আর্জেন্টিনার পেনাল্টি পাওয়া কি যৌক্তিক!

এই বিশ্বকাপ দেখার সময় দুই-একটা জায়গা নিয়ে বারবার বিতর্ক তৈরি হচ্ছে। একটা হল ভিএআর আর আরেকটা হল পেনাল্টি। ভিএআর নিয়ে আগেই লিখেছি, সেখানে প্রযুক্তিকে যতটা দূর নিয়ে যাওয়া সম্ভব, হয়েছে। এবং ভিএআররা স্বপ্রণোদিত হয়ে পেনাল্টি, গোল এবং লাল কার্ডের সিদ্ধান্তগুলি রিভিউ করেন। কিছু সমস্যা দেখা দিলে তা রেফারিকে আরেকবার স্ক্রিনে দেখতে বা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে জানান।

এই বিশ্বকাপ দেখার সময় দুই-একটা জায়গা নিয়ে বারবার বিতর্ক তৈরি হচ্ছে। একটা হল ভিএআর আর আরেকটা হল পেনাল্টি। ভিএআর নিয়ে আগেই লিখেছি, সেখানে প্রযুক্তিকে যতটা দূর নিয়ে যাওয়া সম্ভব, হয়েছে। এবং ভিএআররা স্বপ্রণোদিত হয়ে পেনাল্টি, গোল এবং লাল কার্ডের সিদ্ধান্তগুলি রিভিউ করেন। কিছু সমস্যা দেখা দিলে তা রেফারিকে আরেকবার স্ক্রিনে দেখতে বা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে জানান।

এবারে পেনাল্টি। প্রথম ইস্যুটা হ্যান্ডবল। হ্যান্ডবল নিয়ে যে সাম্প্রতিক নিয়ম পরিবর্তন হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে যে অনিচ্ছাকৃত হ্যান্ডবলের ক্ষেত্রে হাতের অবস্থান যদি শরীরের আকারকে অস্বাভাবিকভাবে বড় না করে তোলে, তাহলে হ্যান্ডবল নয়। অর্থাৎ আপনি দৌড়চ্ছেন, অবশ্যই আপনার হাত দুপাশে স্থাণুবৎ থাকবে না। সামান্য মুভমেন্ট তো হবেই, সেটা অস্বাভাবিক নয়।

আরও স্পষ্ট করে বললে আপনার ডান পা যখন আগে তখন স্বাভাবিক ভাবেই আপনার বাঁ হাত কনুই থেকে মুড়ে ভাঁজ হবে এবং বাহুমূল থেকে কনুই পর্যন্ত অংশ সামান্য এগিয়ে থাকবে। এটা স্বাভাবিক অবস্থান। অস্বাভাবিক অবস্থান হল হেড করতে গিয়ে হাত ‘বগল খুলে’ লাফ দিয়ে বল হাতে লাগানো।

একই ভাবে ট্যাকলের সময় আপনি পড়ে যাচ্ছেন, হাত মাটিতে সাপোর্ট দিতে স্বাভাবিকভাবেই এগিয়ে যাবে। সেখানে বল লাগলে সেটা পেনাল্টি হবার কথা নয়। কিন্তু পর্তুগাল উরুগুয়ে ম্যাচে রেফারি দিয়েছেন। এবারে রেফারির মনে হয়েছিল যে যে হাতটা মাটি ছুঁচ্ছে সেটা অস্বাভাবিক অবস্থান। এটা রেফারির ব্যাখ্যা। নিয়ম বাস্তব ক্ষেত্রে রেফারিদের এই ব্যাখ্যা করার জায়গাটা রাখে। এখানে রেফারি হয়তো ভুল ছিলেন।

গোল স্কোরিং বা নন গোল স্কোরিং অবস্থানে বাধাদান। এর আগে মেসির পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে পেনাল্টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, রোনাল্ডোর ঘানার বিরুদ্ধে পেনাল্টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, রিচার্লিসনের কোরিয়ার বিরুদ্ধে পেনাল্টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং অবশ্যই কাল আলভারেজের ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে পেনাল্টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

আপনার যে কোনও ধরণের মুভমেন্টে যদি বিপক্ষ বাধা প্রদান করে, অবশ্য আপনার মুভমেন্ট পজিটিভ হওয়া দরকার এবং শারীরিক ‘কন্ট্যাক্ট’ হয় (কথাটা সিগনিফিক্যান্ট অর্থাৎ যথেষ্ট) যার ফলে আপনার মুভমেন্ট রুদ্ধ হয় তাহলে সেটা অবস্ট্রাকশন এবং ডাইরেক্ট ফ্রি-কিক। আর পেনাল্টি বক্সে ঘটলে সেটা পেনাল্টি। হ্যাঁ, এর মধ্যে যদি আপনার শরীর বলকে আগে স্পর্শ করে তাহলে বাধা প্রদানটা ধর্তব্যের মধ্যে আসবে না।

বাকিগুলো নিজেরাই বুঝে নিন। কালকের পেনাল্টিটা নিয়ে অনেকের বক্তব্য লিভাকোভিচ তো স্বাভাবিকভাবে এগিয়ে এসেছেন এবং আল্ভারেজ ওঁর শরীরে ঢুকে ধাক্কাটা নিয়ে পড়েছেন। অবশ্যই লিভাকোভিচ যদি ষ্টেশনারী থাকতেন আর হুলিয়েন ওঁর শরীরে ঢুকে পড়তেন তাহলে পেনাল্টি হত না, বরং ক্রোয়েশিয়ার হয়ে ফ্রি-কিক হত।

হ্যাঁ, হুলিয়েন হুলিয়ে পেনাল্টি নিয়েছেন, কিন্তু একটা ছোট্ট ইস্যু। লিভাকোভিচের শরীরের কোনও অংশ বল ছোঁয়নি। অতএব ওটা বাধাপ্রদান এবং পেনাল্টি। এটা নিয়ে প্রাক্তন খেলোয়াড়রা অবশ্যই উদ্দেশ্য, গোল করার অবস্থান ইত্যাদি তুলবেন। কিন্তু যে কোনও রেফারি বা প্রাক্তন রেফারি যিনি বর্তমানে নিয়ম চর্চায় আছেন তাঁকে বা তাঁদের জিজ্ঞাসা করুন। আমি যে কথাটা বললাম সেটাই বলবেন। এখন সেটাকেও আপনি ঠিক বা ভুল বলতে পারেন।

প্রতিটি নিয়মই কোনও না কোনও সময়ে পর্যালোচনা দাবি করে। কিন্তু যতদিন না পর্যন্ত আরও বেশি করে প্রাঞ্জল হচ্ছে বা পরিবর্তিত হচ্ছে, এটাকেই নিয়ম এবং তার ব্যাখ্যাকে ধরে চলতে হবে। ব্যাখ্যা ভুল ঠিক হতে পারে, কিন্তু বর্তমান নিয়মের ভিত্তিতেই খেলাটা চলবে। ভুলটা আমারও হতে পারে। তবে সৎভাবে একটা চেষ্টা করলাম মাত্র।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...