখিয়েছেন তড়িৎ গতির এক ইনিংস খেলে।

নবী যখন ব্যাট হাতে বাইশ গজে এলেন তখন আফগানিস্তান ১২৪ রানে হারিয়েছে ৪ উইকেট। ১৮.৪ ওভারে। জয়টা হয়ত মিলবে। সেই আশা ছিল। তবে জয় পেলেই তো হবে না। রানরেটের গ্যাড়াকলে আটকে গেলে জিতেও বাদ হয়ে জেতে হবে।

তবে মোহাম্মদ নবী সম্ভবত বিশ্বাস করতে চাইলেন পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়া সম্ভব। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েই যাওয়া সম্ভব। তাইতো তিনি চালালেন তাণ্ডব। মুহূর্তের মধ্যে দ্বীপ দেশের ক্রিকেটারদের মাথায় চিন্তার ভাঁজ। গভীর চিন্তায় নিম্মজিত হয়ে গেল শ্রীলঙ্কার গোটা ডাগআউট। সবাইকে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করলেন মোহাম্মদ নবী।

তার ব্যাটে ভর করেই নির্দিষ্ট ওভারের আগেই জেতার স্বপ্নটা আরও উজ্জ্বল হতে শুরু করে। স্বল্প সময়ের সেই তাণ্ডবে মোহাম্মদ নবী আফগান ক্রিকেট ইতিহাসেও জায়গা করে নেন। দেশটির হয়ে দ্রুততম ওয়ানডে অর্ধশতকের মালিক এখন তিনি। মাত্র ২৪ বলে তুলে নেন ফিফটি।

ঝড়ের শুরুটা করেন তিনি দুনিথ ওয়াল্লেলাগেকে ছক্কা হাকিয়ে। তবে ম্যাচের মোমেন্টাম পরিবর্তন হয় মাথিশা পাথিরানার করা ২৩ তম ওভারে। তরুণ এই বোলারের উপর রীতিমত স্টিমরোলার চালান নবী। ডিপ পয়েন্টের ছক্কা হাকিয়ে শুরু। দু’খানা চারের মারসহ ওই ওভারে আসে ২০ রান।

সেখান থেকেই রানের গ্রাফটা ক্রমেই ওভারপ্রতি বাড়তে শুরু করে। বিদ্যুৎ গতিতে রান আসতে শুরু করে আফগানিস্তানের। সেই পাথিরানাকে এক্সট্রা কাভার দিয়ে চার মেরেই নিজের ফিফটি পূরণ করেন নবী। ৩৭.১ ওভারে জেতাটা তখন আর অসম্ভব মনে হয়নি আফগানদের। পরের ওভারে আরও দু’খানা সুবিশাল ছক্কা। আরও একটু এগিয়ে যাওয়া আফগানিস্তানের।

কিন্তু হুট করেই ছন্দের পতন। শ্রীলঙ্কার ত্রাণকর্তা হয়ে যেন এলেন মাহিশ থিকসানা। ফেরালেন নবীকে। নবীর ২০০ এর বেশি স্ট্রাইকরেটে খেলা ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে। ৩২ বলে ৬৫ রানের এক চোখ ধাঁধানো ইনিংস খেলে তিনি বিদায় নেন। তার এই খুনে ইনিংসে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারির পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন নবী।

৬টি চারের পাশাপাশি ৫টি ছক্কা মেরেছেন ডানহাতি এই অলরাউন্ডার। তার দেখানো পথে হেটেছেন আফগানদের বাকি ব্যাটাররাও। সবাই যতদ্রুত রান তোলা যায়, সেদিকেই দিলেন মনোযোগ। হাসমতউল্লাহ শাহিদী, নাজিবুল্লাহ জাদরান, রশিদ খানরা জয়ের জন্যেই খেললেন। শেষ অবধি যদিও আফগান তরী ভেরেনি বন্দরে। হেরেই বিদায় নিয়েছে আফগানরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link