আর্চার ২.০

তবে এখনও পুরোদস্তুর নিজের স্বরুপে ফেরেননি আর্চার। তেমনটাই মত দিয়েছেন ইংল্যান্ডের নতুন সাদা বলের কোচ ম্যাথু মট। তাঁর ভাষ্যমতে এই পেস ইঞ্জিনের সবগুলো সিলিন্ডার এখনও সচল হয়নি।

দুর্ধর্ষ গতি। একটা পেস বোলারের প্রধান অস্ত্র। প্রায় প্রতিটা দশকেই দারুণ সব পেসাররা ক্রিকেটকে সমৃদ্ধ করেছেন। এই সময়ে সেই সমৃদ্ধ তালিকার বেশ উপরের দিকেই অবস্থান জোফরা আর্চারের। ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ে তিনি ছিলেন ইংলিশদের সম্মুখভাগের সেনানি। তবে সেই তিনিই একটা লম্বা বিরতি শেষে আবারও ফিরেছেন ক্রিকেটের ময়দানে।

গতির সাথে যেমন পেসারদের সখ্যতা রয়েছে ঠিক তেমনি ইনজুরির সাথেও রয়েছে তাদের বন্ধুত্ব। সেই ইনজুরি নামক ক্ষতিকর বন্ধু আর্চারের মহামূল্যবান সময় কেড়ে নিয়েছিল তাঁর কাছ থেকে। প্রায় বছর দু’য়েক ক্রিকেট থেকে বেশ দূরেই ছিলেন জোফরা আর্চার। ২০২১ সালের মার্চে তিনি শেষ ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছিলেন।

তবে সে বছরের জুনে তিনি শেষ ক্রিকেট খেলতে নেমেছিলেন। মূলত কনুইয়ের এক ইনজুরি তাঁকে ছিটকে দেয় মাঠের ক্রিকেট থেকে। দফায় দফায় অস্ত্রপচার শেষে তিনি প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ঠিক তখনই হানা দেয় পিঠের স্ট্রেস ফ্র্যাকচার। বেশ খানিকটা বিলম্বের পর অবশেষে মাঠে ফিরেছেন আর্চার। বাড়িয়েছেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের শক্তি।

তবে এখনও পুরোদস্তুর নিজের স্বরুপে ফেরেননি আর্চার। তেমনটাই মত দিয়েছেন ইংল্যান্ডের নতুন সাদা বলের কোচ ম্যাথু মট। তাঁর ভাষ্যমতে এই পেস ইঞ্জিনের সবগুলো সিলিন্ডার এখনও সচল হয়নি। তিনি বলেন, ‘কনুই আর পিঠের ইনজুরি থেকে ফিরে আসার পথে সে (আর্চার) সবগুলো বক্সেই টিক দিচ্ছে কিন্তু তাঁর সবগুলো সিলিন্ডার পুরোপুরি ফায়ার করছে না’। তেমনটা হওয়া অবশ্য সময় সাপেক্ষ বিষয়। কেননা বহুদিন বাদে ক্রিকেট মাঠে ফেরাটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এরপর নিজের উপর থাকা প্রত্যাশার চাপ সামাল দেওয়াও বেশ কঠিন কাজ।

কিন্তু ফিরে এসেই নিজের সামর্থ্যের মধ্যেই দূর্দান্ত সব পারফরমেন্স উপহার দিয়ে যাচ্ছেন জোফরা আর্চার। ফিরে আসার পর ইংল্যান্ডের জার্সিতে চারটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন তিনি। সেখানেই তিনি জানান দিয়েছেন নিজের সক্ষমতার। চার ম্যাচে উইকেট বাগিয়েছেন ১২টি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তো যেন স্বমহীমায় উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিলেন আর্চার। ৪০ রান খরচায় ৬ উইকেট নিয়ে নিজের প্রত্যাবর্তনের আলোড়নটা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন গোটা বিশ্ব ক্রিকেটে।

তবে তিনি এখনও রয়েছেন প্রবল দেখভালের মধ্যে। তাঁর ওয়ার্কলোড খুবই কঠোরতার সাথে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এমনকি ফিজিওদের কঠোর নির্দেশে টানা খেলার চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে না আর্চারকে। দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশের বিপক্ষে মাঝের একটি ওয়ানডে ম্যাচে তাঁকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। কেননা ইংল্যান্ড খুব ভাল করেই জানে এই ডানহাতি পেসারকে তাদের প্রয়োজন, শিরোপা রক্ষা করতে হবে যে।

এই বছরেই বসতে চলেছে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। সেই বিশ্বকাপে আর্চারকে ছাড়া নিজেদের বোলিং আক্রমণ হয়ত চিন্তাই করতে পারছে না ইংল্যান্ড। তাইতো আর্চারের পরিচর্যায় থাকছে না কোন কমতি। তবে ২০২৩ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলবেন আর্চার। সেখানে তাঁর কাছ থেকে সম্পূর্ণটুকুই নিঙড়ে নিতে চাইবে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ফ্রাঞ্চাইজি। সেক্ষেত্রে পরম মমতায় আগলে রাখা আর্চারের আরও ভয়ানক কোন ইনজুরিতে পড়ে যাওয়ার শঙ্কা বেশ প্রবল।

এই সময়ের সবচেয়ে দ্রুত গতির বোলারদের একজন তিনি। আর এই দ্রুত গতির বোলারদের শরীরে চাপ পড়ে ভীষণ। আর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ আয়োজিত হয় দীর্ঘ সময় ব্যাপী। তাছাড়া বিশ্রামের সুযোগও খুব একটা থাকে না। জাতীয় দল ও আইপিএলের চাপ সামলে নিজেকে কতটুকু ফিট রাখতে পারবেন আর্চার সেটাই এখন চিন্তার মূল কারণ।

তবে আর্চার তো চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার। তিনি জানেন ঠিক কিভাবে নিজেকে সামলে নিতে হয়। সে কাজটায় এবার তিনি নিশ্চয়ই মনোযোগ দেবেন। কেননা কে চায় লম্বা সময় মাঠের বাইরে থাকতে!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...