প্রোটিয়া তাণ্ডবে উড়ে গেল লঙ্কানরা

সুনামি, টর্নেডো নাকি সাইক্লোন – দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা যে তান্ডব চালিয়েছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেটাকে আপনি কোন শব্দে প্রকাশ করবেন? কোনটি বেছে নিচ্ছেন তাতে অবশ্য কিছু যায় আসে না; কেননা নাম যাই হোক প্রোটিয়া ঝড়ের, তাতে স্রেফ খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে লঙ্কানরা।

টসে জিতে প্রতিপক্ষকে যখন ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ দিয়েছিলেন দাসুন শানাকা, তখন নিশ্চয়ই জানতেন না কি অপেক্ষা করছে তাঁর দলের জন্য। কিছুক্ষণ পরে ঠিকই বোঝা গিয়েছে আজ নতুন কোন ইতিহাস রচিত হতে যাচ্ছে। ওপেনার ডি ককের সঙ্গে তিনে নামা ভ্যান ডার ডুসেন আক্রমণাত্বক ব্যাটিং শুরু করেন প্রথম থেকেই, ১৮ ওভারের মধ্যেই দলীয় শতক পূর্ণ করেন তাঁরা।

এরপর আরো আগ্রাসী হয়ে ওঠে এই জুটি; প্রায় প্রতিটা ওভারে বাউন্ডারি হাঁকাতে থাকেন দুই প্রোটিয়া তারকা। মাত্র ৮৩ বলেই তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের দেখা পেয়ে যান ডি কক, যদিও পরের বলেই আউট হন তিনি। সেঞ্চুরি করার পর ইনিংস বড় করতে পারেননি ডুসেনও; এই ডানহাতি বিদায় নেন ১০৮ রান করে।

তাতে অবশ্য শাপে বর হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার। মিডল অর্ডারে নামা এইডেন মার্করামের রূদ্র রূপ দেখার সুযোগ হয় ক্রিকেট বিশ্বের। ক্রিজে নেমেই রীতিমতো খুনে মেজাজ ধারণ করেন তিনি, উইকেটের চার পাশে শটের পসরা সাজিয়ে ৪৯ বলেই করেন বিশ্বকাপ ইতিহাসের দ্রুততম হান্ড্রেড।

মার্করাম প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেও মোটেও কমেনি দলটির রান তোলার গতি। হেনরিখ ক্ল্যাসেনের ২০ বলে ৩২ আর ডেভিড মিলারের ২১ বলে ৩৯ রানের ক্যামিওতে ভর করে ৪২৮ রানের রেকর্ড সংগ্রহ পায় ডি ককরা।

দ্বিতীয় ইনিংসে জবাব দেয়ার আসলে কিছুই ছিল না শ্রীলঙ্কার জন্য। তবু কুশল মেন্ডিস চেষ্টা করেছেন কিছুক্ষণ, তাঁর ৪২ বলে ৭৬ রানের ঝড়ো ইনিংসে ম্যাচ জয়ের সম্ভাবনা সৃষ্টি না হলেও হার না মানসিকতা লুকিয়ে ছিল। তবে তিনি আউট হতেই পুরোপুরি শেষ হয়ে যায় এশিয়ান প্রতিনিধিদের জয়ের আশা, বাকি সব ব্যাটারকেই খেলতে হয়েছে পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর লক্ষ্যে।

আর সেই পথে সবচেয়ে সফল চারিথ আসালঙ্কা, ৬৫ বলে গুরুত্বপূর্ণ ৭৯ রান এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। এছাড়া অধিনায়ক দাসুন শানাকা করেছেন ৬২ বলে ৬৮। তাঁদের ওপর ভর করেই সম্মানজনক স্কোরের দিকে এগিয়েছে শ্রীলঙ্কা। শেষপর্যন্ত ৪৪.৫ ওভারে সবকয়টি উইকেট হারিয়ে থেমেছে ৩২৬ রানে।

১০২ রানের এমন একতরফা জয় নিশ্চিতভাবেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে মানসিকভাবে এগিয়ে রাখবে পরবর্তী ম্যাচগুলোতে। বিশেষ করে ব্যাটারদের পারফরম্যান্স বাড়তি নিশ্চয়তা দিবে টিম ম্যানেজম্যান্টকে। অন্যদিকে লঙ্কানরা ঘুরে দাঁড়াতে চাইবে যেকোনো মূল্যে, তবে বোলারদের আত্মবিশ্বাস ফেরানোই বড় চ্যালেঞ্জ তাঁদের জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link