দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান আর অস্ট্রেলিয়া – টানা তিন পরাজয়। শুধু পরাজয় নয়, রীতিমতো উড়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। তবে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে শেষমেশ জয়ের দেখা পেলো শ্রীলঙ্কা। ডাচদের পাঁচ উইকেটের ব্যবধানে হারালো দলটি – সাদিরা সামারাবিক্রমার দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করে প্রথমবার জয়ের স্বাদ পেলো কুশল মেন্ডিসের নেতৃত্বাধীন দল।
টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই শ্রীলঙ্কান পেসারদের তোপের মুখে পড়ে নেদারল্যান্ডস। পাওয়ার প্লেতেই দুই ওপেনার আউট করেন কাসুন রাজিথা, খানিক পরে ফিরতি পথ ধরেন কলিন আকারম্যানও। প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন আরেক ব্যাটার বাস ডি লিড। সবমিলিয়ে মাত্র ৬৮ রানে চার উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়ে ডাচরা।
ঘুরে দাঁড়ানো তো দূরে থাকা, নিদামানুরু আর স্কট এডওয়ার্ডসকে হারিয়ে খাদের কিনারায় পৌঁছে যায় দলটি। ১০০ রানের আশেপাশে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা যখন তৈরি হয়েছিল তখনি ত্রাতা হয়ে আসেন সাইব্রান্ড এঞ্জেলব্রেখট এবং লোগান ভ্যান বিক। সপ্তম উইকেট জুটিতে দুজনে রীতিমতো ইতিহাস গড়েন।
এই দুই ব্যাটারের ১৩০ রানের জুটিতে ২০০ রানের গন্ডি পেরোয় নেদারল্যান্ডস। ততক্ষণে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সপ্তম উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডের জন্ম হয়। ৪৬তম ওভারে মাধুশাঙ্কা জুটি ভাঙ্গলেও চ্যালেঞ্জিং স্কোর পেতে সমস্যা হয়নি দলটির – অলআউট হওয়ার আগে ২৬২ রান বোর্ডে জমা করে তাঁরা।
রান তাড়া করতে নেমে শ্রীলঙ্কা শুরুতেই কুশল পেরেরাকে হারায়, স্পিনার আরিয়ান দত্তের ঘূর্নিতে ধরা পড়েন তিনি। এই স্পিনার ইনফর্ম কুশল মেন্ডিসকেও আউট করেন, ফলে চাপে পড়ে যায় লঙ্কানরা। তবে সেই চাপ স্থায়ী হতে দেননি পাথুম নিশাঙ্কা এবং সাদিরা সামারাবিক্রমা।
দুজনের পঞ্চাশোর্ধ জুটিতে আবারো ম্যাচে ফিরে দলটি। তবে ফিফটি করার পরেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ডানহাতি ওপেনার। কিন্তু পথ হারায়নি দল, আসালঙ্কাকে সঙ্গে নিয়ে সামারাবিক্রম এগিয়ে যান জয়ের দিকে। তাঁদের ৭৭ রানের জুটিতে জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়।
শেষদিকে আসালঙ্কা আউট হলেও বাকি আনুষ্ঠানিকতা সারতে সমস্যা হয়নি। শেষপর্যন্ত পাঁচ উইকেটের জয় পেয়েছে শ্রীলঙ্কা, এর মধ্য দিয়ে টুর্নামেন্টে প্রথম পয়েন্টের দেখা পেলো মেন্ডিস, নিশাঙ্কারা।
শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন প্রায় শেষ, তবু লড়াইয়ের পুঁজি পেয়ে গেলো তাঁরা। আগামী দিনে এই জয় নতুন করে শুরু করার অনুপ্রেরণা দিবে ১৯৯৬ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।