ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ, অন্য দলগুলোর তুলনায় ভারতের খানিকটা এগিয়ে থাকাই স্বাভাবিক। কিন্তু টুর্নামেন্টের এই পর্যায়ে এসে মনে হচ্ছে সবার চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে আছে রোহিত শর্মার দল। তাঁদের থামানো তো দূরে থাক, ছুঁতে পারারও কেউ নেই – সহজ বাংলায় বললে, অপ্রতিরোধ্য বনে গিয়েছে তাঁরা।
প্রথম পাঁচ ম্যাচের সবকয়টিতে জিতে ইতোমধ্যে সেমিফাইনালে এক পা দিয়ে রেখেছে ভারত। শুধু জয় নয়, প্রায় প্রতিটা ম্যাচে প্রতিপক্ষকে অনায়াসে হারিয়ে দিয়েছে দলটি।
শুরুটা অস্ট্রেলিয়াকে দিয়ে, নিজেদের উদ্বোধনী ম্যাচে অজিদের ১৯৯ রানে অলআউট করে দিয়েছিল জাসপ্রিত বুমরাহ, কুলদীপ যাদবরা। পরবর্তীতে কোহলি-রাহুলের দারুণ এক জুটিতে আট ওভার হাতে রেখেই জয় পায় স্বাগতিকরা। পরের ম্যাচে আফগানিস্তান তো দাঁড়াতেই পারেনি, ৩৫ এর ওভারের মধ্যেই ২৭৩ রানের টার্গেট টপকে গিয়েছিল রোহিত বাহিনী।
নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়েছিল তাঁরা; সেই লড়াইয়েও একতরফা ভাবে জিতে ফিরেছে। প্রায় একই ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশের বিপক্ষে।
আর সবশেষ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের রেশ তো এখনো কাটেনি। টানা চার ম্যাচ জিতে উড়তে থাকা কিউইদের মাটিতে নামিয়ে এনেছে টিম ইন্ডিয়া। যদিও অন্য ম্যাচগুলোর তুলনায় ব্ল্যাকক্যাপসরা বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখাতে পেরেছিল।
মজার ব্যাপার, সব কয়টি ম্যাচেই ভারত পরে ব্যাটিং করেছে; আর ‘চেজ মাস্টার’ কোহলি আছেন সেরা ছন্দে। দুইয়ে দুইয়ে চার মিলে যাওয়াতেই এখন পয়েন্টস টেবিলের ওপরের জায়গাটা দখল করে রেখেছে ভারত। অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড ম্যাচে এই তারকা ব্যাটারই জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়েছিলেন দলকে।
ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং তিন বিভাগেই ভারত এখন স্বপ্নীল সময় কাটাচ্ছে। দুই অভিজ্ঞ রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি হয়ে উঠেছেন রান মেশিন, টুর্নামেন্টের সেরা দুই ব্যাটার আপাতত তাঁরাই। এছাড়া প্রয়োজনের সময় রাহুল, গিলরাও হয়ে উঠছেন ভরসা।
অন্যদিকে জাসপ্রিত বুমরাহ ফিরে আসায় অন্য রূপ ধারণ করেছে ভারতের বোলিং আক্রমণভাগ। পাওয়ার প্লে, ডেথ ওভার কিংবা মিডল ওভার যেকোনো ম্যাচ পরিস্থিতিতে বুমরাহর একটা স্পেল বদলে দিতে পারে গতিপথ। তাঁর সতীর্থ সিরাজ, শামিও প্রতিপক্ষের ভয়ের কারণ; আবার চায়নাম্যান কুলদীপ যাদবও নিজেকে আরো ধারালো করে তুলেছেন।
ফিল্ডিং তো বরাবরই ভারতের গর্বের জায়গা। মাঠে কোহলি, জাদেজাদের উপস্থিতি দলটিকে বাড়তি সুবিধা দেয়। এমন একটি ক্রিকেটীয় পরাশক্তিকে হারানো তাই প্রায় অসম্ভব ঠেকছে।
এখন পর্যন্ত রোহিতদের থামাতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড। এখন দেখার বিষয়, দক্ষিণ আফ্রিকা কিংবা ইংল্যান্ড অসাধ্য সাধন করতে পারে কি না।