অবশেষে ১০০০ উইকেট! ভাববেন না জেমস অ্যান্ডারসন কিংবা মুত্তিয়া মুরালিধরনদের পিছনে ফেলে কোন বোলার বুঝি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হাজারতম উইকেট শিকার করেছে। হ্যাঁ, এমন ঘটনা ঘটেছে বৈকি, কিংবদন্তিদের পিছনে ফেলা এই বোলার অবশ্য কোন জাতীয় দলের হয়ে খেলেন না। তিনি সিডনি ক্রিকেট ক্লাবের এক ক্রিকেট পাগল বুড়ো।
অবাক করার মত কীর্তি গড়া এই মানুষটার নাম পল কম্পটন। ৬০ বছর বয়সী কম্পটন গত চল্লিশ বছর ধরে অ্যামেচার পর্যায়ে ক্রিকেট খেলছেন। ১৯৮৩ সালে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন তিনি, আর দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে গত সপ্তাহে উইকেটের এক হাজারী ক্লাবে ঢুকতে পেরেছেন।
কোগি বে দলের ব্যাটার ফিন ও’নেইল তাঁর বলে পুল শট খেলতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন শর্ট মিড উইকেটে। তাতেই উল্লাসে মাতেন এই অস্ট্রেলিয়ান। তবে বয়সের কারণে শেষ ১০০ উইকেট নিতে কষ্ট হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি, বলেন, ‘অবশেষে পেরেছি, শেষ ১০০ উইকেট কঠিন ছিল। আমি হতাশ হতে শুরু করেছিলাম, আর এটা আমার বোলিংকে আরো খারাপ করতো।’
সবমিলিয়ে ১০০০ উইকেটে বেশিরভাগই ক্যাচ আউট হয়েছিল। তাঁর বলে ৪৫৮ বার ফিল্ডারদের তালুবন্দি হয়েছিলেন ব্যাটাররা, এছাড়া ৪২২ বার বোল্ড এবং ১১৩ বার এলবিডব্লুর ফাঁদে আটকা পড়তে হয়েছিল তাঁদের।
এই ডানহাতি নিজের বোলিং অ্যাকশনকে সাবেক অজি অলরাউন্ডার ডগ ওয়াল্টারসের সঙ্গে তুলনা করেন; সেই সাথে কোচ হিসেবে বাবাকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘সোজাসুজি বল করার ধারণা বাবাই আমার মধ্যে এনে দিয়েছিল। এক্ষেত্রে যদি মিস হয় তাহলেই কিন্তু বল স্ট্যাম্পে হিট করবে।’
এখন পর্যন্ত সাতবার প্রিমিয়ারশীপ শিরোপা জিতেছেন এই মিডিয়াম পেসার। গত বছরের জানুয়ারিতে ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিকও করেছিলেন তিনি, আর সেই আনন্দ বর্তমানের চেয়েও বেশি বলেই বিশ্বাস তাঁর। তিনি বলেন, আমার ৮০ বার চেষ্টা করতে হয়েছিল এটার (হ্যাটট্রিক) জন্য। পিঠ থেকে এই ভার নামাতে পেরে দারুণ লেগেছিল তখন।’
অবশ্য বয়স ৬০ হলেও এখনি অবসরের ভাবনা নেই পল কম্পটনের। খেলতে চান শরীর পুরোপুরি ভেঙে পড়ার আগ পর্যন্ত। তাহলে কি একদিন ১৫০০ উইকেটের মালিক হবেন এই অ্যামেচার ক্রিকেটার – উত্তরটা রহস্য করেই দিয়েছেন তিনি, বলেছন আরো বিশ বছর হয়তো লাগবে, দেখা যাক কি হয়।