টানা চার ম্যাচে হেরে বিপর্যস্ত বাংলাদেশকে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ লজ্জার স্মৃতি উপহার দিয়েছে নেদারল্যান্ডস। ইডেন গার্ডেন্সের গ্যালারি ভর্তি সমর্থকদের সামনে সাকিব আল হাসানদের ৮৭ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে ডাচরা; আর তাতে এবারের বিশ্বকাপ থেকে সবার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে বাদ পড়লো টাইগাররা।
আগে ব্যাট করতে নামা নেদারল্যান্ডস শুরুতেই টাইগার পেসারদের তোপের মুখে পড়ে। কয়েক ম্যাচের বিরতি কাটিয়ে ফেরা তাসকিন আহমেদ তুলে নেন বিক্রমাজিৎ সিংয়ের উইকেট; পরের ওভারে শরিফুল ইসলাম ফেরান ম্যাক্স ও’ডউডকেও। প্রাথমিক বিপর্যয় সামলে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন আকারম্যান, বারেসি।
তবে বারেসির বিদায়ে ভাঙ্গে তাঁদের ৫৯ রানের জুটি, পরের ওভারে একই পথ ধরেন আকারম্যানও। অভিজ্ঞ বাস ডি লিড, স্কট এডওয়ার্ডসের সঙ্গে মিলে আবারো প্রতিরোধ গড়ে তোলেন, ১৭ করে ডি লিড আউট হলে অধিনায়ককে সঙ্গ দেন সাইব্রান্ড এঞ্জেলব্রেখট; এই দুজনের ৭৭ রানের জুটিতে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহের ভিত পায় ডাচরা।
ততক্ষণে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন এডওয়ার্ডস, মুস্তাফিজের বলে আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ৬৮ রান। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে একে একে সাজ ঘরে ফেরেন এঞ্জেলব্রেখট, শারিজ আহমেদও। তবে লোগান ভ্যান বিকের দৃঢ়তায় শেষ দুই উইকেটে ৩৫ রান সংগ্রহ করতে পারে নেদারল্যান্ডস, তাতেই ২২৯ রানের পুঁজি পায় দলটি।
রান তাড়ায় বাংলাদেশ শিবির প্রথমেই চাপে পড়ে যায়; আরিয়ান দত্তের বলে রিভার্স করতে গিয়ে আউট হন লিটন দাস আর তানজিদ তামিম ক্যাচ দেন উইকেটের পিছনে। ১৯ রানে দুই ওপেনারকে হারানো দলকে জয়ের দিকে টেনে নেয়ার চেষ্টা করেন নাজমুল হোসেন শান্ত আর মেহেদি মিরাজ; যদিও সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয় শান্তের ভুলে। নয় রান করে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।
দেশ থেকে জরুরি অনুশীলন সেরে গেলেও কাজের কাজ হয়নও কিছুই। আরো একবার কাট শট খেলতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হন সাকিব, প্রতিরোধ গড়া মিরাজও ফিরে যান ৩৫ রান করে। শেষ ভরসার প্রতীক হয়ে ক্রিজে ছিলেন মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জুটি। কিন্তু পল ভ্যান মিকেরেনের এর ইনসুইংয়ে উড়ে যায় মুশির স্ট্যাম্প আর সব ভরসা।
সপ্তম উইকেটে শেখ মেহেদীকে নিয়ে রিয়াদ ৪৮ রানের জুটি গড়েছেন ঠিকই তবে সেটা কেবলই পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছিল। শেষপর্যন্ত সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ১৪২ রানেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস; তাতেই আরো একটি ঐতিহাসিক জয় তুলে নেয় ডাচরা।