দল হিসেবে নেদারল্যান্ডসকে খুব বড় করে দেখা হয় না, আলোচনার টেবিলেও কম শোনা যায় তাঁদের নাম। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়েকে টপকে বিশ্বকাপে জায়গা করে নেয়া ডাচদের এত হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই সেটা প্রমাণ করে যাচ্ছে তাঁরা।
বিশেষ করে ব্যাটিংয়ে নেদারল্যান্ডসের লড়াইয়ের মানসিকতা আলাদাভাবে চোখে পড়েছে। বিপর্যয়ের মুখেও তাঁরা ঘুরে দাঁড়াতে জানে – শেষপর্যন্ত লড়তে জানে সর্বস্ব দিয়ে; বাইশ গজে দাঁতে দাঁত চেপে প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে এগিয়ে যেতে পারে।
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের ম্যাচের কথাই ভাবা যাক। ৯১ রানে ছয় উইকেট হারানো ডাচরা কখন অলআউট হবে সেটির অপেক্ষায় ছিল ক্রিকেটপ্রেমীরা – অথচ রেকর্ড জুটি গড়ে বিশ্বকে চমকে দিলো দুই ব্যাটার সাইব্রান্ড এঞ্জেলব্রেখট এবং লোগান ভ্যান বিক। এই দুজন মিলে স্কোরবোর্ডে যোগ করেছিলেন ১৩০ রান, যা কি না সপ্তম উইকেটে বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বোচ্চ জুটি।
আর এই পারফরম্যান্সে ভর করেই ৯১/৬ থেকে স্কট এডওয়ার্ডসের দল পৌঁছে যায় ২৬৭/১০ এ। অন্য যেকেউ তো বটেই, দলটির ড্রেসিংরুমের অনেকেই হয়তো ভাবেনি শুরুর বিপর্যয়ের পরেও এতটা পথ পাড়ি দেয়া যায় যাবে।
আগের ম্যাচের কথা মাথায় রাখলে অবশ্য একেবারে অপ্রত্যাশিত অনুভূব হওয়ার কারণ নেই। কেননা শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও প্রায় একই দৃশ্যের মঞ্চায়ন করেছিল কমলা জার্সি ধারীরা। সেই ম্যাচে ৮২ রানে প্রথম পাঁচ ব্যাটার প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলেও শেষপর্যন্ত নেদারল্যান্ডস করেছিল ২৪৫ রান।
অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস লোয়ার অর্ডারের সঙ্গে মিলে প্রতিরোধ গড়েছিলেন কাগিসো রাবাদাদের বিরুদ্ধে। তাঁর ৭৮ রানের বদৌলতে দল শুধু চ্যালেঞ্জিং পুঁজি-ই পায়নি, জয়ের রাস্তাও খুঁজে পেয়েছিল। ৪৩ ওভারের ম্যাচে প্রোটিয়াদের ২০৭ রানে থামিয়ে দিয়ে অঘটনের জন্ম দিয়েছিল তাঁরা।
যদিও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ফলাফল ভিন্ন ছিল, সাদিরা সামারাবিক্রমার দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে রক্ষা পেয়েছে লঙ্কানরা। তবে জয়-পরাজয়ের উর্ধ্বে গিয়ে আলাদাভাবে নজর কেড়েছে ডাচ ব্যাটসম্যানদের দুর্দান্ত সব প্রত্যাবর্তন।
তাঁদের এই হার না মানা মানসিকতা, ইতিবাচক অ্যাপ্রোচ নি:সন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। যেমনটা ডাচ অধিনায়ক বলেই রেখেছিলেন, ‘আমরা মজা করতে বিশ্বকাপ খেলতে আসিনি।’