একেই বুঝি বলে বাইশ গজের চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা। যে অনিশ্চয়তার কোণায় কোণায় রয়েছে রোমাঞ্চ আর হাসি-কান্নার গল্প। সুপার ফোর নিশ্চিত করতে আফগানদের ৩৭.১ ওভারের মাঝেই শ্রীলঙ্কার দেওয়া ২৯২ রানের লক্ষ্য ছুঁতে হতো।
আফগানিস্তান সেই লক্ষ্যের পথেও হেঁটেছিল। কিন্তু সমীকরণ মেলাতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত ম্যাচটাই হাতছাড়া করেছে আফগানরা। অথচ ৩ বল আগেও এশিয়া কাপ থেকে বাদ পড়ার শঙ্কায় পড়েছিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা।অবশ্য আফগানদের এ ম্যাচ হারের দায়টা অনেকাংশে টিম ম্যানেজমেন্টেরও।
৩৮ তম ওভারের প্রথম বলে মুজিব যখন ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন, তখনও কোয়ালিফাই করার সুযোগ ছিল আফগানিস্তানের। পরের বলে ছক্কা কিংবা ৩৭.৪ ওভারের মধ্যে ২৯৫ রানে পৌঁছাতে পারলে আফগানিস্তান উঠে যেত সেরা চারে।
কিন্তু অনফিল্ডে থাকা রশিদ কিংবা ফজল হক ফারুকীর কাছে সেই বার্তাটাই যায়নি। উল্টো এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে শেষ উইকেট হারিয়ে ম্যাচটাই হারতে হয়েছে আফগানিস্তানকে।
এমন শ্বাসরূদ্ধকর ম্যাচ হেরে স্বাভাবিক ভাবেই হতাশ আফগান অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শহিদী। তবে দলগত এমন প্রচেষ্টায় তৃপ্ততা খুঁজে নিচ্ছেন এ অধিনায়ক। ম্যাচশেষে তিনি বলেন, ‘খুবই হতাশ। এভাবে বাদ পড়তে কারোরই ভাল লাগে না। তবে আমরা আমাদের সেরাটা দিয়েছি। আমি আমার দলকে নিয়ে গর্বিত। আমরা শেষ ১ বছরে এই ফরম্যাটে উন্নতি করছি। এখনো অনেক কিছু শেখার আছে। আমরা এই টুর্নামেন্ট থেকে অনেক ইতিবাচক কিছু পেয়েছি। সামনেই বিশ্বকাপ। আমরা এখানে যা ভুল করেছি। তা থেকে শিক্ষা নিয়ে বিশ্বকাপে সেরাটা দিতে মুখিয়ে আছি। গ্যালারি থেকে আমরা দারুণ সমর্থন পেয়েছি। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। তবে তাদেরকে ম্যাচ জয়ের উপহার না দিতে পেরে দুঃখ প্রকাশ করছি।’
টুর্নামেন্ট থেকে লঙ্কানদের বাদ পড়ার শঙ্কা থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেরা চারে পদার্পণ। শ্রীলঙ্কার এমন ঘুরে দাঁড়ানোতে একটা ধন্যবাদ পেতেই পারেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা। ব্রেক থ্রু আনার জন্য ঠিক সময়ে বোলারদের কাজে লাগিয়েছেন। তাতে ফলও মিলেছে। ম্যাচ শেষে এমন জয় থেকে তাই স্বস্তি খুঁজে নিয়েছেন তিনি।
লঙ্কান এ অধিনায়ক বলেন, ‘ম্যাচটা আসলে অনেক কঠিন ছিল। এমন টার্গেট ডিফেন্ড করাটা এতটা সহজ ছিল না। ব্যাটিংয়ের সময় ধনঞ্জয়া আর আমার আউটটা ম্যাচের মোমেন্টাম হারিয়েছে। তারপরও থিকশানা আর ওয়েলালেগা শেষে দারুণ ব্যাটিং করেছে। আর শুরুতে ভিত্তি গড়ে দিয়েছিল মেন্ডিস আর আসালাঙ্কা। বোলিংয়ে কাসুন রাজিথা আমাদের কাজটা সহজ করে দিয়েছিল। নবী দুর্দান্ত একটা ইনিংস খেলেছে। ম্যাচটা তো সে-ই বের করে নিচ্ছিল। তবে শেষমেশ আমরা জিততে পেরেছি। এটাই ভাল লাগা।’
শ্রীলঙ্কার হয়ে ৮৪ বলে ৯২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন কুশাল মেন্ডিস। রান আউটের চক্রে আটকে পড়ে সেঞ্চুরি মিস হলেও ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে তাঁরই হাতে। ম্যাচসেরার পুরস্কার নিতে গিয়ে জানিয়েছেন নিজের প্রতিক্রিয়াও। লঙ্কান এ ব্যাটার জানান, ‘আমরা প্রথম ১০ ওভারে ভাল ব্যাটিং করেছি। আমি আমার সেরাটা দিতে চেয়েছি। তবে আমরা প্রেশারে ছিলাম। এখানে বল করা কঠিন। তারপরও আমাদের বোলাররা সেরাটা দিয়েছে। আমরা ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিং, এই তিন বিভাগে সেরাটা দিয়েছি বলেই জয় নিয়ে মাঠে ছেড়েছি।’