টানা দুই পরাজয়। একই সাথে টানা দুই ম্যাচেই ২০০ রানের নিচে গুঁটিয়ে যাওয়া। বিশ্বকাপের মঞ্চে অস্ট্রেলিয়াকে শেষ কবেই বা এমন হতশ্রী অবস্থা দেখা গিয়েছে? স্বয়ং ক্রিকেট বিধাতাও হয়তো দ্বিধান্বিত হতে পারেন এমন প্রশ্নে। তবে সে প্রশ্ন ছাপিয়ে এখন মূল আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ চলাকালীন স্টিভেন স্মিথ ও মার্কাস স্টোয়িনিসের বিপক্ষে যাওয়া দুটি সিদ্ধান্ত।
ইনিংসের দশম ওভারে রাবাদার বলে পরাস্ত হয়েছিলেন স্টিভেন স্মিথ। অনুমিতভাবেই এলবিডব্লুর আবেদন করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে সেটি দেখেই মনে হচ্ছিল, বল লেগ সাইড দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে। সেই ভাবনায় অনফিল্ড আম্পায়ার জোয়েল উইলসনও সে আবেদন নাকচ করে দেন। কিন্তু মূল বিস্ময় অপেক্ষা করছিল ডিআরএসে।
বল ট্র্যাকিং সিস্টেমে দেখা যায়, বল লেগ স্টাম্পের মাথায় আঘাত হেনেছে । ফলত, তৃতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে আউট হয়ে ফিরে যেতে হয় স্মিথকে। তবে বল ট্র্যাকিংয়ের এমন দৃশ্যে বিস্মিত হয়ে পড়ে মাঠের প্রায় সবাই। এমন ম্যাচ শেষে রাবাদা সেই আউটটিকে প্রযুক্তির আশীর্বাদ হিসেবেও আখ্যায়িত করেন। তবে কি প্রযুক্তির কোনো গলদ? তার অবশ্য নির্ণায়ক কিছু নেই। তবে স্মিথের ঐ আউট নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়েছে চরমে।
এখানেই শেষ নয়। পরবর্তীতে মার্কাস স্টোয়িনিসের আউট নিয়েও হয়েছে বিতর্ক। ১৮ তম ওভারে কাগিসো রাবাদার করা দ্বিতীয় বলটি লেগে খেলার চেষ্টা করেছিলেন স্টয়নিস। তাতে কট বিহাইন্ডের আবেদন করেছিল প্রোটিয়ারা। অবশ্য তাতে আম্পয়ার জোয়েল উইলসন সাড়া দেননি। কিন্তু প্রোটিয়াদের রিভিউয়ের পরিপ্রেক্ষিতে সে সিদ্ধান্ত বদলে যায় দ্রুতই। তৃতীয় আম্পায়ার রিচার্ড কেটেলবরো স্টয়নিসকে আউট ঘোষণা করেন। আর এরপরেই এ সিদ্ধান্ত নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক।
বলটা স্টয়নিসের ডান হাতের গ্লাভসেই লেগেছিল। তবে ভিডিও রিপ্লেতে স্পষ্টই দেখা যাচ্ছিল, তখন স্টোয়িনিসের ডান হাতের সঙ্গে ব্যাটের সংস্পর্শ হয়নি। অর্থাৎ গ্লাভসে বল লাগলেও তাতে ব্যাটের কোনো সংযোগ হয়নি। ফলত, সেটি নট আউটই হওয়ার কথা। কিন্তু সবাইকে বিস্ময়ে ভাসিয়ে সেটিকে আউট ঘোষণা করেন তৃতীয় আম্পায়ার রিচার্ড কেটলবরো।
তবে এ দুটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে এরই মধ্যে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। ম্যাচশেষে মার্নাস লাবুশানে তো বলেই দিয়েছেন, মার্কাস স্টয়নিসের বিতর্কিত আউট নিয়ে বিশ্বকাপ অফিশিয়ালদের কাছে ব্যাখ্যা চাইবে অস্ট্রেলিয়া। অবশ্য সেই ব্যাখ্যা কতটা মনপূত কিংবা গ্রহণযোগ্যতা পাবে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
তবে, শুরুতে বিশ্বকাপের নানান অব্যবস্থাপনা, আর এখন মাঠের লড়াইয়ে আম্পায়ারদের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত— সব মিলিয়ে বিশ্বকাপের অর্ধেক পথ না গড়াতেই প্রশ্নের কাঠগড়াতে দাঁড়াচ্ছে এবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপ।