ফর্মটা ভাল যাচ্ছিল না তামিম ইকবালের, সেই সাথে যুক্ত হয়েছিল ফিটনেস ইস্যু আর মাঠের বাইরের নানা বিতর্ক। ক্লান্ত তামিম তখন বেছে নিয়েছিলেন অবসরের সিদ্ধান্ত; কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে সেই সিদ্ধান্ত পাল্টান তিনি। তখনই একটা গুঞ্জন ছিল, বলা হচ্ছিল – তামিমের অবসরে বড় ভূমিকা ছিল কোচ চান্দিকা হাতুুরুসিংহের।
এমনকি, তখন সাকিব আল হাসান অধিনায়ক না থাকার পরও, পরিকল্পনা বিষয়ক আলাপে এই অলরাউন্ডারই বেশি প্রাধান্য পেতেন কোচের। তামিমের ফিটনেস বিষয়ে বোর্ড সভাপতির কাছে নালিশও করেন কোচ। তবে, সরে যান এরপরও।
ফেরার ঘোষণা দেওয়ার পর তামিম এসব ইস্যু নিয়ে কথা বললেও, বলেননি কোচ। তবে তিনি এবার মুখ খুলেছেন। একটি জাতীয় দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি নিজের ভূমিকার কথা অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, ‘কেউই জানত না যে এ রকম কিছু (তামিমের অবসর একটা আসতে যাচ্ছে। আমি তো না-ই, কেউই না। যেটি আমি জানিই না, সেখানে আমার ভূমিকা রাখার সুযোগ কোথায় ?আমি জানি না তারা কোত্থেকে এই খবর পেল। তামিম বললে ওর সঙ্গে বসে জিজ্ঞেস করতে পারি, আমি কখন, কোথায় কী করলাম। এ বিষয়ে আমার মধ্যে কোনো অস্পষ্টতা নেই।’
অবসরের সিদ্ধান্ত তুলে রাখলেও, ফিটনেস ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ে মাঠের বাইরে ছিলেন তামিম। নিউজিল্যান্ড সিরিজ দিয়ে বাইশ গজে ফিরতে যাচ্ছেন এই ওপেনার।
প্রত্যাবর্তনে কেমন করবেন তামিম? – সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই এখন অপেক্ষায় আছে দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। সবার প্রত্যাশা তামিমের ফেরাটা হোক মনে রাখার মত করেই; টপ অর্ডারের দুর্দশার এই সময়ে ইনফর্ম তামিমই পারেন দলকে পথ দেখাতে। বিশ্বের বাঘা বাঘা বোলারদের বিপক্ষে তাঁর ব্যাট জ্বলে উঠলেই ভাল কিছু করা সম্ভব হবে বাংলাদেশের জন্য।
একই রকম প্রত্যাশা কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহেরও। তিনি বলেন, ‘আমি তামিমের কাছ থেকে ওর সেরাটা দেখতে চাই। কারণ আমি জানি, ফর্মে থাকলে সে-ই বাংলাদেশের সেরা ব্যাটার। ইনজুরি ও নানা কারণে ক্রিকেট থেকে অনেকটা সময় দূরে থাকার পর সে নিজেকে কতটা মেলে ধরতে পারছে, তা আমরা আর কয়েক দিনের মধ্যেই জানতে পারব।’
অনেকদিনের বিরতি কাটিয়ে ফিরেই ভাল করাটা নি:সন্দেহে কঠিন কাজ হবে তামিম ইকবালের জন্য। শুধু ভাল করাই নয়, উদ্ভূত সব সমালোচনার জবাব দেয়ার চাপ থাকবে এই বাঁ-হাতির মাথায়।
এসবের পাশাপাশি অবসর ইস্যুতে টিম ম্যানেজম্যান্টের সঙ্গে তামিম ইকবালের যে শীতল সম্পর্ক তৈরি হয়েছে সেটাও ঠিক করতে হবে তাঁকে। কোচ না মানলেও এটা ঠিক যে, দলের সাথে তামিমের একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তামিম নিজেও বলেছেন, তাঁর কোচ বা অধিনায়ক – কারো সাথেই যোগাযোগ হয়নি।
যদিও, তামিম ইকবালের ব্যাপারে সব আপডেট রাখছেন বলেও জানিয়েছেন হেড কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহে। এই ওপেনারের ফিটনেস, শারীরিক অবস্থা সবকিছু মেডিকেল বিভাগ থেকে জেনে নিচ্ছেন তিনি। বোঝাই যাচ্ছে, হাতুরুসিংহের বিশ্বকাপ পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ অংশেই আছেন তামিম।
আপাতত তাই তামিম ইকবালের ফর্ম নিয়েই যত ভাবনা সবার। ওয়ানডে ফরম্যাটে অবসর নিয়েও বেন স্টোকস যেভাবে ফিরে এসেছেন ক্রিকেটের মাঠে, তেমন কোন গল্প তামিম লিখতে পারলে স্বস্তি পাবে পুরো বাংলাদেশ।