বেলা ফুরিয়ে এসেছে। একটু দূর থেকে হাত বাড়িয়ে ডাকছে অবসর। সেই ডাককে বরং উপেক্ষাই করে যাচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সজীবতার নব উদ্যমের আভাস দিচ্ছেন।
অম্ল-মধুর সায়াহ্নকে কোথায় থামাবেন, সে হয়ত তারই ভাল জানা। একটা লক্ষ্য অবশ্য স্থির করে রেখেছেন, ফেব্রুয়ারির চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। এর আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে পুরনো দিনের একটা ঝলক দেখালেন।
যথারীতি ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ। অভিজ্ঞ সেনানী মাহমুদউল্লাহ যখন ক্রিজে এসেছেন, তখন দলের সংগ্রহ ৭২ রান। হারিয়েছেন ৪ উইকেট। এরপরে অনভিজ্ঞ জাকের আলি ছাড়া ব্যাটার আর ছিলেন না তেমন কেউই। একটা চাপ সৃষ্টি হয়েছিল বটে। সেই চাপ তো বহুকাল অনায়াসে শুষে নিয়েছেন রিয়াদ। শারজাহের তপ্ত মরুতে দাঁড়িয়ে আরও একবার তাই করলেন।
মেহেদী হাসান মিরাজকে সাথে নিয়ে বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার প্রয়াশ করে গেলেন। কিন্তু একেবারেই খোলসবন্দী হয়ে যাননি রিয়াদ। সাম্প্রতিক সময়ে সেটাই ছিল তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর অন্যতম। এদিন বেশ সাবলীল ভঙ্গিমায় যথাযথ অ্যাংকর রুপে ব্যাট চালিয়েছেন। মিরাজ টেস্ট ঘরনার ব্যাটিং করলেও, রিয়াদ পরিস্থিতি আর ফরম্যাট অনুসারেই ব্যাটিং করেছেন।
১৪৫ রানের জুটি গড়েছেন মিরাজের সাথে। এরপর মিরাজ সঙ্গ ছেড়েছেন। কিন্তু রিয়াদ থেকেছেন অবিচল। প্রায় ১০০ স্ট্রাইকরেটের একটা ইনিংস খেলেছেন তিনি। কিন্তু তবুও আক্ষেপের গ্লানি রেখে গেছেন। শতকের খুব কাছে গিয়েও শতক বঞ্চিত হয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শেষ বেলায় এসে পাওয়া যেকোন অর্জনই যে রোমান্থন করবার মত বর্ণিল স্মৃতি।
তার ৯৮ রানের কল্যাণে ২৪৪ রানের সংগ্রহ গড়েছে বাংলাদেশ। বিপর্যয় কাটিয়ে শারজায়ের উইকেটে এই সংগ্রহ প্রয়োজনের চাইতে বেশি। বহুদিন বাদে, কার্যকর এক ইনিংস এসেছে মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে। কিন্তু শত ক্লান্তিকে পাশ কাটিয়ে রিয়াদের এমন ইনিংস তার পুরনো দিনের সুবাস ছড়ায় বটে। তবুও যে ফুরিয়ে এসেছে।