আরিফুল-জিসানরাই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ

এমন কঠিন এক সমীকরণ মাথায় নিয়েই নেপালের বিপক্ষে বড় ব্যবধানেই জিতেছে বাংলাদেশ। কৃতিত্ব অবশ্য জিসান আলম আর আরিফুল ইসলামের প্রাপ্য। 

সেমিফাইনালে যেতে হলে পাড়ি দিতে হবে এক বন্ধুর পথ। স্রেফ ম্যাচ জিতলেই মিলবে না টিকিট। নেতিবাচক রান রেটকে পাশ কাটিয়ে তবেই যেতে হবে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে। এমন কঠিন এক সমীকরণ মাথায় নিয়েই নেপালের বিপক্ষে বড় ব্যবধানেই জিতেছে বাংলাদেশ। কৃতিত্ব অবশ্য জিসান আলম আর আরিফুল ইসলামের প্রাপ্য।

বাজে লাইনলেন্থ, অত্যাধিক অতিরিক্ত রান খরচ। তবুও স্রেফ ১৬৯ রানেই আটকে ফেলা গিয়েছিল নেপাল অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে। কিন্তু সেখানেই যে বাংলাদেশের যুব দলের কাজ শেষ হয়ে যায় না। হাতে বেশ কিছু ওভার রেখেই জিততে হবে। তাতে করে ঋণাত্মক রান রেট হবে ধনাত্মক। কিন্তু তাতেও আসলে স্বস্তি মিলবে না।

কেননা পাকিস্তান ইতোমধ্যেই ৬ পয়েন্ট নিয়ে বেশ শক্ত এক অবস্থানে বসে রয়েছে। তাদের রান রেট ১.০৬৪। বাংলাদেশকে তাই যতটা সম্ভব রান রেটের ফারাক কমিয়েই নামতে হবে শেষ ম্যাচে। সে ম্যাচের প্রতিপক্ষ আবার পাকিস্তান। এত সব জটিলতা মাথায় নিয়েই ব্যাট করতে নেমেছিলেন জিসান আলম ও আশিকুর রহমান শিবলি।

কিন্তু মানসিকতায় একটু বিস্তর ফারাকই চোখে পড়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংসের শুরুর দিকে। অবশ্য সেটা দলের পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই পাশা কাটিয়ে যাওয়া যায়। জিসানের আগ্রাসী ব্যাটিং প্রসংশা কুড়িয়েছে বহুবার। নেপালের বিপক্ষে শুরু থেকেই যেন জিসান চাইছিলেন দ্রুত ম্যাচ শেষ করতে। বাহারি সব শটের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন তিনি।

বাউন্ডারি ছাড়া করছিলেন বেশ মেপে মেপে। তাতে করে দ্রুত জয় পাওয়ার বিষয়টি আরও খানিকটা ত্বরাণ্বিত হয়। অন্যদিকে, শিবলি প্রান্ত আগলে রাখার রোলেই খেলে গেছেন আউট হওয়ার আগে অবধি। তিনি বড় শট খেলতে গিয়েই লং অনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন।

তবে জিসান বাংলাদেশকে বিশ্বাস করতেই যেন বাধ্য করেছিলেন যে, এই ম্যাচ বেশ আগেভাগেই জেতা সম্ভব। দুই ছক্কা ও ছয় চারের তার ৫৫ রানের ইনিংসটি সে বার্তাই ছড়িয়ে দিতে চেয়েছে গোটা দলের মাঝে। সে বার্তায় উজ্জীবিত হয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ানও ব্যাট চালিয়েই খেলেছেন। তবে জিসানের মনোভাবটা স্রেফ আরিফুলই যেন আন্দাজ করতে পেরেছিলেন।

যুব বিশ্বকাপে ইতোমধ্যেই সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া আরিফুলও ক্রিজে এসেই চালিয়েছেন নিজের ব্যাট। ১৫৫ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেছেন আরিফুল। পরপর কিছু উইকেট পতনও যেন দমাতে পারেনি তাকে। তিনি আপন ধ্যানেই ছিলেন মগ্ন। দুই ছক্কা এসেছে তার ব্যাট থেকেও। জিসানের থেকে আরিফুলের বাউন্ডারি সংখ্যা স্রেফ একটি বেশি।

তবে জিসান পারেননি ম্যাচ শেষ করে আসতে। কিন্তু আরিফুল ঠিকই পেরেছেন। ৫৯ রানে অপরাজিত ছিলেন ডানহাতি এই ব্যাটার। ২৫.২ ওভারে দলের জয় নিশ্চিত করেন আরিফুল। দলের জয়সূচক শেষ রানটা এসেছে তার ব্যাট থেকেই।

জিসান ও আরিফুলের কল্যাণেই বাংলাদেশের রানরেট স্রেফ ঋণাত্মক থেকে ধনাত্মক হয়নি, বরং বেশ খানিকটা এগিয়েছে। -০.৬৭৭ থেকে বাংলাদেশের বর্তমান রানরেট ০.৩৪৮। একেবারেই নিভে যাওয়া স্বপ্নটা পেয়ে গেল নতুন জ্বালানি। জোগানদাতা জিসান এবং আরিফুল। তাদের ব্যাটে ভর করেই অলিখিত কোয়ার্টার ফাইনালে পাকিস্তানকে হারাতে চাইবে বাংলাদেশ। সে ম্যাচেও যে জয়ের ব্যবধান বড় হওয়া চাই।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...