ওয়াংখেড়ের তীব্র দাবদাহ। ক্র্যাম্পিংয়ে পড়ে পুরো হাঁসফাঁস অবস্থা। তবে কোনোটিই বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি হেনরিখ ক্লাসেনের সেঞ্চুরিযাত্রায়। ইংলিশ পেসারদের সকল রণকৌশল আটকে দিয়ে আগ্রাসী ব্যাটিং প্রদর্শনীর মঞ্চায়ন ঘটিয়ে ৬১ বলে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন প্রোটিয়া এ ব্যাটার।
দক্ষিণ আফ্রিকার টপ অর্ডার ব্যাটাররা শুরুতেই একটা বড় রানের ভিত্তি গড়ে দিয়েছিল। মিডল অর্ডার ব্যাটারদের তাই দায়িত্ব ছিল রান রেট বাড়ানোর দিকে। প্রোটিয়াদের সেই ভাবনার সফল বাস্তবায়ন হয়েছে ক্লাসেনের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে।
মার্ক উড থেকে এটকিনসন, ইংলিশ পেসারদের দৌরাত্ম্য যেন মাথা নত করেছে ক্লাসেনের ব্যাটিংয়ে। অথচ শুরুতে রয়েশয়ে নিজ ঘরানাতেই ব্যাটিং করেছিলেন প্রোটিয়া এ ব্যাটার। ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূরণ করেন ৪০ বলে।
তবে সেঞ্চুরি পূরণের পথে পরে পথটুকু ক্লাসেন পাড়ি দেন মাত্র ২১ বলে। ৪০ বলে ৫০ পূরণ করা ক্লাসেন তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন ৬১ বলে। আর তাতেই ৩৯৯ রানের রানপাহাড়ে চড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা।
অথচ দক্ষিণ আফ্রিকার দলগত সংগ্রহ থামতে পারতো ৩০০ এর গণ্ডিতেই। ৩৭তম ওভারের তৃতীয় বলে ফিরে যান মিলার। দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর তখন ২৪৩। এমন সংগ্রহের পথে ততক্ষণে শুধু মিলার নয়, ফিরে গেছেন এইডেন মারক্রাম, সাবলীল ব্যাট করতে থাকা রেজা হেনড্রিকস।
প্রোটিয়াদের ইনিংসে তাই ছন্দপতন ঘটতেই পারতো। কিন্তু শেষমেশ দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে আর ছন্দচ্যূতি ঘটেনি। ইনিংসের পরের গল্পটা পুরোটাই লিখেছেন ক্লাসেন। আর তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে পার্শ্ব নায়কের ভূমিকায় আবর্তিত হয়েছিলেন মার্কো ইয়ানসেন। দু’জন মিলে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ৭৭ বলে যোগ করে ১৫১ রান।
৬১ বলে সেঞ্চুরি করা ক্লাসেন শেষ পর্যন্ত থামেন ১০৯ রানে। ইনিংসের শেষ ওভারে গাস অ্যাটকিনসনের বলে আউট হন তিনি। তবে তার আগে ১২টি চার ও ৪টি ছক্কার সৌজন্যে ১৬২ স্ট্রাইক রেটের দুর্দান্ত একটি ইনিংস খেলেন তিনি।
দিল্লিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪২৮ রান, মুম্বাইয়ে এবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৯৯। এবারের বিশ্বকাপের ৪ ম্যাচে প্রতিপক্ষকে দুই বারই রানবন্যায় ভাসালো দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে এবারের টা যেন একটু বেশিই স্পেশাল।
কারণ, এর আগে ওয়ানডেতে ইংলিশদের বিপক্ষে যে এত রান তুলতে পারেনি কোনো দল। প্রোটিয়াদের এমন রান উল্লাসের দিনে তাই নিশ্চিত ভাবেই নায়ক হচ্ছেন ক্লাসেন। যার ঝড়ো শতকেই ৪০০ এর পথে হেঁটেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।