প্যাট কামিন্সের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ নিলেন অ্যালেক্স ক্যারি। ব্যাটার যশস্বী জয়সওয়াল, যিনি ভারতের ভরসার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। অন ফিল্ড আম্পায়ার আউট না দিলেও অস্ট্রেলিয়া রিভিউ নেয়।
আর সেখানেই আলোচিত ও ঐতিহাসিক এক সিদ্ধান্ত নিয়ে বসলেন বাংলাদেশের শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। খালি চোখে দেখে মনে হচ্ছিল বল বের হয়ে যাওয়ার আগে জয়সওয়ালের গ্লাফস ছুঁয়ে গেছে।
কিন্তু, আল্ট্রা এজের স্পাইকে কিছু প্রমাণ হয় না এখানে। স্নিকো মিটার ছিল, তবে যন্ত্রের ওপর নয় কিন্তু, আম্পায়ার সৈকত ভিজুয়াল এভিডেন্সে বেশি জোর দিলেন, পাল্টে ফেললেন মাঠের আম্পায়ারের নেয়া সিদ্ধান্ত।
নি:সন্দেহে সাহসী এক সিদ্ধান্ত। কারণ, অন ফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে বুড়ো আঙুল দেখানোর প্রধান হাতিয়ার স্নিকো মিটার এখানে অকার্যকর। সহজ সিদ্ধান্ত হতে পারত, অন ফিল্ড আম্পায়ারের মত জয়সওয়ালকে নট আউট ঘোষণা করা। কিন্তু, সৈকত সহজ পথে হাঁটেননি।
তিনি সঠিক পথে হেঁটেছেন। কারণ, খালি চোখে ডিফ্লেকশনটা স্পষ্ট ছিল। চোখের দেখা ভুল হতে পারে ক্যামেরা অ্যাঙ্গেলের জন্য, কিন্তু এটা এতটাই স্পষ্ট ছিল না ভুল হওয়ার কোনো সুযোগই নেই।
সাইমন টোফেলও পরবর্তীতে বললেন, ‘আমার মতে আউটের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। টেলিভিশন আম্পায়ার সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। টেকনোলজিকাল প্রটোকলের পরও আম্পায়ারদের নিজেদের চোখের ওপর ভরসা রাখার সাহস দেখাতে হবে যখন ডিফ্লেকশনটা স্পষ্ট।’
তারপরও এই আউট নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠবে, অনেক ভ্রু কুঁচকে যাবে, ভারতীয় গণমাধ্যম কোদাল নিয়ে হাজির হবে, ক্রিকেট বোদ্ধাদের মসনদ কেঁপে উঠবে – তবে স্নিকো মিটারকে ওভারটার্ন করার এই সিদ্ধান্ত ইতিহাস হয়ে থাকবে। লেখা থাকবে, প্রযুক্তিতে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছিলেন একজন বাংলাদেশি আম্পায়ার তাও আবার বোর্ডার গাভাস্কার ট্রফির ম্যাচের পঞ্চম দিনে গিয়ে।
জয়সওয়ালও নিশ্চয়ই সময়টাকে ভুলতে পারবেন না। তিনি, সিদ্ধান্ত শুনে দুই অনফিল্ড আম্পায়ারের সাথে কথা বললেন, ক্ষুব্ধ ছিলেন। সূরাহা না করতে পেরে মাথা নিচু করে ফিরে যান সাজঘরে।
এর আগে একটা-দুইটা নয়, রীতিমত তিনটা ক্যাচ মিস করেন তিনি। বলা যায়, অস্ট্রেলিয়ার লিড সাত আসমানে গিয়ে ঠেকার পেছনে যশস্বী জয়সওয়ালের অবদান কম নয়।
পঞ্চম দিনে অবশ্য মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে তিনি একাই লড়লেন ভারতের হয়ে। তবে, তাতে শেষ রক্ষা হল না। তাঁর ৮৪ রানের ইনিংসটা শেষ হল একটা বিতর্কিত আউটের মধ্য দিয়ে।
হ্যাঁ, এমন না যে ওভাবে আউট হয়ে সাজঘরে না ফিরলে ভারত টেস্টটা জিতে যেত। তবে, এটা ঠিক নিজের সেঞ্চুরির সংখ্যা আরেকটা বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকত জয়সওয়ালের। তবে, ব্যক্তিগত নয় – দলীয় ব্যর্থতার আক্ষেপটাই নিশ্চয়ই করছেন জয়সওয়াল।