চিরায়ত এক বাঁ-হাতি অফ স্পিন বল। খানিকটা ফুলার লেন্থের সেই বলটা আঘাত করল মিডল স্ট্যাম্পে। তাতেই সমাপ্তি ঘটে লিটন দাসের কাছ থেকে বহুদিন বাদে পাওয়া এক মাঝারি মানের ইনিংস। ৪৫ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক। এই ইনিংস থেকে লিটন হয়ত তৃপ্তি খুঁজে নিতে চাইবেন। তবে আদতে এমন ইনিংস কতটুকু স্বস্তি দেয়?
এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে নিজের ছায়া হয়েই যেন বিচরণ করছেন লিটন। এখন অবধি তার মোট সংগ্রহ ৮২ রান। খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে এই ইনিংসের আগে লিটনের ব্যাট থেকে এসেছিল মোটে ৩৭ রান। অধিনায়কত্বের ভারে যেন নুইয়ে পড়েছিলেন তিনি।
এদিন মিরপুরে ছিল ঝকঝকে দিনের আলো। শীত পেরিয়ে বসন্তের দিকে ধাবিত হওয়া আকাশ ছিল আগের দিনের থেকেও পরিষ্কার। রৌদ্রজ্জ্বল দিনে লিটনের কাছ থেকে কুমিল্লা বড় এক ইনিংসের প্রত্যাশাই করেছিল। যদিও শুরুটা ধীর-স্থিরভাবেই করতে হয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের দুই ওপেনারকে। কারণটা অবশ্য খুলনার দুই স্পিনারের বোলিং।
শুরুতেই নাহিদুল ইসলাম ও নাসুম আহমেদ চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। পাওয়ার প্লে-এর শুরুর তিন ওভারে স্রেফ নয় রান নিতে পেরেছিলেন লিটন ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। মিরপুরের চিরায়ত উইকেটের ব্যতিক্রমী এই উইকেটে অন্তত এত ধীর গতিতে রান তোলা বেমানান। লিটন তাই আর খোলস বন্দী থাকতে চাইলেন না। যেই নাসুমের বলের আউট হয়েছে তাকে ছক্কা মেরেই শুরু করেন লিটন।
একটু খানি রুম বানিয়ে লং অন দিয়ে ছক্কা হাঁকান লিটন। এরপরই যেন একটু গতি পেতে শুরু করে কুমিল্লা ও লিটনের রান সংগ্রহ। লিটন ১৫০ স্ট্রাইকরেটের ইনিংস খেলেন। তাতে করে প্রথম ছক্কা সহ আরও তিনটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকান লিটন দাস। সেই সাথে দুইটি চারের মারও এসেছে লিটনের উইলো থেকে। তাতে করেই ৩০ বলে ৪৫ রানের একটা ইনিংস খেলে ফেলেন লিটন।
যাত্রা পথে মোহাম্মদ রিজওয়ানের সাথে ৬৯ রানের একটি জুটিও গড়েন তিনি। তাতে করে বড় সংগ্রহের ভিত অবশ্য পেয়ে যায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। তবে শেষ অবধি আর তেমনটি ঘটেনি। সে দায় চাইলেই লিটনকে দিয়ে দেওয়া যায়। বহুদিন বাদে শুরুটা পেয়েছিলেন লিটন। ব্যাট-বলের সংযোগটাও হচ্ছিল বেশ। এমন এক ইনিংসকে দীর্ঘায়িত করতে না পারাটা নিশ্চিতরূপেই ব্যাটারের ব্যর্থতা।
সেখানটায়ই আসলে স্বস্তির সুযোগ নেই লিটনের এমন ইনিংসে। কেননা লিটন কালেভদ্রে এমন সব মাঝারি মানের ইনিংস উপহার দেন। ধারাবাহিকতার বড্ড অভাব তার। তাছাড়া শুরুটা পেয়েও ইনিংস বড় করতে না পারাটা লিটনের বেশ পুরনো সমস্যা। সেটার সমাধানও লিটন এখন অবধি খুঁজে বের করতে পারেননি। এমন মাঝারি মানের ইনিংস খেলে বহুদিনের জন্য হারিয়ে যাওয়ার উদাহরণও লিটনের ক্যারিয়ারে রয়েছে। সেটাই বরং চিন্তার কারণ।