এবার আর আক্ষেপ নেই খালেদের

একটু দেরি করেই রঙিন পোশাক গায়ে উঠলো খালেদ আহমেদের। সেই সাথে টেস্ট বোলারের তকমাও যেন গা থেকে নেমে গেল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে অভিষেক ক্যাপ চাপলো তাঁর মাথায়। একেবারেই সাদা-মাটা অভিষেক হলেও হতে পারত। যেমনটা হয়েছিল অভিষেক টেস্ট ম্যাচে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে খালেদ ছিলেন উইকেট শূন্য। এবার অবশ্য আর বিবর্ণ হল না শুরুটা। অভিষেক ওয়ানডেতেই তাঁকে একাদশে রাখার যথার্থতা প্রমাণ করলেন।

দীর্ঘক্ষণ বল করে যাওয়ার পাশাপাশি, একটানা নির্দিষ্ট লাইন আর লেন্থে বল করে যেতে পারেন খালেদ। টেস্ট ক্রিকেট বিবেচনায় আদর্শ বোলিং টেকনিক। তবে তা দিয়ে অবশ্য ওয়ানডে ক্রিকেটে সুযোগ পাওয়াটা বেশ দুষ্করই। তবে নিজেকে যেন বদলে ফেলার চেষ্টা করেছেন খালেদ। সাদা বলের চাহিদাটা একটু দেরিতে হলেও বুঝতে শুরু করেছেন তিনি।

নির্দিষ্ট লাইন আর লেন্থের চর্চার তো বহু আগে থেকেই ছিল তার। এবার সে চর্চার সাথে যুক্ত করে নিয়েছেন গতির তারতম্য। সাম্প্রতিক সময়ে তাকে সাদা বলের জন্যই যেন প্রস্তুত করা হচ্ছিল। টেস্ট ছাড়াও দলের আশেপাশেই অবস্থান করেছেন। এবার তার এলো সুযোগ। তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিব পড়েছেন ইনজুরিতে। সে কারণেই একাদশে সুযোগ মিলেছে তার।

যদিও সাকিবের পরিবর্তে হাসান মাহমুদকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল দলের সাথে। যেহেতু হাসান সহ স্কোয়াডে রয়েছেন তিন পেসার, তাই অবধারিতভাবেই একাদশে সুযোগটা এসে যায় খালেদের। কেননা টিম ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনায় ছিল পাঁচজন বোলার। অভিষেক ম্যাচটা একেবারেই সাদামাটা কাটেনি। আবার তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতও হয়নি।

তবে সুযোগের একটা দাবি অন্তত রেখে গেলেন তিনি। কোটার দশ ওভারই করেছেন তিনি। বাগিয়েছেন ২টি উইকেট। ব্যাক অব লেন্থে বল করেই প্রথম উইকেটটি পান খালেদ। চ্যাড বোয়েসকে তিনি আটকে ফেলেছেন স্কোয়ার লেগ অঞ্চলে। এরপর আবারও তিনি নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং দূর্গে আঘাত হানেন। ভয়ংকর হয়ে ওঠা হেনরি নিকোলাসকে প্যাভিলিয়নে পাঠান তিনি। আগের দিনের মতই এদিন গুরুত্বপূর্ণ এক জুটির অংশ ছিলেন নিকোলাস।

হাফ সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা নিকোলাস জমা পড়েন লিটন দাসের দস্তানায়। সেই খালেদের ব্যাক অফ লেন্থের বলটা আচমকা এক বাউন্সে নিকোলাসকে বিব্রত করে। দ্বিধান্বিত এক শট খেলে তিনি ফিরে যান সাজঘরে। তাতে নিউজিল্যান্ডের ৯৫ রানের জুটি ভাঙে। এরপরে আরও একটি জুড়েছে তার ঝুলিতে। ইশ সোদির উইকেট শিকার করেন তিনি। কট বিহাইন্ডের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেননি প্রথমে। অধিনায়ক লিটন রিভিউ নেন।

তাতে বেশ বড়সড় এডজই ধরা পড়ে। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং ইনিংসের শেষ উইকেটটি শিকার করেন খালেদ। এর ঠিক আগের বলেই অবশ্য ছক্কা হজম করতে হয়েছিল তাকে। তবুও অভিষেক ম্যাচে নিজের ছাপটা ফেলে গেলেন খালেদ আহমেদ। তবে খরুচে ছিলেন তিনি। ৬.৪২ ইকোনমি রেটে রান দিয়েছেন ৬০। যদিও নিজের কোটার সবগুলো বল ডেলিভারি করা হয়নি তার।

তবে টেস্ট অভিষেকের চাইতেও ওয়ানডে অভিষেকটা মনে রাখার মতই হলো খালেদের। অন্তত উইকেট শূন্য থাকার দু:খে পুড়তে হবে না তাকে। এই শুরুকে স্রেফ এখন দীর্ঘায়িত করবার পালা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link