আফগানিস্তান বরাবরই স্পিন নির্ভর দল, একাদশে তিন এমনকি চারজন বিশ্ব মানের স্পিনার খেলানোর সুযোগ আছে তাঁদের কাছে। সে তুলনায় ব্যাটিং লাইনআপ বেশ সাদামাটা, প্রতিপক্ষকে ভড়কে দেয়ার মত নাম নেই বললেই চলে। তবে রহমানউল্লাহ গুরবাজ এখান ব্যতিক্রম, সাদামাটা এই ব্যাটিং লাইনআপে জ্বলছেন অগ্নিশিখার মতই।
এবারের বিশ্বকাপেও উজ্জ্বল পারফরম্যান্স করছেন তিনি। প্রতিটি ম্যাচেই আফগানদের উড়ন্ত সূচনা এনে দিচ্ছেন। ব্যতিক্রম হয়নি পাকিস্তানের বিপক্ষেও, ওপেনিংয়ে নেমে জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন। মাত্র ৫৩ বলে ৬৫ রানের ঝকঝকে ইনিংস উপহার দিয়েছেন এই ডানহাতি; পাকিস্তানি পেসারদের পেস আর সুইং সামলে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন তিনি।
শাহীন শাহ আফ্রিদিকে প্রথম বলেই চার মেরে শুরু; এরপর হারিস রউফের এক ওভারেই হাঁকিয়েছেন চারটি চার। সবমিলিয়ে পাওয়ার প্লেতেই করেছেন ২৩ বলে ২৮ রান। ৩০ গজের বাইরে চার ফিল্ডার যেতে আরো আগ্রাসী হয়ে ওঠেন তিনি। ৩৮ বলেই পূর্ণ করেন হাফসেঞ্চুরি – ততক্ষণে ওপেনিং জুটি পৌঁছে যায় শতরানে।
এরপর অবশ্য বাঁ-হাতি পাক পেসারের হাতেই ধরা পড়েন তিনি। তবে তার আগেই ৬৫ রান এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। আট চার আর চার ছয়ে সাজানো ১২২ স্ট্রাইক রেটের এই ইনিংসের কল্যাণেই বড় টার্গেট তাড়া করার রসদ পেয়েছিল আফগানিস্তান।
গুরবাজের আগ্রাসী ব্যাটিংয়েই জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল আফগানিস্তান, শেষমেশ সেই স্বপ্ন পূরণও হয় তাঁদের। শুধু তাই নয়, নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করার রেকর্ডও এর মধ্য দিয়ে গড়েছে দলটি।
এর আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচেও ইতিহাস গড়ার বীজ বুনেছিলেন গুরবাজ। সেদিন মাত্র ৫৭ বলে ৮০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেছিলেন তিনি, আর তাতে ভর স্মরণীয় এক জয় পেয়েছিল আফগানিস্তান। এছাড়া বাংলাদেশ বিপক্ষেও ৪৭ রান করেছিলেম এই ডানহাতি। সবমিলিয়ে এবারের বিশ্বকাপে ২৪৪ রান করেছেন এই ওপেনার; আর ব্যাটিং গড় প্রায় ৪৫।
পুরো টুর্নামেন্টে দলের ব্যাটিং লাইনআপকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার দায়িত্ব দারুণভাবে পালন করে যাচ্ছেন তিনি। বিশ্ব মঞ্চে বড় দলগুলোর বিপক্ষে লড়াইয়ের সাহস জোগানোর জন্য, জয়ের সম্ভাবনা সৃষ্টির জন্য গুরবাজের নাম নিশ্চয়ই বিশেষভাবে আলোচিত হবে ক্রিকেটভক্তদের মাঝে।