ডিফেন্স লাইন থেকে ক্লিয়ার হওয়া বল সোজা উড়ে এলো আনহেল ডি মারিয়ার কাছে; প্রথমে বলটা পায়ের টোকায় হাওয়ায় ভাসালেন তিনি। এরপর নিজেই ভাসলেন হাওয়ায়; সেই সাথে একটা বাইসাইকেল কিক। গোলপোস্টের প্রায় পনেরো গজ দূর থেকে নেয়া শট, অথচ গোলরক্ষক ফেরানোর কোন সুযোগই পেলেন না – টাইমিং আর প্লেসমেন্টের অবিশ্বাস্য মিলন।
এই আর্জেন্টাইন ততক্ষণে ছুটে গিয়েছেন সাইডাই লাইনের দিকে, ভালবাসা বিলিয়েছেন সমর্থকদের মাঝে। তাঁর আনন্দের বাঁধ তখন ভেঙে গিয়েছিল; স্রেফ একটা বাইসাইকেল গোল তো নয়, এর মধ্য দিয়ে তো হ্যাটট্রিকও পূর্ণ হয়েছে।
মাত্র আঠারো মিনিট লেগেছে এই হ্যাটট্রিকের জন্য, ডি মারিয়া গোলের শুরুটা করেছিলেন দুই মিনিটের মাথায়। একক নৈপুণ্যে বল নিয়ে ডি বক্সে ঢুকে পড়েন তিনি, এরপর বাম পায়ের শটে কাঁপিয়ে দেন প্রতিপক্ষের জাল। সকালের সূর্য যেমন পুরো দিনের কথা বলে, তেমনি তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন দারুণ কিছু ঘটতে যাচ্ছে।
হয়েছেও তাই, মিনিট তিনেক পরেই পুনরায় স্কোরবোর্ডে নাম তোলেন এই উইঙ্গার। ডি বক্সের মাঝামাঝি জায়গা থেকে প্রথম গোলের মতই বাম দিক দিয়ে পরাস্ত করেন গোলরক্ষককে। আর বাইসাইকেল কিকে গোলের গল্প তো বলাই হয়েছেন। সবমিলিয়ে আঠারো মিনিটে হ্যাটট্রিক, বয়সের হিসেবে ৩৬ পেরুনো একজন বুড়োর জন্য এমন পারফরম্যান্স অলৌকিকতার চেয়ে কম কিছু নয়।
চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত বেনফিকার হয়ে ১৬ ম্যাচ খেলেছেন এই তারকা, এর মধ্যে গোল করেছেন আটটি এবং অ্যাসিস্ট আছে দুইটি। বেশকিছু ম্যাচে বদলি হিসেবে খেলতে হয়েছিল তাঁকে, তা নাহলে পরিসংখ্যানের খাতায় তাঁর অবস্থান নিশ্চয়ই আরেকটু উপরের দিকেই হতো।
তবে এটাও কম নয় কোন অংশে, বরং প্রত্যাশা বাড়িয়ে তোলার মতই পারফরম্যান্স। আবার আক্ষেপও জাগায় হৃদয়ে, অকালেই বুঝি জাতীয় দল থেকে অবসরে চলে গেলেন এই দেবদূত; ২০২১ কোপা আমেরিকা, ২০২২ বিশ্বকাপ ফাইনালে গোল করা মানুষটাকে আরো অনেকদিন আকাশী-নীল জার্সিতে দেখার আকাশসম আবদার লুকিয়ে ছিল ভক্তদের হৃদয়ে।