নির্মম, নিষ্ঠুর, নির্দয়!

নির্মম, নিষ্ঠুর বা নির্দয় – বাংলাদেশের বিপক্ষে কুইন্টন ডি ককের তান্ডবকে যেকোনো বিশেষণে বিশেষায়িত করা যায়। পেসার কিংবা স্পিনার, অভিজ্ঞ কিংবা তরুণ কেউই একবিন্দু ছাড় পায়নি তাঁর কাছ থেকে। আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত যেভাবে খেলেছেন তাতে প্রশ্ন উঠতেই পারে – ডি কক, আপনি অতিমানব নাকি ভিনগ্রহের কেউ?

১৪০ বলে ১৭৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন এই ওপেনার। ওপেনিংয়ে নেমে খেলেছেন ৪৫ ওভার পর্যন্ত, পুরোটা সময় রান করেছেন অনায়াসে, অবলীলায়।পনেরোটি চার আর সাতটি বিশাল ছক্কার মারে সাজানো এই ইনিংসে তাঁর স্ট্রাইক রেট প্রায় ১২৫। এতে ভর করেই আরো একবার রানের সুউচ্চ পাহাড় সৃষ্টি করতে পেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

প্রথম ওভারে মুস্তাফিজুর রহমানকে চার মেরে দারুণ কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ডি কক; মাঝে দুই ব্যাটার দ্রুত আউট হলে কিছুটা পিছিয়ে পড়ে প্রোটিয়ারা – তবে সেই বিপদ কাটিয়ে দলকে চালকের আসনে বসিয়েছেন তিনি। এইডেন মার্করামকে সঙ্গে নিয়ে প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়েন তিনি।

এরপর হাত খুলে খেলতে থাকেন, নিয়মিত বাউন্ডারি আদায় করে চাপ বাড়ান বোলারদের ওপর। দলের রান তিন অঙ্কের ঘরে যাওয়ার আগেই এই বাঁ-হাতি পূর্ণ করেন ব্যক্তিগত ফিফটি; তারপর হয়ে উঠেন আরো আগ্রাসী। না, টি-টোয়েন্টি স্টাইলে ধুমধাড়াক্কা খেলেননি; বলের মান বুঝে ব্যাটিং করেছেন।

১০১ বলে ক্যারিয়ারের বিশতম সেঞ্চুরি পেয়ে যেতেই বিধ্বংসী রূপ ধারণ করেছিলেন তিনি। চার আর ছয়ের বৃষ্টির জন্ম দিয়েছেন মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে; আউট হওয়ার আগের ২০ বলে করেছেন ৪৯ রান। কয়েক ঘন্টার এই ‘ডি কক’ টর্নেডো শেষমেশ থামিয়েছেন হাসান মাহমুদ, ততক্ষণে এই ব্যাটারের রান ১৭৪; যা কি না বিশ্বকাপ ইতিহাসে কোন উইকেটরক্ষকের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ১০০ রান, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১০৯ রান আর এবার ১৭৪। ডি ককের ধারাবাহিকতা বর্ণনাতীত হয়ে উঠেছে। তাঁকে রান মেশিন বললেও কম হয়ে যাবে হয়তো; ভারত বিশ্বকাপে যেভাবে পারফর্ম করছেন তিনি তাতে অবশ্য আক্ষেপই জেগে উঠেছে খানিকটা, কেননা এই বিশ্বকাপ দিয়েই নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সমাপ্তি টানতে যাচ্ছেন এই তারকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link