আর্জেন্টিনা নাকি ক্রোয়েশিয়া? কে এগিয়ে?

ওয়েল গ্রাউন্ড জিরোয় না থেকে আর্জেন্টিনা নিয়ে মন্তব্য করা বোকামো, কারণ স্কালোনি ঝুলি থেকে একের পর এক বিড়াল বার করছেন। এমন নয় যে আর্জেন্টিনার রিজার্ভ বেঞ্চ দারুণ। কিন্তু যাঁকেই নামাচ্ছেন স্কালোনি, তাঁকেই বিশেষ দায়িত্ব দিয়েই নামাচ্ছেন।

আর জিলেট, জিলেট, জিলেট এররর মেসি মেসি মেসি। মেসি ঠিক এই কাজটা করার জন্যই পিএসজিতে নিজের খেলাটা বদলেছেন। প্লেমেকার আর বক্সের বাইরে থেকে থ্রেট। প্রয়োজনে সেকেন্ড স্ট্রাইকার হিসাবে উঠে যাওয়া।

এখানে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা। ক্রোটরা মাঝমাঠে বা ডিফেন্সে যাই ফুটবল খেলে থাকুক না কেন, তার থেকে গোল তৈরি করার মত নয়। মডরিচ, কোভাচিচ বা ব্রজোভিচ দারুণ খেলছেন, কিন্তু তাঁরা পাসের ফুলঝুরি ফোটাচ্ছেন না তো। কভারিং দারুণ করছেন, মাঝমাঠে বিপক্ষকে শান্তিতে খেলতে দিচ্ছেন না এবং প্রয়োজনে ডিফেন্সকে সহায়তা করার জন্য নেমে আসছেন। সোসা এবং জুরানোভিচ দুর্দান্ত, মাঝে গবার্দিওল আর লভরেন।

কিন্তু মেসিকে জায়গা দেবার জন্য প্রয়োজন এমন কারুর যাঁর হোল্ড আপ প্লে ভাল। জানি পাবলিক ঠ্যাঙাবে, কিন্তু আলভারেজের বিল্ড আপ প্লে যত ভালই হোক, হোল্ডিং আপের জন্য লাউতারোর অভিজ্ঞতাটা জরুরি।

ডি মারিয়া, ডি পল ফিট। কিন্তু মাঝমাঠের দখল নিতে কি দি মারিয়াকে নামাবেন স্কালোনি? নাকি ম্যাক অ্যালিস্টার, ফার্নান্ডেজ আর দি পলের সঙ্গে পারাদেসকে নামিয়ে দেবেন আজ? ডিফেন্সে হয়তো ওটামেন্ডি আর লিয়ান্দ্রো। তবে আমার ব্যক্তিগত পছন্দ ছিল লিয়ান্দ্রো এবং রোমেরো।

ক্রোয়েশিয়ার একটা গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ার কিন্তু পেরিসিচ। দি মারিয়া খুব একটা কাজের হবে না মনে করার কারণ কিন্তু পেরিসিচের ট্র্যাকিং ব্যাক করার ক্ষমতা। তার উপর বাঁ-দিকে কার্ড সমস্যায় আজ আকুনা নেই। তাই খেলা ছড়াবে না আর খেলা যে দারুণ কিছু হবে আশা করছি না, মাঝমাঠেই সীমাবদ্ধ থাকবে মনে হয়। শুধু ওই পেরিসিচ ক্রামারিচ আর পেটকোভিচ বা অরসিচের একটা দুটো সুযোগে কী করে সেটার ব্যাপার। কারণ আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডাররা মাঝেমধ্যেই আগ্রাসনের নামে ভুলভাল চ্যালেঞ্জ করে ফেলেন।

শেষে সেই লিও মেসি। ওসব ভগবান ফগবান ফালতু কথা। ফুটবল মাঠে বা মানব জীবনে ভগবান কেউ হন না, সে রবীন্দ্রনাথও নন বা মারাদোনাও। এঁরা ভগবানদত্ত প্রতিভা নিয়ে আসেন, এটুকুই। এবং সারা জীবন ধরে সেই প্রতিভার চুঁইয়ে পড়া অমৃতয় মানব সভ্যতা টিকে যায়। লিও মেসির খেলার বর্তমানে মূল প্রতিপাদ্য হল, তাঁর প্রেসিশন ও ভিশন। পায়ে বল নিলে মানুষ বৃষ্টিফোঁটা গুনতে থাকে, এতটাই সময়।

গোলকিপারদের কথা বললাম না কারণ এত আগে থেকে নেতিবাচক ভাবনার জায়গা নেই। তবে লিগ ফুটবলে উভয়েই কিন্তু বিশাল বড় দলের হয়ে খেলেন না। ধারাবাহিকতাটা ইস্যু, কিন্তু আবার চাপের মুখে অবিচল থাকার রেকর্ডটা লিভাকোভিচ আর মার্তিনেজ উভয়ই ছোট দলে খেলেই রপ্ত করেছেন। অতএব!

আবারও ওই বিতর্কিত কথাটা, একা মারাদোনার পক্ষে সম্ভব হত না, যদি না বিলার্দর ডিফেন্সিভ সংগঠন থাকত। একইভাবে, এই বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার ভরসা দুই লিওনেল, স্কালোনির ম্যাচ ধরার ক্ষমতা আর মেসির শেষ করার। ভক্তরা যাই ভাবুন আমার ভবিষ্যৎবাণী করার দায় নেই।

শুধু ইউরোপে শিল্ড না গেলেই হল!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link