‘বিশ্বকাপের ডার্কহর্স আফগানিস্তান’

বিশ্বকাপ টি-টোয়েন্টির মহাআসর বসেছে মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে। চলছে কোয়ালিফায়ার রাউন্ড। তাঁর সাথে পুরোদমে চলছে খেলোয়াড় থেকে শুরু করে পুরো দল নিয়ে কাঁটাছেড়া। কোন দল ফেভারিট কিংবা কোন দল হতে পারে এক্স-ফ্যাক্টর অথবা কে হতে পারে ডার্ক হর্স এ নিয়ে আলোচনা অবিরত ক্রিকেট অঙ্গণে। 

এরই ধারাবাহিকতায় টাইমস অব ইন্ডিয়া এর সাথে এক সাক্ষাৎকারে আফগানিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচ ল্যান্স ক্লুজনার তাঁর দলকে নিয়ে অভিমত প্রকাশ করেছেন এর পাশাপাশি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে বেশকিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন সাবেক প্রোটিয়া তারকা ক্লুজনার। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৪৯ টেস্ট এবং ১৭১ টি ওয়ানডে খেলা ক্লুজনার এবার বিশ্ব মঞ্চে দিকনির্দেশনা দেবেন আফগানিস্তানের ডাগআউটে বসে। 

  • টুর্নামেন্টের আগে আফগানিস্তানের প্রস্তুতি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?

আমরা টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের নিঃসন্দেহে একটি ভাল দল। রাশিদ খান, মোহাম্মদ নবি-সহ বেশ কিছু অভিজ্ঞতা সম্পন্ন খেলোয়াড় রয়েছেন আমাদের দলে, যারা কি না নিয়মিত খেলে যাচ্ছেন বিদেশী লিগগুলোতে। তাঁদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আফগানিস্তান বনে যেতে পারে এই বিশ্বকাপের ডার্ক হর্স।

আমাদেরকে অন্যদলগুলো হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই  টি-টোয়েন্টিতে খেলার পরিস্থিতি খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়ে যায়। তাছাড়া আমরা বেশ শক্তপোক্ত এক গ্রুপে রয়েছি, যেখানে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড। আমরা আশা করি যে তাঁদের সাথে আমরা টক্কর দেবো সমানতালে। যেহেতু আমাদের খেলোয়াড়েরা বিভিন্ন লিগে খেলে আসছে বছর জুড়েই এবং বাকিরা দেশেই প্রস্তুতি নিয়েছে যা আমাদের জন্য ভাল বলেই মনে করছি। খেলোয়াড়েরা মানসিকভাবে বেশ চাঙ্গা রয়েছে।  আমি আমাদের প্রস্তুতিতে সন্তুষ্ট।

  • আপনার মতে কারা এবার প্রভাব ফেলতে চলেছেন এবারের  টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে?

এই বিশ্বকাপে স্পিন বোলিং অলরাউন্ডাররা বেশ প্রভাব বিস্তার করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। সংযুক্ত আরব আমিরাতের পিচগুলো স্পিনারদের ভাল রকমের সাহায্য করবে। তাই বেশিরভাগ টিম স্পিন বোলিং অলরাউন্ডারদের উপর বাজি ধরবে তা নির্দ্বিধায় বলে দেওয়া যায়।

আমার মতে আমাদের রশিদ খান, ভারতের রবিচন্দ্রন অশ্বিন, বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান ও ইংল্যান্ডের মঈন আলির মতো খেলোয়াড়েরা বেশ ছাপ ফেলে যেতে পারে এবারের বিশ্বকাপে পিচের ফায়দা নিয়ে। তবে আমি একজন খেলোয়াড়ের খেলা দেখতে উন্মুখ হয়ে আছি, সেটা ভারতীয় পেস বোলিং অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডে। সে যদি বোলিং এ আগুন ঝড়াতে পারে তাহলে তা ভারতের জন্য লাভজনক হতে পারে।

  • এই বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার ভাল পারফর্ম করার সম্ভাবনা আপনি কিভাবে দেখছেন? 

দক্ষিণ আফ্রিকা টি-টোয়েন্টির অঙ্গনে ভাল এবং শক্তিশালী দল। তাঁদের খেলোয়াড়েরা বিভিন্ন  টি-টোয়েন্টি লিগে খেলে থাকেন। অভিজ্ঞতা আর পারফর্মেন্সে এগিয়ে রয়েছেন বেশকিছু দল থেকে। কিন্তু এটা দেখার বিষয় নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা তাঁদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কিভাবে করে।  টি-টোয়েন্টি অনিশ্চয়তায় ভরপুর, নির্দিষ্ট দিনে যে কেউ যে কোন ম্যাচ নিজেদের করে নিতে পারে। সেক্ষেত্রে দক্ষিণ আফ্রিকর ভাল সুযোগ রয়েছে। 

  •  অধিকাংশ টিম তাঁদের সাবেক খেলোয়াড়দেরকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে, ভারত মহেন্দ্র সিং ধোনিকে মেন্টর হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছে, আপনি কি মনে করেন এটা ড্রেসিংরুম আবহে কেমন প্রভাব ফেলবে? 

ধোনি এমন একজন খেলোয়াড় যিনি তাঁর সামর্থ্যে থাকা প্রায় সবকিছুই জয় করেছেন। তাঁর মতো ধীশক্তি সম্পন্ন খেলোয়াড় ড্রেসিংরুমে মানসিক দৃঢ়তা এবং শান্ত আবহের সৃষ্টি করতে পারে। এমন পরিস্থিতি বিবেবচনায় আফগানিস্তান দলের সাথে সংযুক্ত করেছে অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারকে একজন পরামর্শক হিসেবে।

তাছাড়া পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাও তাঁদের প্রাক্তন খেলোয়াড়দেরকে মেন্টর হিসেবে দলে এনেছে। আমি মনে করি মাহেলা জয়াবর্ধনে, কুমার সাঙ্গাকারা, স্টিফেন ফ্লেমিং এর মতো সাবেক খেলোয়াড়েরা ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তাঁদের অভিজ্ঞতার আলোকে প্রয়োজনীয় টোটকা দিয়ে ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।  

  • ভারতের পরবর্তী কোচ রাহুল দ্রাবিড় এর বিষয়ে আপনার মতামত কি? 

দ্রাবিড়ে সাথে খেলার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি তিনি ক্রিকেটিয় জ্ঞানের দিক থেকে অনন্য। তাছড়া কোচিং ক্যারিয়ারেও তিনি সফল, সম্প্রতি তিনি ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সাথে ভাল করেছেন। তাছাড়া তাঁর নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কায় জাতীয় দলও বেশ ভাল পারফর্ম করেছেন। এছাড়াও তিনি তরুণ খেলোয়াড়দেরকে চেনেন এবং জানেন যে কারা যোগ্যতা রাখে জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবার। আমি বিশ্বাস করি তিনি কোচ হয়ে আসলে জাতীয় দলেও সফল হবেন এবং তাঁর এই সংযুক্তিতে শক্তিশালী দলটায় দৃঢ়তা আসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link