ফিরে আসুন রাহুলের মত করেই

পাঁচ মাস পর তিনি ফিরলেন। যখন ফিরলেন, তখন আলোর রোশনাই নিয়ে ফিরলেন। নিজের জাত চেনাতে কিংবা মনে করিয়ে দিতে বিন্দুমাত্র ভুল করেননি লোকেশ রাহুল।

পাঁচ মাস পর তিনি ফিরলেন। যখন ফিরলেন, তখন আলোর রোশনাই নিয়ে ফিরলেন। নিজের জাত চেনাতে কিংবা মনে করিয়ে দিতে বিন্দুমাত্র ভুল করেননি লোকেশ রাহুল। পাকিস্তানের বিপক্ষে তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি।

এশিয়া কাপের ম্যাচগুলো সরাসরি দেখা যাচ্ছে টফি-তে।

লোকেশ রাহুলের অপেক্ষায় ছিল ভারত দল। ইনজুরির কারণে বেশ লম্বা সময় তাকে থাকতে হয়েছে মাঠের বাইরে। অফ ফর্মের কালো ছায়া ঘিরে ধরেছিল তাকে। দলের নিয়মিত সদস্যকেই দলে রাখা নিয়ে হতে থাকে নিদারুণ সমালোচনা।

অফফর্ম আর ইনজুরির সেই দুর্ভেদ্য পর্দা চিড়ে রাহুল অবশেষে বেড়িয়ে এলেন। এসেই ডানহাতি ব্যাটার চড়াও হন পাকিস্তানি বোলারদের উপর। ইনিংসের শুরু থেকেই আগ্রাসী। যেন আগেরদিনও তিনি ম্যাচ খেলেছেন। প্রায় ৫ মাস বাদে ওয়ানডে খেলতে নামার কোন ছাপই যেন নেই তার ইনিংসে। তিনি যেন বরাবরই ছিলেন প্রস্তুত।

ভারত জাতীয় দলের পাইপলাইনের প্রশংসা হয় সব সময়। বেশ কিছু প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের একটা জটলা দলের বাইরে। তবুও কেন লোকেশ রাহুল সুযোগ পাবেন, তা নিয়ে প্রশ্নের বান বয়ে গেছে ভারতীয় ক্রিকেট মহলে। তবে লোকেশ রাহুল যেন বুঝিয়ে দিলেন ঠিক কি কারণে তার উপর রাখা হয় পূর্ণ আস্থা।

বৃষ্টি বাঁধায় রিজার্ভ ডে-তে ব্যাট হাতে নামতে হয় রাহুল আর কোহলিকে। আগের দিন রোহিত শর্মা আর শুভমন গিলের ১০০ এর বেশি রানের উদ্বোধনী জুটি ভারতকে দিয়েছিল এক শক্ত ভিত। সেই ভিতের উপর দাঁড়িয়ে বাকিদের স্রেফ রানটা বাড়িয়ে নিতে হতো। সেই কাজটাই ঠিকঠাক মত করে দেখালেন লোকেশ রাহুল। তার সাথে যোগ্য সঙ্গটা দিয়েছেন বিরাট কোহলি।

আগের দিন যখন বৃষ্টির বাঁধা এল, তখন ২৮ বলে ১৭ রান নিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেছিলেন রাহুল। শেষ অবধি তিনি অপরাজিত থেকেছেন ১১১ রানে। এই সময়ে পাকিস্তানের প্রতিটি বোলারদের স্রেফ টিকতেই দেননি রাহুল। একই ধাঁচে পাকিস্তানি বোলারদের তুলোধুনো করেছেন বিরাট কোহলিও।

এই দুইজনে মিলে জুটি গড়েন ২৩৩ রানের। তাতেই বেশ পিছিয়ে যায় পাকিস্তান। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচটিতে পূর্ণ ৫০ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়ায় ৩৫৬ রানে। এই বিশাল রান সংগ্রহের পথে লোকেশ রাহুল খেলেছেন ১২টি চার। সেই সাথে দু’দফা বলকে হাওয়ায় ভাসিয়ে সীমানা ছাড়া করেছেন।

দৃষ্টিনন্দন সব কাভার ড্রাইভে রাহুল তার ইনিংসটি সুসজ্জিত করেছেন। মাঠের চারিদিক থেকেই রান আদায় করেছেন রাহুল। তার এই ইনিংসটি নিশ্চিতরুপেই তার জন্য এক সঞ্জীবনী সুধা। কেননা জোর গুঞ্জন ছিল তাকে বিশ্বকাপ দলে যুক্ত না করার। তবে তাকে দলে রেখেই বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করেছে বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)।

সুতরাং সমালোচনা পালে কেবলই হাওয়া লাগতে শুরু করেছিল। লোকেশ রাহুল নিজ হাতে সেই হাওয়া থামিয়ে দিলেন। তিনি জানিয়ে দিলেন তিনি প্রস্তুত। সব রকম চ্যালেঞ্জের জন্যই প্রস্তুত। তিনি বড় ইনিংস খেলা থেকে শুরু করে, লম্বা সময় ধরে বাইশ গজে থাকার জন্যেও প্রস্তুত। তিনি ভরসার প্রতিদান দিতেও পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েই আবারও নীল জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...